মঙ্গলবার ● ৩ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » দৌলতখানে উপ-সহকারীর নির্মম নির্যাতনে স্ত্রী ও সন্তান ঘরছাড়া
দৌলতখানে উপ-সহকারীর নির্মম নির্যাতনে স্ত্রী ও সন্তান ঘরছাড়া
মোকাম্মেল হক মিলন : দৌলতখান উপজেলা খাদ্যগুদামে দায়িত্বরত উপ-সহকারী পরিদর্শক হুমায়ন কবিরের যৌতুকের চাহিদা না মেটাতে পেরে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে স্ত্রী লাকি আক্তার ও তার ৫ বছরের শিশু সন্তান সিয়াম এখন ঘরছাড়া হয়ে মানবেতর জীবন জাপন করছে। অপরদিকে হুমায়নের বিরুদ্ধে চাকুরীর স্থলে বিভিন্ন নারীদের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পরাসহ বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্ত্রী লাকি আক্তারের অভিযোগ এবং চাকুরীর স্থল লালমোহন ও দৌলতখান উপজেলা খাদ্যবিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে আলাপকালে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, হুমায়ন কবির কত ভয়ংকর ও বর্বর চরিত্রের লোক । স্ত্রী লাকি আক্তারের সাথে বিবাহের পর তার ভয়ংকর চেহারার আত্মপ্রকাশ ঘটে। বিভন্ন অজুহাতে লাকি আক্তারের কাছে মোটা অংকের যৌতুক দাবি করে চাহিদামতো না পেয়ে বেছে নেয় লাকি আক্তারের উপর নির্যাতনের পথ। দিন দিন নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলেও হুমায়নের পরিবারের কাছে বিচার দাবি করেও প্রতিকার পায়নি স্ত্রী লাকি আক্তার। এমন কি খাদ্য বিভাগের কোন কর্মকর্তাও নির্যাতরেন খবর শুনে হুমায়নের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে দিন দিন হুমায়ন বেপরোয়া হয়ে উঠে। একপর্যায়ে স্ত্রীকে নির্দয়ভাবে নির্যাতন করে পিতার বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। স্ত্রীকে নির্যাতন করেও খ্যান্ত হয়নি লম্পট হুমায়ন। স্ত্রী ও শশুর বাড়ীর লোকজনকে জড়িয়ে কয়েকটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতে থাকেন। পরে লাকি আক্তার নিরুপায় হয়ে হুমায়নের বিরুদ্ধে বাকেরগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করলে দেড় মাস জেল খেটে জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকী দিচ্ছে।
অন্যদিকে হুমায়ুন কবির হাওলাদার দৌলতখান ও লালমোহন উপজেলা খাদ্যগুদামের উপ- সহকারী পরিদর্শক পদে দীর্ঘ দিন যাবৎ কর্মরত থেকে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে। এই হুমায়ন কবিরের বাড়ী বাকেরগঞ্জের পাদ্রীশীবপুর গ্রামে। তার পিতার নাম রুহুল আমিন হাওলাদার। হুমায়ন কবিরের নিজ এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাকুরীতে যোগদানের আগে থেকেই তার চরিত্র নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে গুঞ্জন ছিল। নারীঘটিত কয়েকটি ঘটনায় তার এলাকায় ব্যাপক সু-খ্যাতি ছড়িয়েছেন। নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনা নিয়ে বাবা রুহুল আমিন হাওলাদার সর্বদা ছিলেন অস্থীর । পরে বাবা রুহুল আমিন হাওলাদার খাদ্য বিভাগের এক কর্মকতার মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকা ঘুষের বিনিময়ে হুমায়ন কবিরকে খাদ্য বিভাগে চাকুরী পাইয়ে দেন। পিতা ভেবেছিলেন হুমায়ুন চাকুরীতে যোগদানের পরে ভাল হয়ে যাবে। কিন্তু হুমায়ন আরো বেপরোয়া ভাবে নারীদের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরে। এসব নিয়ে স্ত্রী লাকি আক্তার সাথে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকতো। এব্যাপারে হুমায়ন কবির জানান, তার স্ত্রীর সাথে কোন বিবেদ নেই । তারা মিলে মিশে সংসার করছেন। তাবে হুমায়নের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, হুমায়ন আমাকে নির্যাতন চালিয়ে আমার পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে। এমনকি আমি ও আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে এবং আমার মামলা তুলে নিতে হুমকী দিচ্ছে। বর্তমানে আমি ও আমার সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি ।