রবিবার ● ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন » চরফ্যাশনে হারবাল চিকিৎসা নামে চলছে অপচিকিৎসা
চরফ্যাশনে হারবাল চিকিৎসা নামে চলছে অপচিকিৎসা
এম আমির হোসেন, চরফ্যাশন প্রতিনিধি: চরফ্যাশন উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলের জনপদে ইউনানী-আয়ুর্বেদ, ভেষজ, হারবাল ও কবিরাজি দাওয়াখানা চিকিৎসার নামে চলছে প্রতারণা ও টাকা হাতিয়ে নেয়ার অপকৌশল। নিরিহ সহজ-স্বরল অসহায় মানুষ তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় প্রচুর অর্থ। এসব বিষয় গুলো দেখার যেন কেউ নেই। এসকল ভূয়া চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো বন্ধে সরকারি কোন সংস্থা উদ্যোগ নিচ্ছেনা।
সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কথিত হারবাল সেন্টারগুলোতে চিকিৎসা নিয়ে রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া দূরের কথা, উল্টো অপচিকিৎসার শিকার হয়ে শারীরিকভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে ভুক্তভোগীরা। এ ধরনের হারবাল চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছে কতিপয় ব্যক্তি ও প্রায় অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান।
এলাকার অলিগলির গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রচারপত্রে এসব চিকিৎসক যৌন দুর্বলতার চিকিৎসার নামে পুরুষ ও মহিলাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা প্রথমেই হরেক রকমের বাহারি চকচকে বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে লোভে ফেলার অপচেষ্টা চালায়।
চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাট, হাজিরহাট, বাংলাবাজার, মুন্সিরহাট, চৌমহনী বাজার, একতা বাজার, শিবারহাট, মৌলভী বাজার, জনতা বাজার, মুখারবান্দা, লেতরা বাজার, চেয়ারম্যান বাজার, কেরামতগঞ্জ, ঢালিরহাট, শেমগঞ্জ, গাছিরখাল বাজার, আঞ্জুরহাট, দাশেরহাট, কাজল বাজার, নজির মাঝির হাট, গুলিস্থান বাজার, রৌদ্রেরহাট, মতলবমিয়া বাজার, চৌকিদার বাজার, মাঝিরহাট, উত্তর আইচা, দক্ষিণ আইচা, ঢালচর বাজার, কুকরী-মুকরী বাজার। এই সকল বাজার গুলোতে ছোট-বড় প্রায় অর্ধশতাধিক হারবাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার নামে চলছে সাধারণ মানুষকে হয়রানী।
এদিকে কথিত হারবাল সেন্টারগুলো ওষুধ প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে মহৌষধের দোকান খুলে বসে আছে। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা চিকিৎসালয়ের সংখ্যা কত? ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া এধরনের কতগুলো প্রতিষ্ঠান-ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে? এ বিষয়ে কোন পরিসংখ্যান নেই ওষুধ প্রশাসন বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে। এর পরেও সব রোগের চিকিৎসা গ্যারান্টি সহকারে, স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে, কু-রুচিপূর্ণ প্রচারপত্র বিলি করে ও ক্যাবল টিভিতে বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রামীণ জনপদের এক শ্রেণীর হতাশাগ্রস্থ ও দিশেহারা সহজ-সরল মানুষদের কাছে মোট অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
দক্ষিণ ফ্যাসন গ্রামের আলমগীর হোসেন সরমান জানান, আমি হারবাল ওষুধ খেয়ে নানান সমস্যার সম্মুখিন হয়েছি। পরে ঢাকা গিয়ে চিকিৎসা করতে হয়েছে।
চরমাদ্রাজ গ্রামের আয়শা বেগম বলেন, আমি মোটা হওয়ার ওষুধ খেয়েছিলাম। পরে আমার শরীরের পানি জমে গেছে। আমি বরিশাল গিয়ে ডাক্তার দেখানোর ফলে ডাক্তার বলেছেন আরো পরে আসলে কিডনীতে বড় ধরণের সমস্যা দেখা দিত। দীর্ঘ ৫ মাস ওষুধ খেয়ে ভাল হয়েছি।
ভোলা জেলা ড্রাগ সুপার জসিম উদ্দিন বলেন, চিকিৎসার ফার্মেসী দিতে হলে সরকারি ভাবে ড্রাগ লাইসেন্স প্রয়োজন। চরফ্যাশন হারবাল চিকিৎসালয় কোন ড্রাগ লাইসেন্স নেই। কয়েকটি হারবাল ফার্মেসীকে বারবার তাগিত দেয়া হয়েছে।
চরফ্যাশন সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শোভন বসাক বলেন, হারবাল চিকিৎসার কোন বৈধতা নেই। অনেক রোগীর জীবন শেষ করে দেয়া হয়। হারবালের ওষুধ সেবন করে ক্ষতি সাধিত অনেক রোগের চিকিসা আমি করেছি। এ বিষয় গুলোর প্রতি সরকারের দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
-এফএইচ