বৃহস্পতিবার ● ১৮ জুন ২০১৫
প্রথম পাতা » আইন ও অপরাধ » মাদকে ভাসছে তজুমদ্দিন: স্বামী-স্ত্রীসহ তিন গাঁজা বিক্রেতা আটক
মাদকে ভাসছে তজুমদ্দিন: স্বামী-স্ত্রীসহ তিন গাঁজা বিক্রেতা আটক
তজুমদ্দিন প্রতিনিধি:: ভোলার তজুমদ্দিনে গাঁজা ও ইয়াবা বিক্রির হাটে পরিণত হয়েছে। উপজেলা শহরের সব অলি গলি থাকে এখন মাদক সেবীদের দখলে। স্কুল কলেজের অনেক ছেলেরা মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ায় শঙ্কিত অভিবাবক মহল। একাধিক চক্র এসব মাদক বিভিন্ন জায়গা থেকে এনে ছড়িয়ে দিচ্ছে গ্রাম গঞ্জে। গত কয়েক সপ্তাহে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন মাদক নির্মুলে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করছে। বৃহস্পতিবার তজুমদ্দিনের চিহ্নিত দুই গাঁজা বিক্রেতা ও এক সেবনকারীকে পুলিশ আটক করে মামলা দিয়েছে। কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে মাদকের মূল হোতারা।
তজুমদ্দিন থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) উহাব সরকার জানান, বুধবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুঞ্জেরহাট এলাকার গোপাল চ্যাটার্জির ছেলে স্বপণ চ্যাটার্জি ১শ গ্রাম গাঁজা নিয়ে কুঞ্জেরহাট যাওয়ার সময় ফকিরহাট থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। তার তথ্য মতে পুলিশ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার লামছি সম্ভুপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ’র ছেলে আলাউদ্দিন (৪০) ও তার স্ত্রী ইয়ানুরকে (৩০) কে আরো ২৫০ গ্রাম গাঁজাসহ করিম বেপারী বাড়ি থেকে হাতে নাতে আটক করে। আলাউদ্দিন ও তার স্ত্রী ইয়ানুর বেগম দীর্ঘদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গাঁজা সরবরাহ করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া স্বপন চ্যাটার্জি সেবনকারী হওয়ায় তাকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা একমাসের কারাদন্ড দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম হতে লক্ষ্মীপুরের আলেকজান্ডার হয়ে লঞ্চে তজুমদ্দিনের বিভিন্ন স্পটে নিয়মিত ইয়াবা ও গাঁজা পরিবহনের নিরাপদ রুট হিসেবে বেঁছে নেয় মাদক ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও কুঞ্জেরহাট ও লালমোহন উপজেলার কয়েক জন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী পাইকারী মূল্যে গাঁজা পৌছে দেয় তজুমদ্দিনের চিহ্নিত গাঁজা ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন ও তার স্ত্রী ইয়ানুরের কাছে। তারা ছোট ছোট পুরিয়া হিসেবে বিক্রি করছে সেবন কারীদের কাছে। অপর একটি চক্রের মাধ্যমে ইয়াবা ট্যাবলেটও এখানকার হাট বাজারে সহজ লভ্য। ভোলা সদর ও লক্ষ্মীপুর হয়ে একাধীক চক্র স্থানীয় কয়েক হোতার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এই মরণ নেশা। পরে এসব মাদক হাত বদল হয়ে চলে যায় উপজেলার গ্রাম গঞ্জে। সন্ধ্যারপর অলি গলিগুলো দখল করে নেয় এসব মাদক সেবন কারীরা। ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করে স্কুল মাদ্রাসা ও কলেজের ছাত্রীদের আসা যাওয়ার পথে যৌন হয়রানীও করছে তারা, এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। গত ১৫ জুন মাদকের টাকা না পেয়ে উপজেলার সদর রোডের মিলন (২৫) নামের এক সংখ্যালঘু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছে ১০ হাজার চাঁদা দাবী করে না পেয়ে চার মাদক সেবী তাকে নির্যাতন করে হাসপাতালে পাঠায়। পরে হুমকি ধামকি দেয় হাসপাতাল থেকে চলে যেতে। ওই ব্যবসায়ী বর্তমানে দোকান বন্ধ করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই দিন নেশার টাকা না পেয়ে মাদকাসক্ত ছেলের হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন শশীগঞ্জ গ্রামের চিংড়ি ব্যবসায়ী শাহজাহান। এব্যাপারে তজুমদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির জানান, তজুমদ্দিনের মাদকের সিন্ডিকেটি ধরার জন্য অনেকদিন ধরে পুলিশ চেষ্টা করে যাচ্ছে। ইয়াবার সিন্ডিকেটটিও আটকের চেষ্টা চলছে। এখানে কোন মাদক থাকবেনা বলেও ওসি জানান। উপজেলা চেয়ারম্যান অহিদ উল্যাহ জসিম জানান, উপজেলার আইন শৃঙ্খলার সভায় মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বারবার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। মাদকের কোন অভিযোগ পেলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবেনা।