বৃহস্পতিবার ● ২৪ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন » ভোলায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে অবৈধ ডেন্টাল কেয়ার
ভোলায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে অবৈধ ডেন্টাল কেয়ার
বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলার সদর উপজেলা সহ ৭ টি উপজেলার বাজারে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক অবৈধ ডেন্টাল কেয়ার। এসব প্রতিষ্ঠানে কোনো লাইসেন্সধারি বা রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তার ও টেকনিশিয়ান নেই। নেই কোন বৈধ কাগজপত্র। গ্রাম্য হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চলছে এসব প্রতিষ্ঠান। এতে করে সাধারণ রোগীরা হয়রানির শিকার এবং চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। প্রশাসন এসব দেখেও না দেখার ভান করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলা সদরে ২০টির মত অবৈধ ডেন্টাল কেয়ার গড়ে উঠেছে। এছাড়া বিভিন্ন হাট-বাজারে ব্যাঙের ছাতার মতো অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্রায় ৮০ টি ডেন্টাল কেয়ার নামের ভুয়া প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গড়ে উঠেছে চরফ্যাসন উপজেলার হাসপাতাল রোডে। এখানে প্রায় ১০/১২টি অবৈধ এবং লাইসেন্সবিহীন ডেন্টাল কেয়ার রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে হরদমে দাঁতের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এর মধ্যে গ্রাম্য কৃষক, দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষকে ধোঁকা দিয়ে ডাক্তার নামে বিভিন্ন ভুয়া ডিগ্রী লাগিয়ে সাইনবোর্ড, ব্যানার ও ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে কেউ বা ডেন্টাল সার্জন সেজে দাঁতের চিকিৎসার নামে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে যাচ্ছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকদের কোনো লাইসেন্স নেই। এমনকি কোনো আবেদনও করেননি লাইসেন্সের জন্য। অনেক চিকিৎসক ৮ম শ্রেণি থেকে এসএসসি পাশ করে কোনো ডাক্তারের সঙ্গে কাজ করেছে মর্মে এখানে এসে ডাক্তার সেজে কাজ করছেন।
বিডিএস পাস করা ছাড়া কোনো লোক ডেন্টাল সার্জন লিখতে পারবে না। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক ডেন্টাল সার্জন দাবি করে চিকিৎসাপত্র ও চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। যোগ্যতা ছাড়াই এরা বছরের পর বছর অপচিকিৎসা দিয়ে আসছেন। এসব ভুয়া চিকিৎসক রোগীর দাঁতের স্ক্যানিং, দাঁতের ফিলিং,দাঁত তোলা, দাঁত বসানোসহ দাঁতের নানা রোগের চিকিৎসার নামে হয়রানি করে টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন। এসব জায়গায় এসে রোগীরা না জেনে চিকিৎসা নিয়ে বিপদে পড়েন। পরে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয় তাদের। এদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামও নেই। এ সকল ভুয়া চিকিৎসক ডাক্তারের সঙ্গে ২ মাস হেলপারের কাজ করে এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানান।
চরফ্যাশনের নাছরিন নামের এক মহিলা বলেন, দাঁত পোকায় ধরেছে বলে মাঝে মাঝে ব্যথা অনুভব হয়। তাই চরফ্যাসন হাসপাতাল রোডের ডেন্টাল কেয়ারের ডাক্তারের কাছে গেলে আমার দাঁতটি উঠিয়ে ফেলে, এখন আমার অন্যান্য দাঁতেও সমস্যা হয়েছে, মুখ দিয়ে ঠিকমত খেতে পারছি না। এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমি মূলত পলী চিকিৎসক, তাই এলাকার গরিব রোগিরা আসে, ফলে দাঁতের চিকিৎসাও করে থাকি, তবে ২/১টি চিকিৎসায় ভুল হতে পারে।
জেলা সির্ভিল সার্জন রথিন্দ্রনাথ দত্ত ভোলার সংবা ডট কম কে বলেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধ ভাবে গড়ে ডেন্টাল কেয়ারের ও নন ডিগ্রি ডাক্তারদের তালিকা তৈয়ার করে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সহযোগিতায় নিয়ে মোবাইলকোর্টের মাধ্যমে তাদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেএস/এফএইচ