শুক্রবার ● ১০ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » বিচার না পেয়ে চরফ্যাশনে কিশোরীর আত্মহত্যা
বিচার না পেয়ে চরফ্যাশনে কিশোরীর আত্মহত্যা
চরফ্যাশন প্রতিনিধি: চরফ্যাশনের দক্ষিণ আইচা থানার দক্ষিণ চর মানিকা গ্রামে প্রেমে প্রতারিত হয়ে বিচারহীনতায় আকলিমা (১৪) নামের এক কিশোরীর বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার বিকালে স্বজনরা গুরুতর অবস্থায় তাকে চরফ্যাশন হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। নিহত কিশোরী ওই গ্রামের আলাউদ্দিনের মেয়ে।
এঘটনায় ভিক্টিম পরিবার শুক্রবার বিকালে দক্ষিণ আইচা থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনায় অভিযোগে মামলা করতে গেলে মামলা নেয়নি পুলিশ। কিশোরীর মামা আমির হোসেন হাওলাদার অভিযোগ করেন, একই গ্রামের প্রতিবেশী আনসার আলীর সাথে কিশোরী আকলিমার প্রেম প্রনয় গড়ে উঠে। তিন মাস আগে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রেমিক আনসার আলী ও তার বন্ধু হাসান ফুসলিয়ে কিশোরীকে রাতের আধাঁরে বাড়ি থেকে পালিয়ে নিয়ে যায়। রাতভর কিশোরীকে তাদের হেফাজতে রেখে জোরপূর্বক তার সাথে শারিরিক সম্পর্ক করে। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে পরের দিন স্থানীয় মাতাব্বর সালাম খলিফা ও জিয়া আখনের মধ্যস্থাতায় আনসার আলীর সাথে আকলিমার বিয়ে হবে এমন আস্বাসে আনসার আলীর মাধ্যমে কিশোরীকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। একদিন পর ওই ঘটনায় শালিশে বসেন স্থানীয় দুই মাতাব্বর। মাতাব্বরদের সিন্ধান্তে ওই কিশোরীর সাথে প্রেমিক আনসারের সাথে বিয়ে হওয়ার দিন ধার্য্য করা হয়। কিন্তু প্রেমিক আনসার বিবাহিত হওয়ায় তিনি এবং তার পরিবার বিয়ের নামে টালবাহানা শুরু করে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। বৃহস্পতিবার কিশোরী আকলিমা প্রেমিক আনসারকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে আনসার তাকে বিয়ে করতে পারবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে তর্কবিতর্ক হয়। তর্কের জের ধরে প্রেমিক আনসারের প্রতারনার শিকার অভিমানী কিশোরী আকলিমা গত বৃহস্পতিবার বিকালে তার চর মানিকা গ্রামের নিজ বাড়িতে প্রেমিকের প্রতারনার শিকার হয়ে বিষপান করে। স্বজনরা গুরুতর অবস্থায় তাকে চরফ্যাশন হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত আকলিমার চাচা মোসলেম জানান, আকলিমার সাথে প্রেমের প্রতারনা করে পালিয়ে যায় যুবক আনসার আলী। পরে বিয়ের আস্বাস দিয়ে সটকে পড়ায় তার ভাতিজি আকলিমা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেয়নি পুলিশ।
ঘটনার পর অভিযুক্তদের না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি। মাতাব্বর জিয়া আখন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব বিষয়ে তার কিছুই জানা নেই।
দক্ষিণ থানার ওসি মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, প্রতিবেশী যুবকের সাথে প্রেম প্রনয়ের জেরে কিশোরী বিষপান করেছে বলে জানাগেছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ভোলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রির্পোট পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
-আমির/রাজ