মঙ্গলবার ● ২৩ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » শিক্ষা » ছাত্র ধর্মঘটে অচল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ছাত্র ধর্মঘটে অচল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা : ধর্মঘটের কারণে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। নতুন হল নির্মাণের দাবিতে ফের ডাকা ধর্মঘটের প্রথম দিনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক অবরোধ করে সড়কে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি শেষ করেন।মঙ্গলবার পৌনে ২টার দিকে সহ�্রাধিক শিক্ষার্থী পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড় ছেড়ে গেলে পুরান ঢাকার যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেলা ১টা ১৫ মিনিটের দিকে সড়ক অবরোধ তুলে নেয়। এতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে। অবরোধ তুলে নেওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ফায়জুল ইসলাম বলেন, বুধবারও ধর্মঘট পালন করা হবে। এই আন্দোলনে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমর্থনের আহ্বান জানান তিনি।ধর্মঘটের কারণে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি।নতুন আবাসিক হল নির্মাণের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই ধর্মঘট চলছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা রায়সাহেব বাজার মোড় অবরোধ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। অবরোধে যাত্রাবাড়ী, বাবুবাজার সড়ক, গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সড়কে সাত থেকে আটটি টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এসব সড়কের আশপাশের বেশির ভাগ দোকান বন্ধ হয়ে যায়।আন্দোলনরত শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম বলেন, ধর্মঘটের সমর্থনে তাঁরা সকাল নয়টার দিকে ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকেন। মিছিল নিয়ে রায়সাহেব বাজার মোড়ে অবস্থান নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের তালা প্রশাসন গতকাল সোমবার রাতে খুলে ফেলেছে। তবে শ্রেণিকক্ষগুলোতে তালা লাগানো হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূর মোহাম্মদ জানান, শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের তালা খোলা হয়েছে। সোমবারও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর জলকামান থেকে পানি, কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে পুলিশ। এতে ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা তাঁতীবাজার মোড়ে ছয় ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে ওই এলাকা ও আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দোকানপাটও বন্ধ থাকে।নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করে জাতীয় চার নেতার নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি হল এবং কেরানীগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব জায়গায় নতুন হল নির্মাণের দাবিতে টানা ১৯ দিন ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দিনের কর্মসূচি শেষের আগে আন্দোলনের সংগঠক রাইসুল ইসলাম নয়ন বলেন, পূর্বঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী আগামীকালও আমাদের ধর্মঘট চলবে।আজ আমরা দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন আমাদের যৌক্তিক দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে সংহতি প্রকাশ করে সে আহ্বান জানিয়েছি। এর আগে সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিলের পর মূল ফটক আটকে রাস্তায় নামে শিক্ষার্থীরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়।পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের পরিত্যক্ত জমিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল নির্মাণের দাবিতে ২ অগাস্ট থেকে আন্দোলনে রয়েছে শিক্ষার্থীরা।বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ে গিয়ে পুলিশের বাধা পেয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে দুদিনের ধর্মঘটের ডাক দেয় আন্দোলনকারীরা। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিলে পুলিশের বাধা পেয়ে ফের দুদিনের ধর্মঘটের ডাক দেয় শিক্ষার্থীরা। ১৯৮৫ সালে থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি হল দখল করে আছে প্রভাবশালীরা।বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রার পর ২০০৯ সালে হলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১১ ও ২০১৪ সালে দুটি হল উদ্ধার হয়।তবে সেগুলোর সংস্কার নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই।