বৃহস্পতিবার ● ১৯ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন » প্রভাবশালীদের দখলে চরফ্যাশনের ‘ভূতার খাল’
প্রভাবশালীদের দখলে চরফ্যাশনের ‘ভূতার খাল’
বিশেষ প্রতিবেদন: ভোলার চরফ্যাশন পৌর শহরের একমাত্র প্রবাহিত খাল ‘ভূতার খাল’। খালটি পৌর শহরের অদূরে মায়া নদীর সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে। জলাবদ্ধতা নিরসন ও ইরি-বোরো মৌসুমে সেচের ক্ষেত্রে এ খালটি এলাকাবাসীর প্রধান ভরসা হলেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে এটির এখন মরণদশা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সরকারি এ খালটি দখল করে নির্মিত হচ্ছে বাড়িঘর। দখলের কারণে বিভিন্ন জায়গায় সংকুচিত হয়েছে খালের প্রশস্ততা। এছাড়া ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে বিভিন্ন জায়গায় বন্ধ হয়ে আছে পানির প্রবাহ। মায়া নদীর ঘাট ও পৌর শহরের লঞ্চঘাটসহ বিভিন্ন জায়গায় আটকে আছে পানি। পানির প্রবাহ ঠিকমতো না হওয়ায় ইরি-বোরো ধান চাষ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন কৃষকেরা।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় কৃষক মোজাম্মেল হক অভিযোগ করেন, ‘প্রভাবশালীরা খাল দখল করে অট্টালিকা নির্মাণ করছে। ভয়ে তাদের কাজে কেউ বাধা দিচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গা এমনভাবে দখল করা হয়েছে যে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে আছে। এভাবে চলতে থাকলে তো আমরা আসন্ন বোরো মৌসুমে ধান চাষ করতে পারব না।’
খালটি সম্পর্কে কথা বলেন চরফ্যাশন পৌর বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, ‘খাল ছাড়া এই বাজারে পানি সরবরাহের তেমন ব্যবস্থা নেই। শহরে যে পুকুর আছে তা মরা। এখন বাজারে যদি কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তাহলে তো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হবে।’
এলাকার সচেতন মহল ও স্থানীয় পরিবেশবাদীরা বলছেন, এই খালের পানি ইরি বোরো স্কিমের সেচের কাজে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া খালটি পরিবেশের অনেক উপকারে আসছে। যেভাবে দখল চলছে তা যদি বন্ধ না করা হয়, তবে কিছুদিনের মধ্যে খালটির অস্তিত্ব হারিয়ে যাবে।
খাল দখলের বিষয়ে স্থানীয় দখলকারী জাহেদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি খাল দখলের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘যে জায়গায় আমি স্থাপনা নির্মাণ করেছি সেটা আমার নিজস্ব জায়গা। আমার বাড়ির কিছু অংশ ভেঙ্গে খালের মধ্যে পড়েছে আমি শুধু সে জায়গাটি ভরাট করেছি।’
চরফ্যাশন পৌর মেয়র আব্দুস ছালাম হাওলাদার বলেন, পৌরসভা থেকে একাধিক নোটিশের মাধ্যমে দখলকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। যারা এখন পর্যন্ত তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেন নি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, যারা সরকারি খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।