মঙ্গলবার ● ২১ জুলাই ২০১৫
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » চরফ্যাশনে মাদকের শক্তিশালী সিন্ডিকেটর নেপথ্যে প্রভাবশালীরা
চরফ্যাশনে মাদকের শক্তিশালী সিন্ডিকেটর নেপথ্যে প্রভাবশালীরা
আদিত্য জাহিদ :: চরফ্যাশনের যুব সমাজে মাদকের রমরমা ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের পৃষ্টপোষকতায়। এমন তথ্য পুলিশের কাছে থাকলেও পুলিশ মাদকের রাঘববোয়ালদের টিকিটি পর্যন্ত ছুঁতে সাহস পাচ্ছেনা। মাদক ব্যবসায় প্রভাববিস্তার সহ নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ইউনিয়ন যুবলীগের সম্পাদককে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা এবং চরফ্যাশন পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ৩ বছর যাবৎ নিখোঁজ রয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, চরফ্যাশনের মাদক ব্যবসায়ীরা খুলনা, বেনাপোল,বরিশাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম ও ঢাকার মাদক ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষকে মরণ নেশা ফেন্সিডিল, ইয়াবা, গাঁজা, নিরাপদে ব্যবসায়ীদের নিকট পৌছানের কৌশল অবলম্বন করে। মাঝে মাঝে পুলিশ অভিযান চালিয়ে চুনোপুটিকে আটক করলেও মূল হোতারা থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অনেকে মায়াবড়ি, সহ ঐ আকারের বিভিন্ন ট্যাবলেটে রং মিশিয়ে ইয়াবা হিসেবে বিক্রি করছে। চরফ্যাশন পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টের ছোট ছোট পাণ দোকানী,ভাসমান চা বিক্রেতারা মাদক উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের পাইকারদের নিকট পৌছে দেয়ার কাজ করে বলে বিশ্বস্থ সূত্র জানিয়েছেন। চরফ্যাশন পর্যন্ত মাদক পৌছানের জন্য ঘোষের হাট, বকসী ঘাট, বেতুয়া লঞ্চ ঘাট সহ প্রায়ই সড়ক পথও বেছে নেয় পাচারকারীরা। বিশেষ একটি সূত্র জানান, ১৫/২০দিন পর পর কুরিয়ার সার্ভিসকে ও নিরাপদ হিসেবে ব্যাবহার করে মাদক ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে বিভিন্ন উৎসবে এরা বেপরোয়া হয়ে পড়েন। উপজেলার নুরাবাদ ইউনিয়নে মোবাইল বাহিনী নামক একটি সংঘবদ্ধ দল রয়েছে। এদলটি খুলনা থেকে মাদক আমদানী করে এলাকার ছোট ছোট পাইকারদের কাছে পৌছে দেয়া সহ নিজেরাও সেবন করেন। একই এলাকার আরেক যুবলীগ লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য মুরাদ মাদক ব্যবসার প্রতিপক্ষ হওয়ার কারনে কিছু দিন আগে তাকে মোবাইল বাহিনী কুপিয়ে মারাতœক জখম করেছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। তবে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক বিরোধীতার কারনে মুরাদের সাথে হামলা ও জখমের কথা স্বীকার করেন। এছাড়া চরফ্যাশন পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল মোল্লা দীর্ঘদিন এব্যবসার সাথে জড়িত থাকার পর ভাগ ভাটোয়ারার দ্বন্ধে ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর রাতে ২ নং ওয়ার্ডের নিজ বাসা থেকে বের হয়ে আজও ফিরেনি। জামাল মোল্লা গুমের বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ জামালের মাদক পার্টনারদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরও হদিস মেলেনি। ইতিপূর্বে নিখোঁজ জামাল মোল্লার পরিবারকে (তৎকালীন এমপি) বর্তমান পরিবেশ ও বন উপ-মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব ১ লাখ টাকা অনুদানও দিয়েছেন। চরফ্যাশন, শশীভূষণ ও দক্ষিণ আইচা থানার দুরবর্তী ইউনিয়নের নদীর ঘাট গুলোতে মাদকের রমরমা বাণিজ্য রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে ভিন্নমত পোষণ করে জানান, মাদক ব্যাবসায়ীদের শক্তিশালী সিন্ডিকেটের সাথে পাল্লা দেওয়ার মত সাহস কারো হয়নি। পুলিশ মাঝে মাঝে আইওয়াশের জন্য অভিযান পরিচালনা করে চিহ্নিত এসকল রাহবারকে সামান্য পরিমান গাঁজা সহ আটক করে নিজেদের দায় এড়িয়ে চলার গুঞ্জণ রয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান এক মতবিনিময় সভায় মাদক বিরোধী অভিযানে তৎপরতা বৃদ্ধি করার নির্দেশ দিলেও তা লালফিতায় বন্দি রয়েছে সভায় অংশ গ্রহণকারীরা মতপোষণ করেন।