বৃহস্পতিবার ● ৭ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন » অবৈধজালে বেদখল চরফ্যাশনের নদীগুলো!
অবৈধজালে বেদখল চরফ্যাশনের নদীগুলো!
আদিত্য জাহিদ: ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মেঘনা, তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌড়াঙ্গ নদীগুলো এখন অবৈধ কারেন্ট, বিহিন্দি, মশারি, পকেট জালে মাসোয়ারার মাধ্যমে আবদ্ধ হয়ে পরেছে। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে উপকূলের নদ-নদীতে অবাধে চলছে বাগদা ও গলদা চিংড়ির পোনা আহরণ সহ সকল ধরনের মাছ ধরার প্রতিযোগিতা চলছে। এতে করে নির্বিচারে মারা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা করছেন এঅবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই পরিবেশ বিপর্যয়সহ চরম হুমকির মুখে পড়বে এ অঞ্চলের মৎস্যসম্পদ।
সরেজমিনে জেলেদের সাথে আলাপ করলে ইউছুফ মাঝি, জুয়েল মাঝি, সিরাজ মাঝি বলেন, তারা গদীতে প্রতি ১০ দিনের জন্য নৌকা প্রতি ১ হাজার টাকা করে দিতে হয়। জেলেদের দেয়া টাকা গদির মালিকরা কোস্টগার্ডের (সাবেক) বোট চালক হেলালের হাত দিয়ে চর মানিকা আউটপোস্ট কোস্টগার্ড কমান্ডার (পিও) সহ সীম্যানদের হাতে পৌছে যায়।
চর কচ্ছপিয়া ঘাটের কুদ্দুস দালালের ছেলে নোমান দালাল জেলেদের থেকে টাকা রেখে জেলেদের জালের নিরাপত্তার জন্য কোস্টগার্ডকে টাকা দেওয়ার বিষয়টি প্রথমে স্বীকার করলেও পরে এড়িয়ে যায়।
তারা আরো বলেন, বোট চালক হেলাল বর্তমানে কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। কোন জেলে উপটৌকনের টাকা না দিয়ে মাছ ধরলে কোস্টগার্ডের অভিযানে ধরা পড়লে মাঝি হেলালের মাধ্যমে রফাদফা করা হত।
জানা গেছে, চরফ্যাশন, লালমোহন ও মনপুরা উপজেলার মেঘনা, তেঁতুলিয়া ও বুড়া গৌড়াঙ্গ নদী কোস্টগার্ড চরমানিকা আউটপোস্টের অধীনে পাঙ্গাসিয়া, লালমোহনের খালগোড়া, গজারিয়া, কচুখালী, ঘোষের হাট, বকসীঘাট, নলূয়া স্লুইসগেট, চর ইসলাম, মানিকার ঠোটা, চরবিস্বাশ, চর বেষ্টিন, চর হাসিনা, ঢালচর, পাতিলা, এককপাট, আটকপাট, খেজুর গাছিয়া,চর মাইনুদ্দিন, সাম্রাজ সহ বিভিন্ন চর থেকে প্রতি মাসে প্রায় ২/৩ লাখ টাকা করে উপটৌকন আদায় করে। চরমানিকা বাজারের শফিক কেরাণী (মৎস্য) দালাল বলেন, প্রতি ১০ দিনের জন্য হেলালের মাধ্যমে আমরা টাকা দিয়ে থাকি। টাকা না দিলে হেলালের দেখানোমতে কোস্টগার্ড জাল ধরে পুড়িয়ে ফেলে। খোকন নামের এক মাঝি বলেন, হেলালকে টাকা না দেয়ায় তার বড় ভাইয়ের চর ঘেরা জাল কোস্টগার্ড নদীথেকে তুলে পুড়ে ফেলে।
হেলালের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, আমার নামে অপবাদ দেয়া হয়েছে। টাকা আদায়ের সাথে আমি জড়িত নই।
উপজেলা মৎস্য সম্পদ কর্তকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন,আমরা সাধ্যমত প্রায়ই নদীতে অভিযান পরিচালনা করি।
তবে কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করা হয়েছে। হেলাল আমাদের নাম করে জেলেদের নিকট থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার কারণে তাকে মাঝি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এফএইচ