বুধবার ● ৩১ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন » ভোলায় সানাউল্লাহ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে মানহীন অবৈধ রড সরবরাহ করে ক্রেতাদের প্রতারিতর অভিযোগ
ভোলায় সানাউল্লাহ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে মানহীন অবৈধ রড সরবরাহ করে ক্রেতাদের প্রতারিতর অভিযোগ
চরফ্যাশন প্রতিনিধি: ভোলার চরফ্যাশনে বিভিন্ন ব্রান্ডের সিল লোগো অবিকল নকল করে মানহীন অবৈধ রড সরবরাহ করে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে সানাউল্লাহ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে। ব্যবসার অন্তরালে রি-রোলিং মিলের সাথে যোগসাজসে চট্রগ্রামের গ্রেড রডের নামে ঢাকা হতে নিম্ন মানের রড নৌ-পথে এনে নিজস্ব ঠিকাদার ও ক্রেতাদের সরবরাহ করে ব্যবসার আড়ালে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার পাহাড় বনে যাওয়ার ঘটনা অনুসন্ধানে জানা গেছে তার অজানা কাহিনী। ভোলা জেলায় সানাউল্লাহ এন্টারপ্রাইজের ১১ টি দোকান সহ ৫টি গুদাম রয়েছে। চরফ্যাশনে ৪টি, রসুলপুরে ২টি, দক্ষিল আইচায় ১টি, লালমোহনে ২টি, বোরহানউদ্দিনে ৩টি ও ভোলা শহরে ২টি সহ ৫টি গুদাম নিয়ে ব্যবসা করছেন। বোরহানউদ্দিনে ব্যবসা শুরুর পর পরিধি বর্ধিত করে ২০০৫ সালের দিকে চরফ্যাশনে সানাউল্যাহ এন্টারপ্রাইজ নামে ছোট একটি টিনের দোকান দিয়ে প্রতিষ্ঠানের ২য় শাখা চালু করে। বিগত ১০ বছরে ভোলা জেলায় ছোট বড় ১১ টি দোকানের গর্বিত মালিক রিয়াজ উদ্দিন।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ব্যবসার আড়ালে গড়ে তুলেছেন নেপথ্যে দ্রুত মুনাফা অর্জনের গোপন সিন্ডিকেট। সড়ক পথে অবৈধ ভাবে নামে বে-নামে গুদামে ঢুকছে নকল সিল লোগোর রড ও টিন। গ্রাম থেকে আসা সহজ সরল ক্রেতাদের বাজার থেকে একটু কম দামে সহজে আকৃষ্ট করছে নকল নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী। কতিপয় ঠিকাদারের সাথে গোপনে বিভিন্ন ব্রান্ডের গ্রেড রড ঢাকায় রিং-রোলিং মেশিনের লোগো সিল ব্যবহার করে সরবরাহ করে প্রতারিত করা হচ্ছে ক্রেতাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ঠিকাদার জানান, চট্রগ্রামের বিএসআরএম, কেএসআরএম, একেএস লোগোর লোকাল রড সরকারি কাজে ব্যবহার করে তা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্তা ব্যক্তিরা সনাক্ত করে টেষ্টের জন্যে বুয়েট পাঠালে ধরা পরে নিম্ন মানের রডে নামী দামী গ্রেড রডের লোগো ব্যবহার করা হয়েছে।
সানাউল্লাহ এন্টারপ্রাইজ মুলত এ কে এস গ্রেড রডের বৈধ ডিলার হওয়ার পরও উক্ত রড ঢাকায় রি-রোলিং মেশিনের মাধ্যমে লোগো নকল করে দেশীয় নিম্ন মানের রড বিক্রি করে ক্রেতা সাধারণকে প্রতারণা করে বেশি মুনাফার জন্যে অন্তরালে কোটি কোটি টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন। সরেজমিন জানা গেছে টি এস আর এম / রানী গোল্ড /এইচ আর আর এম/ এম এম,সি এল/এম এমটি, টি,এস,আর এম/এম, এস, সি এল, নামে গ্রেড রড লোগো নকল করে অবাধে বাজারে বিক্রি করে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্র ছায়ায় প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ ভাবে ব্যবসা করলেও তার ব্যাপারে কারো কোন ভূমিকা নেই।
গত ৫ মার্চ/২০১৪ তারিখ চরফ্যাশনে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার সিটি ট্রেডার্স নামে এক ব্যবসায়ীর পিএইচপি এ্যারাবিয়ান হর্সের ১৫ লক্ষ টাকার টিন দেশ ট্রেডিং নামে ভূয়া মেমো করে সানাউল্লাহ এন্টারপ্রাইজের গুদামে আনলোড করার ঘটনা জানাজানি হলে চরফ্যাশনে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। চরফ্যাশন থানায় এ ব্যাপারে অবহিত হওয়ার পর বিষয়টি ম্যানেজ করে সমিতির কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করে মুচলেকা দিয়ে রক্ষা পেয়েছেন রিয়াজ উদ্দিন। পিএইচপি টিন নিয়ে প্রতারণার ঘটনায় প্রিন্ট মিডিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। অভিযোগ উঠেছে উক্ত ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ ভাবে টিন ও রডের ব্যবসা করে সরকার কে রাজস্ব ফাকি দিয়ে ব্যবসা করে আসছে।
এব্যাপারে উপ কর কমিশনার বলেন, বিষয়টি অতি গোপনীয় ব্যাপার, তারপরও যে পরিমান কর দেযার বিধান তা তিsনি না দিয়ে থাকলে কেউ সুষ্পষ্ট অভিযোগ করলে আমরা অনুসন্ধান করে কর যাচাই বাছাই করে কোন অনিয়ম করে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতারিত জনৈক ক্রেতা গ্রেড রডের নামে নকল রড কিনে বিল্ডিং করে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা সংবাদকর্মিদের কাছে তুলে ধরেন, চরফ্যাশনে তারা নকল রড বিক্রি করে মানুষকে প্রতারিত করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।
এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠনের পাশ্ববর্তী জনৈক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গভীর রাতে প্রায়ই গুদামে বৈধ অবৈধ রড আনলোড ও সরবরাহের ঘটনা ওপেন সিক্রেট।
চরফ্যাশন বাজারের জনৈক ব্যবসায়ী জানান, রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যাওয়া এ ব্যাবসায়ির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সরজমিন তদন্ত করলেই প্রকৃত রহস্য বেড়িয়ে আসবে।
এ ব্যাপারে সানাউল্লাহ ট্রেডার্সের সত্যাধিকারী রিয়াজ কে জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ব্যবসায়ীক ভাবে তার মান ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে পরিকল্পিত ভাবে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে বলে তিনি দাবী করেন।
এজে/এফএইচ