শুক্রবার ● ৫ জুন ২০১৫
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » চরফ্যাশনে ভেঙ্গে গেল কাশেম বাতানের সালিশ বৈঠকের আদালত: ৩টি মামলায় ৭দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ
চরফ্যাশনে ভেঙ্গে গেল কাশেম বাতানের সালিশ বৈঠকের আদালত: ৩টি মামলায় ৭দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ
এম, মাহাবুব আলম,চরফ্যাশন প্রতিনিধি :: ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ ফ্যাশন গ্রামের ২নং ওয়ার্ডে তার বাসা। খাস পুকুর নামে পরিচিত এলাকায় তার বসবাস। তিনি চালাতেন রিক্সা। ১৯৯৬ সালের আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় খাকা কালীন তার কোন অবস্থান না থাকলেও ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর তার উত্থান হয়। রিক্সার হাতল ছেড়ে তিনি শ্রমীকলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন। পৌর শ্রমীকলীগের যুগ্ম সম্পাদক করা হয় তাকে। ওই থেকে তিনি চরফ্যাশনে ক্ষমতার দাপট দেখাতে শুরু করেন। চরফ্যাশন পৌর মেয়র, মটর সাইকেল শ্রমীক সংগঠনেরর সভাপতি সোহাগ পণ্ডিত, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম ম্যালেটারীর ছোট ভাই ডা. তোফাজ্জল হোসেন, জেনৈক ইউপির চেয়ারম্যান,এওয়াজপুর আওয়ামীলীগ নেতা ছালাম পাটওয়ারীর নিকট আত্মিয়সহ অসংখ্য লোক তার হাতে লাঞ্চিত হন। দলীয় নেতাকর্মীদেরকে তোয়াক্কা না করে শুরু করেন বিভিন্ন সেক্টর নিয়ন্ত্রণ।
চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল বাশারও তাকে কনভেনার করে শালীস বৈঠকের দায়িত্ব দিয়ে থাকেন। চরফ্যাশন বাজারের ফুট-পাতে বাসিয়ে দিয়ে তাদের কাছ থেকে নেয়া হত ৫০ থেকে ১লাখ টাকা। তার এলাকার কোন লোকের সাথে কথার কাটাকাটি হলেই তিনি লোকজন নিয়ে মারধর ও নির্যাতন করে বেড়াত। এই ভাবে দক্ষিণ ফ্যাসন গ্রামটা নিয়ন্ত্রণ করে পৌর শহরসহ বিভিন্ন এলাকা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। জটিল কোন ঘটনা হলে কাশেম বাতান বলতেন এটি আমার আদালতে বিচার হবে। প্রতিদিনি তার খাসপুকুরপাড় বাসায় শালীস বৈঠক বসত। স্থানীয়রা জানিয়েছেন তার পরিবারের মধ্যে ভাইকে জিন্নাড়র ইউপির সদস্য, স্ত্রী পৌর মহিলা কাউন্সিলরসহ একাধিক দলীয় পদ-পদবী দেয়া হয়ে তাকে। রাজনৈতিক নেতাকমীদেরকে তোয়াক্কা না করে কথায় বা শারীরিক নির্যাতন করত কাশেম বাতান বাহিনী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ ফ্যাশন গ্রামের শ্রমিক লীগের ওয়ার্ড সভাপতি আলাউদ্দিন (৩০) সাধারণ সম্পাদক জাকির সিকদার ও হারুন সিকদার, শহীদ গাজীর পিতা মহিন আলী গাজীকে হত্যার সন্দেহে ও এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৩০ মে রাত আনুমানিক ৩ টার সময় পুলিশ আবুল কাশেম বাতান (৪২), মনজু বাতান (২৮) মো. শরীফ (২৫), সাঈদ (১৮) ও ফারুক (২৬) কে তাদের নিজ বাড়ী থেকে গ্রেফতার করেছে। রবিবার তাদেরকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের জামিন আবেদন নাঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ,আবুল কাশেম বাতানের নেতৃত্বে ওই এলাকায় সন্ত্রাসীদের রাম রাজত্ব কায়েম করেছে। এলাকায় চাঁদাবাজী,সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও শালিসের নামে সাধারণ মানুষকে দীর্ঘদিন যাবৎ হয়রানী করে আসছে। তিনি ওই এলাকার সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছেন। তাদের গ্রেফতারের সংবাদে এলাকায় সাধারণ মানুষের স্বস্তি ফিরে আসছে।
ওই দিন বিকালে দক্ষিণ ফ্যাসনসহ পাশ্ববর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ চরফ্যাশন সদর রোডে আনন্দ মিছিল করেছে। মিছিলটি বাজারের উল্লেখযোগ্য সড়ক প্রদক্ষিণ করে পথসভায় মিলিত হয়েছে। চরফ্যাশন থানা অফিসার ইনচার্জ আবুল বাশার জানান, আবুল কাশেম বাতানসহ ৫ আসামীকে দক্ষিণ ফ্যাসন শ্রমিকলীগের ৪ খুনের, ডাকাতি করার চেষ্টা ও আসলামপুর জনৈক মহিলা হত্যার অভিযোগে পৃথক পৃথক ৩ মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার দেখাানো হয়েছে। চরফ্যাশন থানার ওসি তদন্ত জানান, তাদের বিরুদ্ধে আদালতে ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। অর্ডারসীট এখনও হাতে পায়নি।