বৃহস্পতিবার ● ১৯ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » ভোলায় ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা
ভোলায় ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা
স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতেমধ্যেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা নিজ নিজ এলাকার বড়-ছোট হাট-বাজার, পথ-ঘাটসহ সাধারণ ভোটারদের মাঝে প্রচার-প্রচারণ এবং গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যে কোন মূল্যে ভোটারদের মন জয় করাই তাদের লক্ষ্য। এ জন্য তারা সকল ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে রয়েছে সরকার দলীয় প্রার্থী, বিএনপির প্রার্থী, বিজেপি প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী।
সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ গ্রামের ছোট-বড় হাট-বাজার, পথ-ঘাটসহ সাধারণ ভোটারদের মাঝে প্রচার-প্রচারণ এবং গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ প্রচারণায় রয়েছে সরকারী দলের প্রার্থী, বিএনপি প্রার্থী, বিজেপি প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাদের মধ্যে ভোলা সদর উপজেলা এবং দৌলতখান উজেলার একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। তবে আওয়ামীলীগ দল থেকে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি থেকে একক প্রার্থী হওয়ায় তারা রয়েছে ফুরফুরে মেঝাজে।
ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইফতারুল হাসান স্বপন এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যে কোন মূল্যে তিনি পুণরায় আবার নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে চষে বেড়াচ্ছেন। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।
অপরদিকে ইউনিয়ন সাবেক ছাত্রলীগ ও বর্তমান আওয়ামীলীগ নেতা মো.কামাল হোসেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে মাঠে বেশ ঝড় তুলেছেন। তিনি ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোষ্টার ও ব্যানারে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। যে কোন মূল্যে তিনি নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে চষে বেড়াচ্ছেন।
এছাড়া বিএনপি থেকে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সাবেক চেয়ারম্যান আবু নোমান মোহাম্মদ ছফিউল্যাহ, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল কাজী, বিএনপি নেতা হারুন জামাল ও বিজেপি নেতা গজনবী আহমেদ টিপু। তারাও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। পার করছেন ব্যস্ত সময়।
উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন মানসুর এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যে কোন মূল্যে তিনি পুণরায় আবার নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে চষে বেড়াচ্ছেন। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি। অন্যদিকে বিএনপি থেকে সাবেক চেয়ারম্যান রাইসুল আলমও এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যে কোন মূল্যে তিনি পুণরায় আবার নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে চষে বেড়াচ্ছেন। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।
দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী মোশারেফ হোসেন ভূইয়া, এডভোকেট জুলফিকার আলী ভুট্টু তালুকদার, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি কাজল তালুকদার। বিএনপি দলীয় প্রার্থী তরুণ সাংবাদিক মীর মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, বর্তমান চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন হাওলাদার। এদের মধ্যে আওয়ামীলীগ নেতা মোশারেফ হোসেন ভূইয়া এবং বিএনপি দলীয় প্রার্থী সাংবাদিক মীর মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন। তবে বর্তমান চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন হাওলাদার বিএনপি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে দল থেকে বহিষ্কার হওয়ায় কোনঠাসা হয়ে রয়েছেন। তার পরেও তিনি প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এই পরিস্থিতির কারণে বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন অনেকটাই এগিয়ে এবং তার জনসমর্থনও রয়েছে প্রচুর।
চরপাতার বিএনপির একটি ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত ইউপি নির্বাচনে মীর মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তিনি বিএনপি থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছিলেন। তখন দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে দৌলতখান উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন হাওলাদারকে সমর্থন যোগান। নাজিম উদ্দিন হাওলাদার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর বিতর্কিত কর্মকান্ড, সরকারী দলের সাথে আতাত ও দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গসহ নানান অভিযোগে তাকে বিএনপি থেকে বহিস্কার করায় মীর মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের জন্য পথ সুগম হয়েছে। এছাড়াও সাবেক এমপি হাফিজ ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী মাফরুজা সুলতানার আর্শিবাদ রয়েছে তার উপর। এ জন্য দলীয় নেতা-কর্মীরা মীর মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্চেন।
স্থানীয়রা আরো জানান, নাজিম উদ্দিন হাওলাদারকে বহিষ্কার না করলেও এলাকায় তার জনপ্রিয়তা শুন্যের কোটায় নেমে গেছে। অপরদিকে সাংবাদিক মীর মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের দলের জন্য যে ত্যাগ-তিতিক্ষাসহ স্থানীয় জনসাধারণের সাথে সু-সম্পর্ক থাকার কারণে তার অবস্থান সু-দৃঢ়। তাছাড়া সাবেক এমপি হাফিজ ইব্রাহিমের একান্ত ঘনিষ্টজন হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তার । অন্যদিকে উপজেলা ও জেলা বিএনপির তৃণমূল থেকে শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সু-দৃষ্টি গিয়াসের প্রতি থাকায় তার অবস্থান সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য। অন্যদিকে দলীয় প্যানেলের বাহিরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন আব্দুর রহমান খান তালুকদার।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, চরপাতা ইউনিয়নের বিএনপি দলীয় প্রার্থী মীর মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বিগত ১০ বছর যাবত তার নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি অলি-গলি, হাট-বাজার চষে বেড়াচ্ছেন। দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। নিয়মকরে প্রতি সপ্তাহের দু-তিন দিন তার এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তবে মীর মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বিভিন্ন সময়ে মামলা-হামলাসহ নানান ধরনে বিপর্যস্ত হলেও বসে নেই। তিনি দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকার প্রতিটি জনপদ চষে বেড়াচ্ছেন। এমনকি তিনি একাকি সকল ভোটারদের কাছে গিয়ে তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। তার এই পদক্ষেপকে সাধারণ মানুষ একটু ভিন্ন চোখে দেখছেন। এমনকি তাকে সকলেই খুব আপন করে নিয়েছেন।
উত্তর জয়নগর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সফিজল ইসলাম, বর্তমান চেয়ারম্যান ইয়াছিন লিটন এবং এমপি মুকুলের ভগ্নিপতি বশির সর্দার এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যে কোন মূল্যে তিনি নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে চষে বেড়াচ্ছেন। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।
অন্যদিকে বিএনপি থেকে সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদ উদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন ও বিএনপি নেতা আলাউদ্দিন সর্দারও এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যে কোন মূল্যে তিনি নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে চষে বেড়াচ্ছেন। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।
দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর হাওলাদার ও তোফায়েল আহমেদের ভাতিজা বাচ্চু এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যে কোন মূল্যে নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে চষে বেড়াচ্ছেন। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।
অন্যদিকে বিএনপি দলীয় প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি ফজলু হাওলাদার এবং ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মেম্বারও এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যে কোন মূল্যে নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে চষে বেড়াচ্ছেন। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।
প্রচার-প্রচারণায় আলোচনার র্শীষে রয়েছেন দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের বিএনপি দলীয় তরুন প্রার্থী সাংবাদিক মীর মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন এবং ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের সরকার দলীয় আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ কামাল হোসেন।