

রবিবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২২
প্রথম পাতা » কৃষি » লালমোহনে আমন ধানে দেখা দিয়েছে শীষকাটা ও তলা পঁচানি রোগ
লালমোহনে আমন ধানে দেখা দিয়েছে শীষকাটা ও তলা পঁচানি রোগ
লালমোহন প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহনে রোপা আমন ধানের গাছে দেখা দিয়েছে পাতা মোড়ানো, পাঙ্গাশিয়া, মাজরা, শীষকাটা ও তলা পঁচানি রোগ। এ সকল রোগের আক্রমণে দিন দিন পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে আমনের চারা। এতে ধানের ফলন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পরেছে কৃষকরা। ধান রক্ষার উপায় খুঁজছেন তারা। প্রতি সপ্তাহে দু‘চার বার কীটনাশক ছিটাতে হচ্ছে। এতে দিশে হারা হয়ে পড়ছেন তারা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ২৩ হাজার ৫শ‘ ২০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। তবে লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৩ হাজার ৫শ হেক্টও জমিতে। লক্ষমাত্রা অতিক্রম করছে আমন চাষে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, আর কয়েক সপ্তাহ পরে গাছে ধান আসার কথা। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে রোগের আক্রমণ। ধানগাছ প্রথমে হলুদ ও পরে শুকিয়ে বাদামি রং ধারণ করছে এবং ধানের চারার ঢিগ কেটে ফেলছে শীষকাটা নামক পোকা। কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো ফল পাচ্ছেনা কৃষকরা। ফসলের মাঠ জুড়ে এখন শুধু রোগের আক্রমন। উপজেলার বিভিন্ন হাট- বাজারের লাইসেন্স বিহীন কীটনাশকের দোকান গুলোতে অনেক বে-নাম্বারী কোম্পানির কীটনাশক বিক্রি করা হচ্ছে দেদারছে গ্রামের সড়ল মনা কৃষকদের কাছে। তা দিয়ে কোন প্রতিকার হচ্ছেনা। প্রতারিত হচ্ছে কৃষক। দেখার যেন কেউ নেই । বিভিন্ন রোগ বালাই ও পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় বাজারে পাওয়া কীটনাশক জমিতে ছিটিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। আমনের ফলন ও অতিরিক্ত খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। তাদের আশঙ্কা, সময় মতো রোগ বালাই দুরকরা ও পোকা দমন করতে না পারলে এবার রোপা আমন উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে ।
আবার একাধিক কৃষকরা বলেন, তারা দোকান থেকে বীজ কিনে ও প্রতারিত হয়েছেন। আমনের বীজ কিনে চারা রোপনের কিছু দিনের মাথায় অপরিপক্ব ধান ক্ষেতের একই জমিতে কোথাও বিভিন্ন প্রকার ধান বের হতে দেখা গিয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
কৃষক মোশারেফ হোসেন, নুরুল ইসলাম জানান, তাদের সকলের প্রায় জমিতে ধানের বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছেন এবং জমিতে (ধানের ছিট) কোন কোন স্থানে ধান বের হচ্ছে আবার ক্ষেতের কিছু অংশে রোপা আমনের চারা গাছ লক্ষ করা যাচ্ছে, আবার পোকা আক্রমণ করেছে। তারা আরো জানান, এ পর্যন্ত ৪/৫ বার কীটনাশক স্প্রে করেও আমন ক্ষেতের এ রোগ দমন করা যাচ্ছে না। আবার অনেকে একাধিক বার কীটনাশক স্প্রে করেছেন । প্রতিবার স্প্রে করতে শতাংশ প্রতি প্রায় সাত-আটশ টাকা করে খরচ হচ্ছে। তাদের জমিতে শীষকাটা ও তল পচার আক্রমণের কথা। তারা বলেন, সুদে ঋণ নিয়ে জমি লগ্নি করেও এবার আমন ধান চাষ করেছেন অনেকে। ধান বের হতে না হতেই পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এই পোকা ধান গাছের পাতা খেয়ে বিবর্ণ করে ফেলছে। নিচের দিকে বসে যাচ্ছে রোপা ধানের গাছ।
লালমোহন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএফএম শাহাবুদ্দীন বলেন, কৃষকরা আমাদের সাথে পরামর্শ নিয়ে কীটনাশক ছিটায় না এবং কীটনাশকের সঠিক ডোজের ব্যবহার সময় মতো না করার কারণে বারবার স্প্রে লাগছে। কীটনাশক ছিটানোর সময় বিলের সকল চাষাকে এক সাথে কীটনাশক ছিটানোর পরামর্শ দেন তিনি।
-ইউএফ/এফএইচ