

বুধবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৩
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » বোরহানউদ্দিনে সাবেক ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
বোরহানউদ্দিনে সাবেক ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার: ভোলার বোরহানউদ্দিনের গঙ্গাপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক শিশু ছত্রী (১১) কে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত গোলাম মাওলা (৪০) ২ সন্তানের জনক। তিনি গঙ্গাপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন। গোলাম মাওলা একই এলাকার সামছুদ্দিন (সামছু হাজী) এর ছেলে। গত বুধবার গঙ্গাপুর ইউনিয়নের ওই এলাকার শাকিলের ভিটায় অবস্থিত গোলাম মাওলার ক্লাবে ওই ঘটনা ঘটে।
ওই শিশু অভিযোগ করেন, গত ১২ এপ্রিল (বুধবার) ১১ বছরের এই শিশু কণ্যা ইফতার শেষে সন্ধ্যার পর দোকান থেকে কলা আনতে যাওয়ার পথে অভিযুক্ত ধর্ষক গোলাম মাওলা শিশুর মুখ চেপে তার ক্লাব ঘরে পিছনের দরজা দিয়ে নিয়ে ক্লাবের নির্জন কক্ষে ধর্ষণ করে। এসময় ধর্ষণের আপত্তিকর ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখার অভিযোগ করেছে ওই শিশু। ধর্ষণের শিকার শিশুকে ভয় দেখানো হয়েছে। ঘটনা কাউকে জানালে আপত্তিকর ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ধর্ষক।
ওই শিশুর মা অভিযোগ করেন, মাদ্রাসায় আসা যাওয়ার পথে ধর্ষক দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন সময়ে নানা প্রলোভন দিয়ে সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করতো। ঘটনার দিন ওই শিশুকে একা পেয়ে জোর পূর্বক ধষণ করেন। এই বিষয়টি তারা স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজনদের জানালে তারা কোন বিচার করেননি। এসময় ওই শিশুর মা ধর্ষকের বিচার দাবি করেন।
স্থানীয়রা জানান, ভিকটিম শিশুটির বাড়ীর রাস্তার পাশে ইটের সেমি পাকা ঘর উত্তোলন করে নিজস্ব ক্লাব খুলে সাবেক এই মেম্বার। ক্লাবের পিছনে একটি রুম তৈরী করে সেখানে খাট-পালঙ্ক পাঠিয়ে দীর্ঘদিন যাবত নানা অপকর্ম করে আসছে। এমনকি এই রুমের পিছন দিয়ে সে একটি দরজা তৈরী করেছে, যাতে করে রাস্তার মানুষ এবং পথচারীরা তার অপকর্ম ধরতে না পারে।
ওই ঘটনার পর থেকে ভিকটিমের পরিবারের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সামাজিকতা ও ধর্ষকের হুমকির ভয়ে তারা বিষয়টি প্রশাসনকে জানায়নি। তবে ধর্ষক গোলাম মাওলার পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং ঘটনা ধামাচাপা দিতে ধর্ষকের বড় ভাই এই ক্লাবে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
তারা আরো জানায়, সাবেক মেম্বার গোলাম মাওলা এর আগেও তিন সন্তানের জননীকে ধর্ষণ করেছে। এই ঘটনায় ওই তিন সন্তানের জননী দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন বিচার পাইনি। বরং তার সাজানো সুখের সংসারটি ভেঙে যায়। ধর্ষক গোলাম মাওলার আরো একাধিক নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা এলাকায় সকলেরই জানা রয়েছে।
ওই ঘটনায় অভিযুক্ত গোলাম মাওলার বক্তব্য জানতে চাইলে সে জানায়, এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। ক্লাব ঘরে আমি আড্ডা দিতাম। আমার বিরুদ্ধে অপবাদ আসার পর আমার ভাই আনোয়ার হোসেন ঘরটিতে তালা মেরে রেখেছে। এই বিষয়ে ৪ নং ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত মেম্বার মোশারফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শিশু ধর্ষণের ঘটনা আমরা শুনেছি, ধর্ষণের ঘটনার বিচার করা আমাদের আওতার বাইরে।
গঙ্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রিয়াজ জানান, স্থানীয় মেম্বার ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছে। এছাড়াও এই ঘটনার বিষয়ে বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন মিয়া (বিপিএম) এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। ভিকটিমের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
-এটি/এফএইচ