রবিবার ● ৯ আগস্ট ২০১৫
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » চাকরির প্রলোভনে ১৩ যুবককে ভারতে পাচার
চাকরির প্রলোভনে ১৩ যুবককে ভারতে পাচার
বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলার চরফ্যাশনের ১৩ যুবককে উচ্চ বেতনে গ¬াস কারখানায় কাজ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার করে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবী করছে পাচারকারী চক্ররা। ভারতে পাচার হওয়া পাচঁ যুবক পালিয়ে শনিবার রাতে চরফ্যাশনে পাচারের বর্ণনা দিয়েছেন।
পাচার হওয়া যুবকরা হলেন, উপজেলার আসলামপুর গ্রামের জলিলের ছেলে ইসমাঈল, জালাল আহমদের ছেলে রফিজল, হাসেম মিস্ত্রির ছেলে ফয়সাল, হানিফের ছেলে শাহাবুদ্দিন, হাবিবুল¬্যাহর ছেলে মিজান, মোহাম্মদ মিয়ার ছেলে কবির, জয়নাল আবেদীনের ছেলে জাফর, মৃত হারিচ আহমদের ছেলে অজিউল্যা, নুরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে নেছার উদ্দিন, ইউছুফ আলীর ছেলে লিটন, দুলার হাটের সোহেল, তোফায়েল, ও শশীভুষণের নুরনবী।
পাচার হওয়া এসব যুবকের মধ্যে আসলামপুর গ্রামের মো. অজিউল¬াহ ও মো. জাফর উল¬াহ ভারত থেকে পালিয়ে শনিবার চরফ্যাশনে ফিরে এসেছেন। এর আগে পালিয়ে এসেছেন নেছার উদ্দিন, লিটন ও নুরনবী।
পাচার কারীদের বন্দী দশা থেকে পালিয়ে আসা জাফর উল¬াহ ও অজিউল¬াহ জানান, উপজেলার আসলামপুর ৮নং ওয়ার্ডের চৌকিদার আব্দুর রব’র ছেলে জসিম ও খুলনার লুৎফর রহমান গ¬াস খারখানায় উচ্চ বেতনে চাকুরী প্রলোভন দিয়ে তৃতীয় রোজার দিন ১১ জনকে খুলনা নিয়ে যায়। খুলনা থেকে চোরাই পথে প্রথমে ভারতের সাগর পাড়ের দূর্গম এলাকায় নিয়ে যায় । সেখানে নেয়ার পর আমাদের অন্যের কাছে বিক্রি করে দেয়। যার কাছে বিক্রি করা হয় সে আমাদের দিয়ে সাগর পাড়ে টোকাইর কাজ করাতো। ঠিকমত খাবারও দিত না। বাড়িতে কথা বলার চেষ্টা করলে শারীরিক নির্যাতন করতো। এছাড়া জসিম ও লুৎফর আমাদের বাড়িতে ফেরত পাঠাতে পরিবারের কাছে মোবাইলে জন প্রতি ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপন চায়। আমাদের পাচারের আগে চরফ্যাশন থেকে একই ভাবে আরো দু’জনকে পাচার করেছিল।
বৃহস্পতিবার সুযোগ বুঝে স্থানীয় একজনের সহায়তায় ভারত থেকে দু’জন পালিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় চরফ্যাশনে পৌছি। কয়েকদিন আগে নেছারউদ্দিন, লিটন ও নুরনবী পালিয়ে দেশে ফিরলেও অন্যরা এখনো ভারতে পাচারকারীদের হাতে বন্দি আছে।
পাচার হওয়া জাফরের ভাই আ. মতিন জানান, ভারতে অবস্থানরত জসিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে জসিম প্রত্যেককে ফেরৎ দেয়ার বিনিময়ে ৩০ হাজার টাকা করে মুক্তিপণ দাবী করেন।
পাচার হওয়া ব্যক্তিদের ফেরৎ আনা নিয়ে দেনদরবারের মধ্যে বুধবার থেকে জসিমের স্ত্রী রুনা বেগম গ্রাম থেকে পালিয়ে গেছে বলে পাচারকারীদের পারিবারিক ভাবে অভিযোগ রয়েছে। ফলে স্বজনদের বাড়ি ফেরা নিয়ে পাচার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর মধ্যে অনিশ্চয়তা বেড়ে গেছে। এই ঘটনা সর্ম্পকে এখনো কোন অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল বাশার জানিয়েছেন, তবে পুলিশ খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবে এবং দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।। পাচার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সাথে কথা বলে জানাগেছে, স্বজনদের জীবন বিপন্ন হতে পারে এমন আশংকার কারণে তারা থানা পুলিশ করতে আগ্রহী হচ্ছেন না।