শনিবার ● ৭ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » অপরাধের স্বর্গরাজ্য চরফ্যাশন
অপরাধের স্বর্গরাজ্য চরফ্যাশন
বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ২১ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বৃহৎ এলাকা বর্তমানে অপরাধীদের নিরাপদ অভয়ারণ্য হিসেবে স্বর্গরাজ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সন্ধ্যা নামতেই পাল্টে যায় চরফ্যাশনের আসল চেহারা। বিভিন্ন অলিগলি, খোলা মাঠ, স্কুল, মাদ্রাসার ছাদ, নবনির্মিত পার্কের পার্শ¦বতী রাস্তা মাদক সেবনের নিরাপদ স্পট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া নজরুল নগর ইউনিয়ন থেকে জুয়ারীদের আটক করে অর্থ বাণিজ্য করার অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। স্কুল ছাত্র থেকে যুবকরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের খাতায় বড় বড় নেতাদের নামের তালিকা থাকলেও তারা অধরা হিসেবে রয়েছে। বিয়ষটি ওপেনসিক্রেট হলেও মামলা, হত্যা, গুম, হওয়ার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেনা।
অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেড়িয়ে এসেছে। ইয়াবা, মাদক, ধর্ষণ, স্কুল ছাত্রীকে বিস্কুট দেওয়ার নামে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে নৈশ প্রহরী কাম দপ্তরী তার কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ, অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে স্বামী-স্ত্রী একই রশিতে গলায় ফাসঁ দিয়ে আত্মহত্যা, গৃহবধূর আত্মহত্যা, বিষপাণ, জমি-জমা বিরোধকে কেন্দ্র করে লাঠিয়াল বাহিনী ভাড়া করে এনে জোর পূর্বক জমি দখল, সংরক্ষিত বনের গাছ কেটে পারিবাবিক ও রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার, প্রভাব খাটিয়ে মাদ্রাসায় চাকুরী নিয়ে বেতনভাতাদি ভোগ করলেও মাদ্রাসায় হাজির হননা, চরফ্যাশনে এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। উপজেলার ৩টি থানার আওতায় আরো ৩টি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থাকলেও পুলিশের উপর এসব অপরাধীরা মরিচের গুড়া মেরে পিটিয়ে আহত করে অপরাধীরা পালিয়ে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটছে। হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেন। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি শশীভূষণ থানার জোর মসজিদ এলাকা থেকে পুলিশ গাঁজা সহ পারুল বেগমকে গ্রেফতার করলেও তার স্বামী ইয়াবা ব্যবসায়ী ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে।
চরফ্যাশন থানা পুলিশ জানান, নীলকমল ইউনিয়নের চর যমুনায় মাদক ব্যবসায়ী শাহিনকে পুলিশ গ্রেফতারের পর পুলিশের উপর মরিচের গুড়া মেরে, কামড়িয়ে হাতকড়া পড়া অবস্থায় আসামী ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এতে সহকারী ইন্সপেক্টর তারিকুল ইসলাম, গোবিন্দ, হাবিব, এএসআই শামিম, ও কনেস্টবল পলাশ আহত হয়। পুলিশ বাদী হয়ে ২৮ জনকে জ্ঞাত এবং ৪০/৫০ জনকে অজ্ঞাত করে মামলা নং ৭ তারিখ ৬/৯/১৬ ইং দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত শাহিনকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ এবিষয়ে মুহাম্মদ এনামূল হক বলেন, শাহিনের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য আইনে মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ সে পলাতক ছিল। সংবাদ পেয়ে আটক করতে গেলে পলিশের উপর হামলা চালিয়ে আবার পালিয়ে যায়।
সম্প্রতি শশীভূষণ থানা পুলিশের অভিযানে এক মহিলা মাদক ব্যবসায়ী আটক হয়েছে। এস,আই গোলাম মাওলা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী কামালের স্ত্রী পারভীন ওরফে নূরতাজকে আটক করা হয়। এসময় নূরতাজের কাছে ১২ পিচ ইয়াবা ও ৭০০ গ্রাম গাঁজা পাওয়া যায় বলে তিনি জানান। স্থানীয়রা জানান, আটক পারভীন বেগম রুবেলের মাদকের পাইকার। এঘটনায় মাদক আইনে মামলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উপজেলার তিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, আমরা মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্ছার আছি। তথ্য পেলেই অভিযান পরিচালনা করি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ আমদানীকারকদের গডফাদাররা সবসময় ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থাকে। এদেরকে আটক করতে পারলে মাদকের আমদানী বন্ধ সহ বিভিন্ন অপরাধ কমে যেতে পারে।
-এএমটি/এফএইচ