বৃহস্পতিবার ● ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » ভোলার মেঘনার শাহবাজপুর চ্যানেলে চোরাই তেলের ব্যবসা জমজমাট
ভোলার মেঘনার শাহবাজপুর চ্যানেলে চোরাই তেলের ব্যবসা জমজমাট
স্টাফ রিপোর্টার: ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার সিডারচর এখন তেল চোরাকারবারিদের নিরপদ ঘাঁটি হিসেবে গড়ে উঠেছে । রাতের অন্ধকারে ওই চরে চোরাই তেলের ব্যবসায়ীরা জমজমাট ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছে। ভোলার মেঘনা মোহনার শাহবাজপুর চ্যানেল হয়ে বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলগামী জাহাজে পরিবহনকৃত সরকারি মালিকানাধীন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের জ্বালানি তেল রাতের অন্ধকারে জাহাজ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার তেল নৌ-রুটের নির্দিষ্ট স্থান থেকে ট্রলারযোগে নামিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। ওই তেল এক সময় দৌলতখানের চৌকিঘাট পয়েন্টে নামানো হতো। বর্তমানে ওই ঘাট ব্যবহার না হলেও ওই নিয়ন্ত্রকরাই তজুমদ্দিন চ্যানেলের তেল বিক্রিতে জড়িত রয়েছে বলেন স্থানীয় একাধিক সূত্র এসকল বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে স্থানীয় সূত্র জানায়, হাতিয়া অঞ্চলের প্রভাবশালী ৩ জন, তজুমদ্দিনের কালা বাবুলসহ ৭-৮ জনের একটি গ্রুপ মেঘনা নদীর ওই নির্দিষ্ট পয়েন্টের নেতৃত্বে রয়েছে। জাহাজের স্টাফ ও চোরাই সিন্ডিকেটের যোগসাজশে শাহবাজপুর চ্যানেলে জাহাজ থামিয়ে তেল নামানো হয়। নির্দিষ্ট স্থানে জাহাজ এলেই গতি কমে যায়। নিভে আসে সার্চ লাইট। হালকা হর্ন বাজিয়ে জানান দেয়া হয়। এর পরেই চোরাই সিন্ডিকেটের ডেক খোলা ট্রলার ছুটে আসে। মোবাইল ফোনে আগেই দাম-দর সঠিক করা হয়। লেনদেন চুকে গেলে পাইপ দিয়ে ওই সব ট্রলারের খোলে তেল নামিয়ে দেয়া হয়।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ডিপো থেকে বরিশাল, খুলনা অঞ্চলের শতাধিক অঞ্চল ডিপোর জন্য কোটি কোটি টাকার জ্বালানি তেল জাহাজে লোড করার সময়ই কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অতিরিক্ত তেল (স্কেলের বাইরে) নেয়া হয়। ওই তেলই পথে বিক্রি করা হয়। এভাবেই সরকারের কোটি টাকার তেল পাচার বিষয় অনেকটাই ‘ওপেন সিক্রেট’।
স্থানীয় প্রশাসন, কোস্টগার্ড, র্যাবকে ম্যানেজ করেই চলছে এ ব্যবসা এমন অভিযোগ ও রয়েছে। দৌলতখানের এক আওয়ামীলীগ নেতা জানান, জাহাজ থেকে তেল নামানো ও বিক্রি নানা কাজে প্রতিদিন ৩-৪শ’ শ্রমিক কাজ করে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে আছে। মাঝে মধ্যে প্রশাসন, র্যাব-৮, কোস্টগার্ডের অভিযানের কারণে রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হন চোরাকারবারিরা।
এব্যাপারে দৌলতখান থানার ওসি এনায়েত হোসেন বলেন, একটি গ্রুপ এ কাজে জড়িয়ে পড়ছে। তবে কয়েকদিন নৌ-শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে বেসরকারি মালিকানাধীন জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকে।
তজুমদ্দিন থানার ওসি একেএম শাহীন মন্ডল বলেন, জাহাজ থেকে এভাবে তেল পাচারের বিষয় তার জানা নেই।
এক সময় ভোলার ইলিশা রামদাসপুর চ্যানেল,চৌকিঘাট চ্যানেল জমজমাট ছিল। ওই সব রুট পরিবর্তিত হয়ে হালে তজুমদ্দিন ও হাতিয়া সীমানার চেউয়াখালী, চরজহিরউদ্দিনের সিডার চর রুট ব্যবহার করা হচ্ছে।
এইচএমএন/এফএইচ