শনিবার ● ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » ভোলায় গৃহবধূর ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় পুলিশ সালিশের তালবাহনা
ভোলায় গৃহবধূর ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় পুলিশ সালিশের তালবাহনা
স্টাফ রিপোর্টার: ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের সদুরচর তেমাথা সংলগ্ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তিন সন্তানের জনক বশির আহাম্মদ নামের এক লম্পট দিনে দুপুরে ধানক্ষেতের মধ্যে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষক প্রভাবশালী হওয়ায় ভীকটিমের পরিবার আইনের রাস্তায় ধর্ণাদিয়েও কোন কুল কিনারা পাচ্ছেনা । এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্থানিয় জনপ্রতিনিধিরা সালিশির নামে রমরমা বাণিজ্য করে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টার দিকে পূর্বইলিশা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের তেমাথা সংলগ্ন সদুর চরের জাহানারা জানির বসতঘর থেকে প্রায় ১ শ’ গজ দুরে ধান ক্ষেতে মাঝে ২ সন্তানের জননী গৃহবধূ গরুর জন্য ঘাস কাটে। এই সুযোগে এক পেয়ে বশির পিছন থেকে ঝাপটে ধরে ধানক্ষেতের মধ্যে ধর্ষণের জন্য চেষ্টা করে। এসময় ওই গৃহবধূ বশিরকে কাকা কাকা বলে হাতে পায়ে ধরেও ব্যর্থ হয় । এক পর্যায়ে তার চিৎকার দিলে বশির ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আমি ধানক্ষেতের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ চিৎকারের শব্দ শুনি। চেয়ে দেখি বশির কাকা ওই গৃহবধূর সাথে ঝাপটা ঝাপটি করে। এক পর্যায়ে তার চিৎকার দিলে বশির ছেড়েদিয়ে পালিয়ে যায়, তার কিছুক্ষণ পর বশির কাকা এসে তাকে অকত্যভাষায় গালিগালাজ করে। ঘটনার সাথে সাথেই ওই গৃহবধূ স্থানীয় মেম্বার কাশেম মালকে জানায়, কাশেম মাল ঘটনা শুনে তাকে উল্টো যৌন হয়রানিমূলক কথা বলে তাড়িয়ে দেয়। পরে ওই গৃহবধূ ভোলা সদর মডেল থানায় বশিরের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করে।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ এস আই পিন্টু ঘটনা স্থলে গেলে স্থানিয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনার সুষ্ঠ বিচার করে দিবে বলে এ এস আই পিন্টুকে বিদায় করে।
গৃহবধূর মা এই ঘটনায় বশিরকে দায়ী করে বলেন, বশিরের জন্য আমার মেয়ে সংসার ভাঙ্গতে চলছে। সামাজিক ভাবে আমার মেয়ে ও আমরা হেয়প্রতিপন্ন হয়েছি। আমরা এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার আশা করছি। তানা হলে আইনের দরজায় কপাল ফাটিয়ে মরবো।
স্থানীয় মেম্বার কাশেম মাল বলেন, আমি বলছি বিচার করে দিব। আমার কথার পরেও যেহেতু পুলিশ আনছে, তাহলে পুলিশই বিচার করুক।
সাবেক মহিলা মেম্বার জোসনা বেগম বলেন, ঘটনা শুনেছি, আমি এখন মেম্বার না, আমাকে বলে কোন লাভ নেই, আমি কিছুই করতে পারবোনা।
ঘটনার ব্যাপারে এ এস আই পিন্টুর সাথে আলাপ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা শিকার করেন ।
ঘটনার ব্যাপারে ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনার ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। এ এস আই পিন্টু কিসের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়েছে তাও আমি জানিনা। যদি ভিকটিম আমার কাছে এসে ঘটনার ব্যাপারে অভিযোগ করেন, তাহলে আমি আইন অনুযায়ি ব্যবস্থা নেব।
পাল্টাপাল্টি দোশারোপের মধ্যে ধর্ষণের চেষ্টা ঘটনাটি আস্তে আস্তে চাঁপা পড়ে যাচ্ছে, নষ্ট হয়েছে গৃহবধুর সামাজিক অবস্থান। সুযোগ তৈরি হচ্ছে মোটা টাকার বাণিজ্যর। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বশিরের টাকার প্রতি নজর পড়ে আর গৃহবধূর ইজ্জতকে বিক্রি করার দাম কষছে। এই সুযোগে বশির ধোঁয়া তুলসীপাতা সেজে এলাকায় বুকফুলিয়ে বেড়াচ্ছে ।
স্থানীয়দের সাথে আলাপ কালে তারা বলেন, এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার না হলে, এলাকায় আরো এই ধরনের অপরাধ বেড়ে যাবে। গৃহবধূর সাথে যা ঘটেগেছে আমরা আইনগত ভাবে বশিরের বিচার চাচ্ছি। এলাকার কোন মেম্বারই এই ঘটনার সঠিক বিচার করবেনা। তারা বশিরের টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে।
এইচএমএন/এফএইচ