মঙ্গলবার ● ৬ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন » ভোলায় হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চলছে অর্ধশত ডেন্টাল কেয়ার, ভোগান্তিতে রোগীরা
ভোলায় হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চলছে অর্ধশত ডেন্টাল কেয়ার, ভোগান্তিতে রোগীরা
স্টাফ রিপোর্টার: ভোলার সাত উপজেলায় প্রায় অর্ধশত ডেন্টাল রয়েছে যে খানে নেই কোন লাইসেন্সধারী বা রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তার, টেকনিশিয়ান ও বৈধ কাগজপত্র। গ্রাম্য হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চলছে এ প্রতিষ্ঠান। এতে করে রোগীরা হয়রানির শিকার ও চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। এসকল প্রতিষ্ঠানগুলো প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
চরফ্যাশন উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্র হাসপাতাল রোডে অবস্থিত এ অবৈধ মদিনা ডেন্টাল কেয়ার। এই ডেন্টাল কেয়ারের নেই কোনো লাইসেন্সধারী বা রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তার ও টেকনিশিয়ান। নেই কোন বৈধ কাগজপত্র। গ্রাম্য হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চলছে এ প্রতিষ্ঠান। এতে কওে রোগীরা হয়রানির শিকার এবং চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। প্রশাসন এসব দেখেও না দেখার ভান করছে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে এ অবৈধ মদিনা ডেন্টায় কেয়ার। অবৈধ মদিনা ডেন্টাল কেয়ারের মালিক শাজাহান নামে মাত্র একজন হাতুরে ডেন্টাল। তিনি প্রায় কয়েক বছর যাবত লাইসেন্সবিহীন এ অবৈধ মদিনা ডেন্টাল কেয়ার পরিচালনা করে সাধারণ রোগীদের সাথে প্রতারণা করছেন। বছর দুই আগে নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট মদিনা ডেন্টাল কেয়ার সিলগালা করে মালিক হাতুরে ডেন্টাল শাজাহানের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এরপরও থেমে নেই তার অপচিকিৎসা।
এই হাতুরে ডেন্টাল শাজাহান চরফ্যাসনের গ্রাম্য সহজ সরল কৃষক, দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষকে ধোঁকা দিয়ে ডাক্তার নামে বিভিন্ন ভুয়া ডিগ্রী লাগিয়ে সাইনবোর্ড, ব্যানার ও ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে ডেন্টাল সার্জন সেজে দাঁতের চিকিৎসার নামে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে যাচ্ছেন। এ প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকদের কোনো লাইসেন্স নেই। এমনকি কোনো আবেদনও করেননি লাইসেন্সের জন্য। চিকিৎসক হিসেবে কোন রকম পাশ কওে কোনো ডাক্তারের সঙ্গে কাজ করেছে মর্মে এখানে এসে ডাক্তার সেজে কাজ করছেন।
বিডিএস পাশ করা ছাড়া কোনো লোক ডেন্টাল সার্জন লিখতে পারবে না। অথচ তিনি প্রতিষ্ঠানের মালিক ডেন্টাল সার্জন দাবি করে চিকিৎসাপত্র ও চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। যোগ্যতা ছাড়াই সে বছরের পর বছর অপচিকিৎসা দিয়ে আসছেন। এসব ভুয়া চিকিৎসক রোগীর দাঁতের স্ক্যানিং, দাঁতের ফিলিং,দাঁত তোলা, দাঁত বসানোসহ দাঁতের নানা রোগের চিকিৎসার নামে হয়রানি করে টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন। এসব জায়গায় এসে রোগীরা না জেনে চিকিৎসা নিয়ে বিপদে পড়েন। পরে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয় তাদের।
জানা গেছে, এদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামও নেই। এ সকল ভুয়া চিকিৎসক ডাক্তারের সঙ্গে ২ মাস হেলপারের কাজ করে এখন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানান। শুধু মদিনা ডেন্টাল নয় ভোলার সাত উপজেলায় প্রায় অর্ধশত ডেন্টাল রয়েছে যে খানে নেই কোন লাইসেন্সধারী বা রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তার, টেকনিশিয়ান ও বৈধ কাগজপত্র। গ্রাম্য হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চলছে এ প্রতিষ্ঠান। এতে করে রোগীরা হয়রানির শিকার ও চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন।
ভোলা জেলা সির্ভিল সার্জন ডা. রথিন্দ্রনাথ মজুমদার জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা ডেন্টাল কেয়ারের ও নন ডিগ্রিধারী ডেন্টাল ডাক্তারদের তালিকা তৈরী কওে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সহযোগিতায় নিয়ে নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেএম/এফএইচ