সোমবার ● ৫ আগস্ট ২০১৯
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » এবার পরিষদে নাগরিকদের রড দিয়ে পেটালেন লাঠি চেয়ারম্যান কামরুল!
এবার পরিষদে নাগরিকদের রড দিয়ে পেটালেন লাঠি চেয়ারম্যান কামরুল!
স্টাফ রিপোর্টার: এবার বোরহানউদ্দিনের টবগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল আহসান চৌধুরী বিরুদ্ধে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউপি ভবনে ৫ নাগরিকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই চেয়ারম্যানকে ইউপি ভবনে ঘেরাও করে অবরুদ্ধ করে রাখেন। রবিবার বিকালে টবগী ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে সদরে নিয়ে আসেন। আহতর মধ্যে জুয়েল, খসরু ও জুনায়েদকে নাম জানা গেলেও অন্যদের নাম জানা যায়নি।
টবগী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সফি আলম এর ছেলে আহত জুয়েল অভিযোগ করেন, গত ১৭ জুলাই জন্মনিবন্ধন কার্ডের জন্য তিনি পরিষদে দু’শত টাকা জমা দেন। সচিব তাকে ২৭ শে জুলাই পরিষদে যেতে বলেন। কিন্তু তিনি তার পর থেকে পরিষদে একাধিক বার গিয়ে জম্ম নিবন্ধন কার্ড পাননি।
রবিবার দুপুরে আবারো এসে কার্ড না পেয়ে তিনি চৌকিদারকে ঘুরাঘুরি না করে তার কার্ডটি করে দিতে বলেন। এ সময় চৌকিদারের সাথে কথার কাটা কাটি হলে ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে জামার কলার ধরে উপরে নিয়ে গাবের লাঠি ও রড দিয়ে এলোপাথাড়ি ভাবে মারধর করেন।
৫নং ওয়ার্ডের দালালপুর গ্রামের ফখরুল আলম এর ছেলে প্রবাসী খসরু অভিযোগ করেন, তিনি জন্মনিবন্ধন কার্ড অনুসারে পাসপোর্ট করে আড়াই বছর সৌদি ছিলেন। বর্তমানে ভোটার হওয়ার জন্য দেশে আসেন। ভোটার হলে চাইলে চেয়ারম্যান তাকে বলেন, অনলাইনে জন্মনিবন্ধন করতে হবে। তখন তিনি বলেন, আমার জন্মনিবন্ধন করা আছে। পার্সপোর্টের সাথে সঙ্গতি রেখে ওটা দিয়েই আমি ভোটার হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোট দিব। তার সাথে দ্বিমত পোষণ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান কামরুল হাসান তাকেও রড দিয়ে বেদরক মারধর করে আহত করে।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, আমার পর জুনায়েদসহ আরও একাধিক ব্যক্তিকে ইউপি চেয়ারম্যান পিটিয়ে আহত করেন।
পরে বিক্ষুব্দ জনতা সংবদ্ধ হয়ে চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করলে পরিষদের চৌকিদার ও স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে সংর্ঘষ বেধে পরে। পরে পুলিশ এসে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ইউপি চেয়ারম্যান সাথে এলাকার লোকজন ভালোমন্দ কথা বলতে পারেন না তারা। সব সময় মাদকাসক্তদের মত উত্তেজিত থাকেন চেয়ারম্যান। তিনি পরিষদে লাঠি ও রড রাখেন। লাঠি দিয়ে বিচার করেন চেয়ারম্যান। তাই আমারা তাকে লাঠি চেয়ারম্যান নামে চিনি। কেউ তার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করলেই সেকি নারী না শিশু না দেখে তাকে মারধর শুরু করেন।
তারা আরো অভিযোগ করেন, কিছু দিন আগেই স্বামী স্ত্রীর পারিবারিক দন্দ্ব নিয়ে চেরম্যানের কাছে পরিষদের বিচারের জন্য আসেলে ওই নারীকে বেদরক লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন চেয়ারম্যান কামরুল।
এব্যাপারে অভিযুক্ত টবগী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুল হাসান নাগরিকদের উপর হামলার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, জম্মনিবন্ধন নিয়ে চৌকিদারদের সাথে হাতাহাতি হয়েছে। তখন আমি বভনের ২ তলায় ছিলাম। অরেক নারীকে মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন ওই নারী অপরাধী সাবস্ত্য হওয়ার তার বড় দেবর তাকে শাস্তি দিয়েছে। বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল কাদের বলেন, ইউপি ভবনের রড ভাঙ্গা দেখলাম। চেয়ারম্যান অনলাইনে নিবন্ধন করা নিয়ে স্থানীয় কিছু লোকসহ এক প্রবাসীকে মারধর করেছে বলে শুনেছি।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা খাতুন রেখা বলেন , অভিযোগকারীদের বক্তব্য ও সরেজমিন পরিদর্শনে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন,নতুন ভোটার অন্তভূক্তির জন্য আসা লোকজনের সাথে চেয়ারম্যান কামরুল হাসান যে ঘটনা ঘটিয়েছে এটা তার চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। উনি সব সময় মানুষকে গালিগালাজ করে থাকেন এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করেন। তার দ্বারা সৃষ্ঠ এ অমানবিক কাজের জন্য আমি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে নিন্দা প্রকাশ করছি।
-এফএইচ