শুক্রবার ● ১৫ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » মনপুরায় ভুয়া ধর্ষণ মামলা করতে রাজী না হওয়ায় গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ
মনপুরায় ভুয়া ধর্ষণ মামলা করতে রাজী না হওয়ায় গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার: ভোলার মনপুরায় চার সন্তানের জননীকে থানায় এনে রাতভর মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ মামলার বাদী বানানোর অভিযোগ উঠেছে মনপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন খানের বিরুদ্ধে। গৃহবধূর বাড়ি মনপুরা উপজেলার চর ফয়েজ উদ্দিন ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে। নির্যাতনের স্বীকার গৃহবধূ বর্তামনে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গৃহবধূ সাংবাদিকদেরকে তার ভিডিও এ্যস্টেটম্যান্টে অভিযোগ করেন, গত সোমবার সন্ধ্যার পর তার বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে মানুষের ডাক-চিৎকার শুনতে পায়। এসময় সে তার ঘরে মাছ কাটছিল। কিছুক্ষণ পরে স্থানীয় মেম্বার মফিজল সর্দার ও তার ছেলে মোস্তাফিজ, ভাতিজা নুরনবীসহ সাত আটজন মিলে তাকে ঘর থেকে জোড় করে টেনে হেচরে বের করে পাশের চৌমহনীতে নিয়ে যায়। এসময় তার কলেজ পড়–য়া ছেলে সুমন এগিয়ে আসলে তারা তাকেও মারধর করে। চৌমহনী বাজারে এনে ওই ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার জাফর উল্যাহর সাথে তার ছবি তোলে। পরে তারা থানায় খবরে দিয়ে জাফর উল্যাহ ও গৃহবধূকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। গৃহবধূকে থানায় আনার পর জাফর উল্যাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিতে বলেন ওসি ও বর্তমান মেম্বার মফিজল সর্দার ও তার সাঙ্গীরা। মামলা দিতে রাজি না হওয়ায় বর্তমান মেম্বারের লোকজন ও ওসি মিলে ওই গৃহবধূকে রাতভর মারধর করে। এক পর্যায়ে ওসি তার নিজের হাতের লাইট দিয়ে গৃহবধূর মাথায় আঘাত করে ফুলা জখম করে। পরে তারা জোরপূর্বক গৃহবধূর কাছ থেকে মামলার কাগজে স্বাক্ষর নেয় এবং মামলার আসামী জাফর উল্যাহকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পর দিন বিকেলে আদালতে সোপর্দ করেন।
আদালত জাফর উল্যাহর অবস্থা বিবেচনা করে জামিন মঞ্জুর করে। এ খবর জানতে পেরে ওসি শাহিন খাঁন বুধবার গৃহবধুকে বাড়ি থেকে চৌকিদার পঠিয়ে থানায় ডেকে আনেন। পরে গৃহবধূর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে মেডিকেল করানোর জন্য পুলিশ পাহাড়ায় ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সে আসতে না চাওয়ায় তাকেও আসামীর সাথে চালান দেয়ার ভয় দেখায়। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ভোলা সদর হাসপতালে আনলে সে মেডিকেল করবেনা বললে ওসি তাকে ফোন অকত্থ ভাষায় গালাগাল করে ও জেল-হাজতের ভয়ভীতি দেখায়। এবং বলে ‘তুই থানায় আয় তোকে কিভাবে মেডিকেল করানো লাগে তা আমার জান আছে’। ওসির নির্যাতনের স্বীকার মনপুরার গৃহবধু বর্তামনে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এব্যাপরে মনপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন খাঁন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাকে থানায় এনে কোন মারধর করা হয় নাই। এবং সে মেডিকেল করুক বা না করুক সেটা তার ব্যাপার।
সদ্য বিদায়ী ভোলা পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান বলেন, ভিকটিম যদি মেডিকেল না করাতে চায় সে ক্ষেত্রে তাকে জোড় করে মেডিকেল করানো সম্পূর্ন বে-আইনি।
এমইএ/এফএইচ