শুক্রবার ● ২০ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » রিক্সা চালক থেকে কোটিপতি জ্বীনের বাদশা অহিদ দফাদার (পর্ব -৩)
রিক্সা চালক থেকে কোটিপতি জ্বীনের বাদশা অহিদ দফাদার (পর্ব -৩)
আবদুল মালেক,বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি: ভোলা বোরহানউদ্দিন উপজেলার মিঝির বাজার এলাকায় ভূয়া জ্বীনের বাদশা সেজে কোটিপতি বনে যাওয়া অসংখ্য যুবক রয়েছে। প্রবাসীদের সাথে প্রতারণা করে কোটিপতি অহিদ দফাদারের আত্মকাহিনী শুনলে যে কেউ অবাক হয়ে উঠবেন। এক বছর পূর্বেও সে সামান্য একজন রিক্সা চালক ছিলেন। আজ সে প্রায় দুই কোটি টাকার মালিক। এরা কত সংখ্যক সহজ সরল মানুষকে ঠকিয়ে নিজেরা প্রচুর অর্থ বিত্তের মালিক হয়েছে তার হিসাব নেই কারোও কাছে। এ কাচিয়া ইউনিয়নে এরকম কত ভূয়া কোটিপতি বনে যাওয়া ভন্ড জ্বীন প্রতারক আছে তার হিসাব জানা নেই কারোও কাছে। তবুও মানুষকে এদের থেকে সাবধান করার লক্ষ্যে আমাদের এ চেষ্টা। জানি না কতটুকু সফল হবো। তবুও মানুষের যদি একটু উপকারে আসে সে চেষ্টা অব্যাহত রাখবো। এদিকে বর্তমান সরকার সকল অনিয়ম আর দূর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হতে কঠোর তম হয়ে দেশ পরিচালনা করছেন। কিন্তু এক শ্রেণীর এ ভূয়া প্রতারণাকারীদের আইন কিছুই করতে পারছে না। এরা প্রতিনিয়ত মানুষের সাথে জালিয়াতি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে কোন দৃষ্টান্ত মূলক ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কাচিয়া ইউনিয়নের মিঝির বাজার সংলগ্ন ফুলকাচিয়া ৪নং ওয়ার্ডের মফিজুল ইসলামের ছেলে আঃ অহিদ দফাদার (২৫)। তিনি এক বছর পূর্বেও সামান্য একজন রিক্সা চালক ছিলেন। বাবাও ছিলেন একজন রিক্সাচালক । তার বাড়ীর আশ পাশ সহ এলাকায় জ্বীন পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে কোটিপতি হতে দেখে সেও লোভ সামলাতে পারেনি। কোটিপতি বনে যাওয়ার স্বপ্নে গত প্রায় এক বছর পূর্বে জ্বীন পরিচয় দিয়ে প্রতারণার কাজ শুরু করেন । অন্যান্যে জ্বীন প্রতারকরে মত বিনা চালানে অধিক লোভে এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। দিনের পর দিন মানুষকে নানা কৌশলে ধোঁকা দিয়ে ইতিমধ্যে কোটিপতি মালিক বনে গেছেন। তিনি গত ৫/৬ মাস আগে ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় কৃত জমির উপর প্রায় ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে আলিশান ঘরও নির্মাণ করেন। ওই ঘরের ভিতর ও বাহিরের কারুকাজ দেখে সবাই’র চোখে রিমজিম করে উঠার কথা। এ যেনো আলাউদ্দিনে চেরাগের গল্পের মত ঘটনা। কারোও বিশ্বাস হবে না এ কাল্পনিক গল্পের মত ঘটনা। এত টাকার উৎস কোথায়? কিভাবে সম্ভব? উত্তর মিলছে না। এর উত্তর কবে নাগাদ মিলবে তাও জানি না।
১ বছর পূর্বে যে দিন আন্তে পান্তা পুরাতো সে এখন কোটিপতি। সে কোটিপতি হউক এটা কারোও মাথা ব্যথা নেই কিন্তু এক শ্রেণীর সহজ সরল দেশী ও প্রবাসী ভাই ও তাদের সহজ সরল স্ত্রীদেরকে গভীর রাতে ফোন দিয়ে এ প্রতারণা করে এ অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভন্ড জ্বীনের বিরুদ্ধে। হঠাৎ এই আলিশান ঘরটি করার পর থেকে এলাকায় মানুষের মাঝে অহিদ পরিবারের জ্বীন ব্যবসাটি আলোড়ন সৃষ্টি করে। নিজেকে অনেকটা আত্মগোপনে রেখে সুকৌশলে এ প্রতারণা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু এ অহিদ নয় কাচিয়া ইউনিয়নের ফুলকাচিয়া ৪নং ও ৫নং ওয়ার্ডের অনেক যুবকই এ প্রতারণা সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে আমিন (২০) পিতা সাফিজল দফাদার, মোঃ সহিদ (৩০) পিতা মফিজল দফাদার, নকিব ফরাজী (২২) পিতা নুরনবী ফরাজী, রাসেল মজম (২৫) পিতা শাহে এমরান, আকবর শিউলী (২৩) পিতা সানু শিউলি, মোঃ রাব্বি ফরাজি (২০)। এ চক্ররা দ্রুত অর্থবিত্তের মালিক হয়ে মাদ্রক দ্রব্যের দিকেও ধাবিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে এলাকার সচেতন মহল জানান, এ ভূয়া জ্বীনের কারণে আমাদের এলাকার নাম পরিচয় দিতে লজ্জা পাই। অনেক লোকই আমাদের জ্বীনের এলাকার লোকজন হিসাবে হাসি তামাসা করে। অল্প সংখ্যক লোকের জন্য আমরাও আতঙ্কিত থাকতে হয়। অনেক ভালো পরিবার আমাদের এলাকায় জ্বীনের এলাকার নাম শুনে আত্মীতা করতে চায় না। সুন্দর ঘর বাড়ী করলে সবাই বলে জ্বীনের ব্যবসা করি। তাই সুন্দর ঘর করতে দ্বিধাদ্বদ্ধে ভুগছি। মাঝে মধ্যে মনে হয় এই এলাকা ছেড়ে অন্য স্থানে চলে যাই। যাদের জন্য আমাদের এ অবস্থা এ ধরনের ভ- চক্রদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
আজমল পাটোয়ারী (৫০) বলেন, তার সহজ সরল বড় ভাইকে ফোন দিয়ে নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায় ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ ভ- জ্বীন চক্র। সে এ ভন্ড চক্রদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন।
অপরদিকে এ ভ- প্রতারক চক্রদের হাত থেকে স্থায়ী মুক্তি পেতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তপেক্ষ কামনা করছে ক্ষতিগ্রস্তরা।
এব্যাপারে আঃ অহিদের সাথে আলাপ করতে চেষ্টা করলে তাকে বাড়ীতে পাওয়া যায়নি।
চলবে…..