সোমবার ● ১২ জুন ২০১৭
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন » চরফ্যাশনে নির্মিত উপ-মহাদেশের সর্বোচ্চ ওয়াচ টাওয়ার উদ্বোধনের অপেক্ষায়
চরফ্যাশনে নির্মিত উপ-মহাদেশের সর্বোচ্চ ওয়াচ টাওয়ার উদ্বোধনের অপেক্ষায়
ফরহাদ হোসেন • ভোলার পর্যটন সম্ভাবনাময় চরফ্যাশন উপজেলায় নির্মিত হওয়া উপ-মহাদেশের সর্বোচ্চ ওয়াচ টাওয়ার উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। পৌর শহরের খাসমহল মসজিদ ও ফ্যাশন স্কয়ারের পাশে ২১৫ ফুট উঁচু এ টাওয়ারটি নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ করা হয়েছে। চলতি বছরের আগস্ট মাসে টাওয়ারটি উদ্বোধন করার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গেছে, ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপির উদ্যোগে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ তলা বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন এ টাওয়ারটি পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। টাওয়ারটিতে লিফটের সংযোজনও রয়েছে, রয়েছে উচ্চ ক্ষমতার বাইনোকুলার, যাতে ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকার সকল কিছু দেখা যাবে অনায়াসে। সে লক্ষে ইতোমধ্যে টাওয়ার সংলগ্ন স্থানেই ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে পর্যটকদের জন্য অত্যাধুনিক বিলাসবহুল রেস্ট হাউসও নির্মাণ করা হচ্ছে। এই ওয়াচ টাওয়ারে দাঁড়ালেই পশ্চিমে তেঁতুলিয়া নদীর শান্ত জলধারা, পূর্বে মেঘনা নদীর ঢেউ, দক্ষিণে চর কুকরি-মুকরিসহ বঙ্গোপসাগরের বিরাট অংশ নজরে আসবে।
চরফ্যাশন পৌর প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী জানান, ৭৫ ফুট মাটির নিচ থেকে ৭০টি পাথর ঢালাই পাইলিং ফাউন্ডেশনের ওপর নির্মিত টাওয়ারটি সম্পূর্ণ স্টিলের তৈরি। ৮ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয় ওই টাওয়ারের চূড়ায় ওঠার জন্য সিঁড়ির পাশাপাশি রয়েছে ১৬ জন ধারণ ক্ষমতার অত্যাধুনিক ক্যাপসুল লিফট। এক হাজার বর্গফুটের ১৭তম তলায় বিনোদনের নানা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। একসঙ্গে দুই শত পর্যটক সেখান থেকেই শক্তিশালী বাইনোকুলারের সাহায্যে চর কুকরি-মুকরি, তাড়ুয়া দ্বীপসহ চারপাশের একশত বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত দেখতে পাবেন। এ ছাড়াও ব্যবস্থা করা হয়েছে বিশ্রাম, প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাবারের সু-ব্যবস্থা।
তিনি আরো জানান, চরফ্যাশনের টাওয়ারটির মূল উচ্চতা ১৮৫ ফুট। এর ওপর রয়েছে ৩০ ফুট দীর্ঘ সুদৃশ্য ফলক। ঢাকার কারওয়ান বাজার হাসনা টাওয়ারের আর্কিটেক্ট ফোরাম নামের একটি প্রতিষ্ঠান ওই প্রকল্পের কনসালটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।
চরফ্যাশন পৌরসভার মেয়র বাদল কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পৌরসভার খাসমহল মসজিদ ও ফ্যাশন স্কয়ার সংলগ্ন জ্যাকব টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। টাওয়ারটির ডিজাইনার হচ্ছেন বিশিষ্ট স্থপতি কামরুজ্জামান লিটন। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এর কাজ শুরু হয়। এরিমধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষ অথবা আগস্টের প্রথম দিকে এটি উদ্বোধন করার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, বিশ্বখ্যাত আইফেল টাওয়ারের আদলে নির্মাণ করা হচ্ছে এই ওয়াচ টাওয়ার। এটি চরফ্যাশন উপজেলাসহ ভোলাবাসীকে আলাদা পরিচিতি দেবে বলে আশা করছি।
সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা চরফ্যাশনের প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগাতে পারলে শুধু বাংলাদেশই নয়, বিদেশ থেকেও বহু পর্যটক এখানে আসবে। পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে সরকারও এখান থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে পারবে বলে মনে করছে এখানকার মানুষ।
-বিএস