শিরোনাম:
●   ভোলার কর্ণফুলী-৩ লঞ্চে চাঁদপুরের মোহনায় অগ্নিকাণ্ড ●   উদ্ভাস-উন্মেষ-উত্তরণ এখন দ্বীপ জেলা ভোলায় ●   ভোলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আ’লীগের সমর্থিত প্রার্থী বশীর উল্লাহ সভাপতি, সম্পাদক মাহাবুবুল হক লিটু নির্বাচিত ●   ভোলা জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় ●   চরফ্যাশনে দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়লো চট্টগ্রামগামী বাস ●   ডয়েসে ভ্যালী ও জাতীয় গণমাধ্যম ইনিস্টিটিউটের যৌথ আয়োজনে প্রিন্ট পত্রিকার সম্পাদকদের কর্মশালা সম্পন্ন ●   ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ●   ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ! ●   ভোলায় জমি দখলের খবর পেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেলেন প্রবাসী ●   ভোলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
ভোলা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলার সংবাদ
বৃহস্পতিবার ● ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » ধর্ম » হজ পালনকারীদের জন্য যা জানা জরুরি
প্রথম পাতা » ধর্ম » হজ পালনকারীদের জন্য যা জানা জরুরি
৬৯৪ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

হজ পালনকারীদের জন্য যা জানা জরুরি

হজ পালনকারীদের জন্য যা জানা জরুরি

ইসলাম ডেস্ক • হজ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত। অন্য যেকোনো ইবাদতের চেয়ে হজের  বৈশিষ্ট্য মর্যাদা ভিন্ন। সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিমের ওপর হজ পালন করা ফরজ। এবার পবিত্র হজ জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ১৬ আগস্ট থেকে। এবার যারা হজে যাচ্ছেন তাদের প্রস্তুতি নিতে হবে এখন থেকেই।

হজযাত্রার প্রাক প্রস্তুতিঃ

হজযাত্রায় মানসিক প্রস্তুতিটা বড় বিষয়। মনে মনে প্রস্তুতি নিন, আল্লাহর ঘর প্রিয়নবী (সা.)-এর রওজা জিয়ারত করতে যাচ্ছি যত কষ্টই হোক তা সহ্য করবো। ব্যাপারে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করুন। যে ট্রাভেলসের মাধ্যমে হজে যাচ্ছেন তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিন। আপনার কাফেলায় আরও কারা কারা যাচ্ছেন সম্ভব হলে তাদের সঙ্গেও পরিচিত হয়ে নিন। ভিসা টিকিটের ব্যাপারে নিশ্চিত হোন। প্রয়োজনীয় সৌদি মুদ্রা (রিয়াল) সংগ্রহ করুন। মালপত্র যথাসম্ভব হালকা রাখুন। ফ্লাইটের সময়সূচি জেনে কয়েক ঘণ্টা আগেই হাজিক্যাম্প বা বিমানবন্দরে হাজির হোন।

মক্কায় পৌঁছার পরঃ

মোয়াল্লেমের গাড়ি মক্কায় আপনাকে হোটেলের পাশে নামিয়ে দেবে। হোটেলের রুম বুঝে পাওয়ার পর মালপত্র রেখে একটু বিশ্রাম করে নিন। নামাজের সময় হলে নামাজ আদায় করুন। বিশ্রাম শেষে দলবদ্ধভাবে ওমরা পালন করুন। মসজিদুল হারামে তথা কাবা শরিফে প্রবেশের বেশ কয়েকটি পথ রয়েছে। মজার বিষয় হলো, সব কটি পথ দেখতে কিন্তু একই রকম। সুতরাং দেখে নিন আপনি কোন পথে যাচ্ছেন কাবা চত্বরে জুতা-স্যান্ডেল রাখার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন, জুতা বহন করার ব্যাগ সঙ্গে রাখতে পারেন।

কাবা ঘরঃ

কাবা ঘরের চারটি কোণের আলাদা নাম আছে। সেগুলো হলো, হাজরে আসওয়াদ, রুকনে ইরাকি, রুকনে শামি রুকনে ইয়ামেনি। হাজরে আসওয়াদ বরাবর কোণ থেকে শুরু হয়ে কাবাঘরের পরবর্তী কোণ রুকনে ইরাকি (দুই কোণের মাঝামাঝি স্থান মিজাবে রহমত হাতিম) তারপর যথাক্রমে রুকনে শামি রুকনে ইয়ামেনি। এটা ঘুরে আবার হাজরে আসওয়াদ বরাবর এলে তাওয়াফের এক চক্কর পূর্ণ হয়। এভাবে একে একে সাত চক্কর দিতে হয়। ওমরার নিয়মকানুন আগে জেনে নেবেন। এসব কাজ ধারাবাহিকভাবে করতে হবে, যেমন: সাতবার তওয়াফ করা, নামাজ আদায় করা, জমজমের পানি পান করা, সায়ী করা, মাথা ন্যাড়া অথবা চুল ছোট করা। ওয়াক্তের নামাজের সময় হলে, যতটুকু হয়েছে ওই সময় নামাজ পড়ে আবার বাকিটুকু শেষ করা।

হজের প্রকারভেদঃ

হজ তিন প্রকার-তামাত্তু, কিরান ইফরাদ। বাংলাদেশি হাজিরা সাধারণত তামাত্তু হজ পালন করে থাকেন।

হজের ধারাবাহিক কার্যক্রমঃ

যেহেতু আমাদের দেশের বেশির ভাগ হাজি তামাত্তু করেন। এজন্য এখানে তামাত্তু হজের নিয়মগুলো উল্লেখ করা হলো-

. উমরার ইহরাম (ফরজ)

পরিস্কার-পচ্ছিছন্নতা সেরে গোসল বা অজু করে নিন। মিকাত অতিক্রমের আগেই সেলাইবিহীন একটি সাদা কাপড় পরিধান করুন, আরেকটি গায়ে জড়িয়ে নিয়ে ইহরামের নিয়তে দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিন। শুধু উমরার নিয়ত করে এক বা তিনবার তালবিয়া পড়ে নিন। তালবিয়া হলো- ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাকা।

. উমরার তাওয়াফ (ফরজ)

ওজুর সঙ্গে ইজতিবাসহ তাওয়াফ করুন। ইহরামের চাদরকে ডান বগলের নিচের দিক থেকে পেঁচিয়ে এনে বা কাঁধের ওপর রাখাকেইজতিবাবলে। হাজরে আসওয়াদকে সামনে রেখে তার বরাবর ডান পাশে দাঁড়ান (মেঝেতে সাদা মার্বেল পাথর আর ডান পাশে সবুজ বাতি) এরপর দাঁড়িয়ে তাওয়াফের নিয়ত করুন। রুকনে ইয়ামানিকে সম্ভব হলে শুধু হাতে স্পর্শ করুন। তবে চুমু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এরপর হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত এসে চক্কর পুরো করুন। পুনরায় হাজরে আসওয়াদ বরাবর দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে ইশারা করে হাতের তালুতে চুমু খেয়ে দ্বিতীয় চক্কর শুরু করুন। এভাবে সাত চক্করে তাওয়াফ শেষ করুন। হাতে সাত দানার তসবিহ অথবা গণনাযন্ত্র রাখতে পারেন। এতে সাত চক্কর ভুল হবে না।

. তাওয়াফের দুই রাকাত নামাজ (ওয়াজিব)

মাকামে ইবরাহিমের পেছনে বা হারামের যেকোনো স্থানে তাওয়াফের নিয়তে (মাকরুহ সময় ছাড়া) দুই রাকাত নামাজ পড়ে দোয়া করুন। মনে রাখবেন, এটা দোয়া কবুলের সময়।

. উমরার সায়ী (ওয়াজিব)

সাফা পাহাড়ের কিছুটা ওপরে উঠে (এখন আর পাহাড় নেই, মেঝেতে মার্বেল পাথর, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) কাবা শরিফের দিকে মুখ করে সায়ীর নিয়ত করে, দোয়ার মতো করে হাত তুলে তিনবার তাকবির বলে দোয়া করুন। তারপর মারওয়ার দিকে রওনা হয়ে দুই সবুজ দাগের মধ্যে একটু দ্রুত পথ চলে মারওয়ায় পৌঁছালে এক চক্কর পূর্ণ হলো। মারওয়া পাহাড়ে উঠে কাবা শরিফের দিকে মুখ করে দোয়ার মতো করে হাত তুলে তাকবির পড়ুন এবং আগের মতো চলে সেখান থেকে সাফায় পৌঁছালে দ্বিতীয় চক্কর পূর্ণ হলো। এভাবে সপ্তম চক্করে মারওয়ায় গিয়ে সায়ী শেষ করে দোয়া করুন।

. হলক করা (ওয়াজিব)

পুরুষ হলে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শের অনুসরণে সম্পূর্ণ মাথা মুন্ডন করবেন, তবে মাথার চুল ছাঁটতেও পারেন। মহিলা হলে চুলের মাথা এক ইঞ্চি পরিমাণ কাটবেন।

. হজের ইহরাম (ফরজ)

হারাম শরিফ বা বাসা থেকে আগের নিয়মে শুধু হজের নিয়তে ইহরাম বেঁধে জিলহজ জোহরের আগেই মিনায় পৌঁছে যাবেন।

. মিনায় অবস্থান (সুন্নত)

জিলহজের তারিখ জোহর থেকে জিলহজ ফজরসহ মোট পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় আদায় করুন এবং সময়ে মিনায় অবস্থান করুন।

. আরাফার ময়দানে অবস্থান (ফরজ)

আরাফার ময়দানে অবস্থান হজের অন্যতম ফরজ। জিলহজ দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফার ময়দানে অবস্থান করুন। এদিন নিজ তাঁবুতে জোহর আসরের নামাজ স্ব স্ব সময়ে আলাদাভাবে আদায় করুন। মাগরিবের নামাজ না পড়ে মুজদালিফার দিকে রওনা হোন।

. মুজদালিফায় অবস্থান (সুন্নত)

আরাফায় সূর্যাস্তের পর মুজদালিফায় গিয়ে এশার সময়ে মাগরিব এশা এক আজান এক ইকামতে একসঙ্গে আদায় করুন। এখানেই রাত যাপন করুন (এটি সুন্নত) এবং ১০ জিলহজ ফজরের পর সূর্যোদয়ের আগে কিছু সময় মুজদালিফায় অবশ্যই অবস্থান করুন (এটি ওয়াজিব) তবে দুর্বল (অপারগ) নারীদের বেলায় এটা অপরিহার্য নয়। রাতে ছোট ছোট ছোলার দানার মতো ৭০টি কঙ্কর সংগ্রহ করুন। মুজদালিফায় কঙ্কর খুব সহজেই পেয়ে যাবেন।

১০. কঙ্কর মারা (প্রথম দিন)

১০ জিলহজ ফজর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত শুধু বড় জামারাকে (বড় শয়তান) সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব) সময়ে সম্ভব না হলে রাতের শেষ পর্যন্ত কঙ্কর মারতে পারেন। দুর্বল নারীদের জন্য রাতেই কঙ্কর মারা উত্তম নিরাপদ। কঙ্কর মারার স্থানে বাংলা ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেয়া হয়; তা মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং মেনে চলুন।

১১. কোরবানি করা (ওয়াজিব)

১০ জিলহজ কঙ্কর মারার পরই কেবল কোরবানি নিশ্চিত পন্থায় আদায় করুন। কোরবানির পরেই কেবল রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শের অনুসরণে মাথা হলক করুন (ওয়াজিব) খেয়াল রাখবেন, কঙ্কর মারা, কোরবানি করা চুল কাটার মধ্যে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা জরুরি এবং ওয়াজিব; অন্যথায় দম বা কাফফারা দিয়ে হজ শুদ্ধ করতে হবে।

১২. তাওয়াফে জিয়ারত (ফরজ)

জিলহজের ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগেই তাওয়াফে জিয়ারত করে নিতে হবে। তা না হলে ১২ জিলহজের পরে তাওয়াফটি করে দম দিতে হবে। তবে নারীরা প্রাকৃতিক কারণে করতে না পারলে পবিত্র হওয়ার পরে করবেন।

১৩. কঙ্কর মারা (ওয়াজিব)

জিলহজের ১১ ১২ তারিখে কঙ্কর মারা (ওয়াজিব) ১১-১২ জিলহজ দুপুর থেকে সময় শুরু হয়। ভিড় এড়ানোর জন্য আসরের পর অথবা আপনার সুবিধাজনক সময়ে সাতটি করে কঙ্কর মারবেন-প্রথমে ছোট, মধ্যম, তারপর বড় শয়তানকে। ছোট জামারা থেকে শুরু করে বড় জামারায় শেষ করুন। সম্ভব না হলে শেষরাত পর্যন্ত মারতে পারেন। দুর্বল নারীদের জন্য রাতেই নিরাপদ।

১৪. মিনা ত্যাগ

১৩ জিলহজ মিনায় না থাকতে চাইলে ১২ জিলহজ সন্ধ্যার আগে অথবা সন্ধ্যার পর ভোর হওয়ার আগে মিনা ত্যাগ করুন। সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করতেই হবে- এটা ঠিক নয়। তবে সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করা উত্তম৷

১৫. বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব)

বাংলাদেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের হজ শেষে বিদায়ী তাওয়াফ করতে হয় (ওয়াজিব) তবে হজ শেষে যেকোনো নফল তাওয়াফই বিদায়ী তাওয়াফে পরিণত হয়ে যায়। নারীদের মাসিকের কারণে বিদায়ী তাওয়াফ করতে না পারলে কোনো ক্ষতি নেই; দম বা কাফফারাও দিতে হয় না।

ইহরাম অবস্থায় করণীয়

. সহবাস এবং ওই বিষয়ে কোনো আলোচনা করা যাবে না।

. পুরুষদের জন্য শরীরের আকৃতি ঢেকে নেয় এমন কোনো সেলাই করা জামা, পায়জামা ইত্যাদি পরা বৈধ নয়।

. কথা কাজে কাউকে কষ্ট দেয়া যাবে না।

. পুরুষদের ক্ষেত্রে মাথা বা মুখ ঢাকা যাবে না; এমনকি টুপিও পরা যাবে না।

. মহিলাদের মাথায় অবশ্যই কাপড় রাখতে হবে, তবে মুখমন্ডল স্পর্শ করে এমন কাপড় পরবেন না।

. নখ, চুল, দাড়ি-গোঁফ শরীরের একটি পশমও কাটা বা ছেঁড়া যাবে না।

. কোনো ধরনের সুগন্ধি লাগানো যাবে না।

. কোনো ধরনের শিকার করা যাবে না।

. ক্ষতিকারক সব প্রাণি মারা যাবে। ক্ষতি করে না এমন কোনো প্রাণি মারা যাবে না।

কিছু জরুরি পরামর্শ

. হজযাত্রীদের যাবতীয় তথ্য, দেশের পরিবার-পরিজনের কাছে -মেইলের মাধ্যমে সংবাদ পৌঁছানো যায়। হারানো হজযাত্রীদের খুঁজে পাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ হজ মিশনে আইটি হেল্প ডেস্ক সাহায্য করে।

. কোনো ধরনের অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনায় পড়লে বাংলাদেশ হজ মিশনের মেডিকেল সদস্যদের (চিকিৎসক) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

. আপনার ট্রাভেল এজেন্সি আপনাকে যথাযথ সুবিধাদি (দেশ থেকে আপনাকে থাকা, খাওয়াসহ অন্য যেসব সুবিধার কথা বলেছিল) না দিলে আপনি মক্কা মদিনার বাংলাদেশ হজ মিশনকে জানাতে পারেন। এতেও আপনি সন্তুষ্ট না থাকলে সৌদির ওয়াজারাতুল হজকে (হজ মন্ত্রণালয়ে) লিখিত অভিযোগ করতে পারেন।

. মদিনা থেকে যদি মক্কায় আসেন, তাহলে ইহরামের কাপড় সঙ্গে নিতে হবে।

. আরাফার ময়দানে অনেক প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে খাবার, জুস, ফল ইত্যাদি দিয়ে থাকে। ওই সব খাবার আনতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কি হয়, তাই সাবধান থাকবেন।

. আরাফার ময়দান থেকে যদি হেঁটে মুজদালিফায় আসেন, পথে টয়লেট সেরে নেবেন। কেননা মুজদালিফার টয়লেটে অনেক ভিড় লেগে যায়।

. হজ মন্ত্রণালয় মিনার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে (যেখানে হজযাত্রীদের সহজে চোখে পড়ে) কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত ইলেকট্রনিক বিলবোর্ডে পৃথিবীর প্রায় ১৮টি ভাষায় বিভিন্ন জরুরি দিকনির্দেশনা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাংলায় প্রচার করে।

. হজের বেশির ভাগ সময় হজযাত্রীদের মিনায় তাঁবুতে অবস্থান করতে হয়। তাই মিনাকে এক হিসেবে তাঁবুর শহর বলা যায়। চারদিকে তাঁবু আর তাঁবু-সব তাঁবু দেখতে একই রকম। মোয়াল্লিম নম্বর বা তাঁবু নম্বর জানা না থাকলে যে কেউই হারিয়ে যেতে পারেন। সমস্যা এড়ানোর জন্য যে তাঁবুতে অবস্থান করেন, সেসব তাঁবু চিহ্নিত করে নিন।

. মোয়াল্লিম অফিস থেকে তাঁবুর নম্বরসহ কার্ড দেয়া হয়; তা যতেœ রাখুন। বাইরে বের হওয়ার সময় সঙ্গে রাখুন।

১০. হজযাত্রী সচেতন থাকলে হারিয়ে যাওয়ার কোনো ভয় নেই। অনেক বাংলাদেশি হারিয়ে যাওয়ার কারণে হজের আহকাম বা নিয়ম-কানুন ঠিকমতো পালন করতে পারেন না।

১১. মক্কা-মদিনায় প্রচুর বাংলাদেশি হোটেল আছে। এসব হোটেলে ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, ডাল-সবই পাওয়া যায়। হোটেল থেকে পার্সেলে বাড়িতে খাবার নিয়ে দুজন অনায়াসে খেতে পারেন।

১২. মক্কা-মদিনায় অনেক বাংলাদেশি কাজ করেন, তাই ভাষাগত কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কেনাকাটার সময় দরদাম করে কিনবেন। এছাড়া হিন্দি ভাষা প্রায় সবাই বুঝে।

১৩. হজের সময় প্রচুর হাঁটাচলা করতে হয়, পকেটে টাকা থাকলেও যানবাহন পাওয়া যায় না। এজন্য হাঁটার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকবেন।

১৪. মিনায় চুল কাটার লোক পাওয়া যায়। নিজেরা নিজেদের চুল কাটবেন না, এতে মাথা কেটে যেতে পারে।

১৫. মিনায় কোনো সমস্যা হলে হজযাত্রীদের সেবা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ হজ মিশনের তাঁবুতে যোগাযোগ করবেন।

১৬. হজের আগে পরে আরও উমরা করতে চাইলেতানঈম মসজিদ’- (উমরা মসজিদে) গিয়ে উমরার নিয়ত করে আসা যায়। কাবা শরিফের বাইরে বাস অথবা ট্যাক্সিতে উমরা মসজিদে যাওয়া যায়।

হজের কিছু বিশেষ স্থান পরিভাষা

হারাম শরিফ: পবিত্র কাবা ঘরের চারপাশের বিশাল মসজিদকে উচ্চারণ ভেদে বলা হয় হারাম বা হেরেম শরিফ।

তালবিয়া: তালবিয়া হলোলাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক…’ এই দোয়াটি। ইহরামের কাপড় গায়ে জড়ানোর পর থেকেই শুরু হয় তালবিয়া পাঠ।

তাওয়াফ: তাওয়াফ অর্থ প্রদক্ষিণ করা। হাজরে আসওয়াদের কোণ থেকে সর্বদা বাঁ হাত কাবাঘরের দিকে রেখে এই তাওয়াফ করতে হয়।

সায়ী: সায়ী অর্থ হাঁটা দৌঁড়ানোর মাঝামাঝি অবস্থায় দ্রুতপদে হেঁটে চলা। সাফা মারওয়া পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে সাতবার দ্রুতপদে অতিক্রম করাকে সায়ী বলে।

রমল: রমল শব্দের অর্থ হলো হাঁটা দৌঁড়ানের মাঝামাঝি অবস্থায় বীরদর্পে চলা। যেসব তাওয়াফের পর সায়ি করতে হয় সেসব তাওয়াফের প্রথম চক্করে বীরবিক্রমে কাঁধ হেলিয়ে সজোরে ঘন ঘন পা ফেলে দ্রুতপদে চলাকেরমলবলে।

মাকামে ইবরাহিম: কাবাঘরের পূর্ব দিকে হজরত ইবরাহিম (.)-এর পদচিহ্ন সংবলিত একটি পাথর কাচের বেড়ির মধ্যে রাখা আছে। এই পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে হজরত ইবরাহিম (.) কাবাঘর নির্মাণ করেছিলেন। এই রক্ষিত পাথরের আশপাশই মাকামে ইবরাহিম নামে পরিচিত।

হাতিম: কাবা শরিফসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম দিকে অর্ধবৃত্তাকার দেয়ালঘেরা জায়গাকেহাতিমবলে।

মিজাবে রহমত: মিজাব আরবি শব্দ। মিজাব অর্থ হলো নল। হাতিমের মধ্যে একটি পাথরের ওপর পবিত্র কাবাঘরের ছাদের পানি পড়ার জন্য যে স্বর্ণের নল আছে, সেই নলটিকেই মিজাবে রহমত বলে। কখনও বৃষ্টি হলে এই বরকতময় পানি সংগ্রহের জন্য ভিড় জমে যায়।

মুলতাজিম: পবিত্র কাবাঘরের দক্ষিণ-পূর্বকোণে একখন্ড বেহেশতি পাথর লাগানো আছে। এখান থেকে কাবাঘরের দরজা পর্যন্ত দেয়ালের অংশটিকে মুলতাজিম বলে।

জামরাত: মিনায় শয়তানকে পাথর মারার জন্য নির্ধারিত স্থান। এখানে হাজিদের নিয়মমতো শয়তানকে পাথর মারতে হয়।

রমি: রমি শব্দের অর্থ ছোড়া বা নিক্ষেপ করা। মিনায় শয়তানকে পাথর মারাকে রমি বলে।

দম: ইহরাম অবস্থায় কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি বা নিষিদ্ধ কোনো কাজ করে ফেললে তার ক্ষতিপূরণস্বরূপ যে কোরবানি দেয়া ওয়াজিব হয়ে যায় তাকেদমবলে।

মিকাত: পবিত্র ভূমি মক্কা শরিফে প্রবেশের জন্য চতুর্দিকে নির্দিষ্ট দূরত্বে বিশেষ জায়গাকে সীমারেখা করে খুঁটি পুঁতে রাখা আছে। এদের মিকাত বলা হয়। হজ ওমরাকারীদের এই স্থান অতিক্রম করার আগেই ইহরাম বাঁধতে হবে।

শেষ কথা

হজ মূলতঃ একটি প্র্যাকটিক্যাল ইবাদত। সরাসরি নির্ধারিত স্থানে না গিয়ে হজের মাসয়ালা বোঝানো মুশকিল। তবে হজের মাসয়ালাকে খুব জটিল মনে করাও ঠিক নয়। আল্লাহর কাছে সব সময় দোয়া করতে হবে, তিনি যেন হজের প্রতিটি কাজ সহজ করে দেন। সুতরাং আশঙ্কার কিছুই নেই। হিম্মত করুন আর আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন। অব্যাহতভাবে দোয়া চালিয়ে যান। যেখানে কোনো সমস্যা মনে হবে অভিজ্ঞ কোনো আলেমের কাছে জেনে নিন।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

© 2024 দ্বীপের সাথে ২৪ ঘণ্টা Bholar Sangbad, সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।