শুক্রবার ● ২৮ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন » ভোলায় ভিক্ষুকদের সংখ্যা বাড়ছে, তাদের ভাগ্যে জুটেনি ১০ টাকা চালের কার্ড
ভোলায় ভিক্ষুকদের সংখ্যা বাড়ছে, তাদের ভাগ্যে জুটেনি ১০ টাকা চালের কার্ড
এম আমির হোসেন, চরফ্যাশন : ভোলায় ভিক্ষাবৃত্তি ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৌর শহর ও গ্রাম গঞ্জের হাট বাজারে অহর অহর তাদের দেখা মিলছে। এক হাতে পেলাস্টিকের ব্যাগ অন্য হাতে বাটি বা থালা। কেউবা স্বামী,সন্তান ও সংসারে কামায় উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায় জীবিকার তাগিদে এই পথ সহজে বেঁেচ নিচ্ছেনা। দেশে একের পর এক উন্নয়ন হচ্ছে। সরকার আসে, সরকার যায় কিন্তু তাদের ভাগ্যেও পরিবর্তন আসে না। বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও তারা অনেকটা সুবিধাবঞ্চিত। সমাজেও তারা অনেকটা অবহেলীত। দরিদ্র ও হতদরিদ্রদের জন্য সরকারের দেয়া বয়স্ক ভাতা, বিধাব, পঙ্গু ভাতা সহ এমনকি ১০ টাকা মূল্যের চালের তালিকায় তাদের নাম উঠে না। কয়েকটি স্পটে গিয়ে ২০ জন ভিক্ষুকের মধ্যে জরিপ চালিয়ে এমন তথ্য ফুটে উঠেছে।
সরেজমিন পরিদর্শন করে একাধিক ভিক্ষুকরা জানান, আমরা শুধু ভিক্ষায় করে যাচ্ছি। আমাদের জন্য সরকারের দেয়া বয়স্ক ভাতা, বিধাব, পঙ্গু এমনকি সরকারের ১০টাকা মূল্যের চালের তালিকায় জোটেনা। চেয়ারম্যান-মেম্বারা তারা মুখ দেখে তাদের আত্মীয় স্বজন সহ ধনীদের দেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বিধাব ভিক্ষুক তার ভাষা বলেন, ‘আই আংঙ্গ লেম্বারকে বিধবার নাম দিতে কইলে লেম্বার আর কাছে ৩ হাজার টিয়া চায়। আই ৩ হাজার টিয়া ও দিতে হারিনা আর নাম ও অয়না’।
চরফ্যাশন পৌর শহরে ভিক্ষা করতে আসা আছুরা জানান, আর বাড়ী আসলমাপুর ৪নং ওয়ার্ডে। আর স্বামী হঙ্গু সামছল হক। আর স্বামী লুজ হয়ে গেছে। হের পরেও আই ১০ টাকা ধরের চাইল খাইতাম পাইনা। লেম্বরেরা আর কাগজ হত্র কিছুই নেয়না। ভালা ভালা মাইনসেতে হুনসী ১০ টিয়া সরকার চাইল বেইচবো। আই খুশি হয়ছি ১ মন চাইল কিনুম। এহন আর নাম নেয়না।
এব্যাপারে ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আঃ হাই জানান, ভিক্ষুকেরা ভিক্ষা করাই তাদের অভ্যাস। তাদেরকে দিলেও তারা বলে পাইনা, খাইনা। আমার ওয়ার্ডের তো অনেক লোক সেই ভিক্ষুক পায়নি এটা আমার জানা নেই।
ভিক্ষা করার সময় জানতে চাইলে নীল কমল ৯নং ওয়ার্ড থেকে বিধবা ভিক্ষুক আমেনা বলেন, আরও কাগজপত্র কিছুই নেয়নি। যদি ১০ টিয়া দিয়ে চাইল হাইতাম তাহলে তো ভ্যালেই হইতো। স্যার আমনে আগে আর নাম নেন। স্যার চাইল পামু তো। শুক্রবার সকাল ১০ টায় কলমী আনজুর হাট ১০ টাকা মূল্যের চাল বিতরণের সময় বিধাব ভিক্ষুক হনুফা, বিধাব বিউটি বেগম, করুনা বেগম এসে সাংবাদিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, স্যার আংগোরেদে কার্ডও দেয়নি, চাইলও দেয়না। স্যার আমনে আংগোরে চাইল লইয়া দেন। এভাবে কার আগে কেউ নাম দিবে ঠেলা ঠেলি বাজছে তাদের মধ্যে।
বাংলাদেশ মধ্যবিত্ত আয়ের দেশ হিসেবে ঘোষণার অপেক্ষায়। এতেও কি প্রশ্ন থেকে যাবে?
সচেতন মহল বলেন, ১০ টাকার চাল কি পাবেনা ভিক্ষুকেরা। ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ করতে পারবেনা কি সরকার। উপজেলা প্রশাসন, চেয়ারম্যান, মেম্বারগণের সদ-ইচ্ছে থাকলে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ হয়ে যাবে বলে এমনটা মনে করছেন সচেতন মহল ।
এব্যাপারে চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনোয়ার হোসেন বলেন, তালিকার বিষয়টি মেম্বার- চেয়ারম্যানারা তাদের মন মত করছেন। তারা আমার কাছে এসে শুধু সাইন নেয়। কেউ যুদি বাদ পড়ে থাকে তা হলে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে পরবর্তিতে কোন সুযোগ আসলে তারা ব্যবস্থ্যা করবেন বলে জানান।
এফএইচ