বুধবার ● ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন » চরফ্যাশন পৌর নির্বাচন : আ’লীগ-বিএনপিতে ভিন্ন সুর
চরফ্যাশন পৌর নির্বাচন : আ’লীগ-বিএনপিতে ভিন্ন সুর
ফরহাদ হোসেন• আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ভোলার চরফ্যাশন পৌরসভার নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার দলীয় মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়ালেও নির্বাচনের আমেজ নেই বিরোধী জামায়েত-বিএনপি প্রার্থীদের মধ্যে।
আবার নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন বিরোধী দলীয় প্রার্থী ও সাধারণ ভোটাররা।
জানা গেছে, চরফ্যাশন পৌরসভা নির্বাচনে প্রধান দুই দলের একক দুই মেয়রসহ ৫১ জন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনের জন্য প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। এর মধ্যে সরকার দলীয় একক মেয়র প্রার্থী বাদল কৃষ্ণ দেবনাথ ও সাধারণ পুরুষ কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন ৩৮ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী ১১ জন। আর বিরোধী দলীয় বিএনপি সমর্থিত একক মেয়র প্রার্থী আমিরুল ইসলাম মিন্টিজ ও ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে বিএনপি সমর্থিত একজন মেয়র একজন পুরুষ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত একজন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। বাকি সবাই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী। নির্বাচনে নিজেকে বিজয়ী করতে সরকার দলীয় প্রার্থীরা দিন-রাত গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, মিছিল-মিটিং করাসহ নানা প্রত্যাশার বাণী নিয়ে ভোটারদের কাছে ভিড় করলেও প্রচারণার জমজমাট ভাবে মাঠে নেই বিএনপি সমর্থিত মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নির্বাচনী প্রচারণা আর গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বাদল কৃষ্ণ দেবনাথ ও তার দলীয় নেতাকর্মীরা। তারা বিভিন্নভাবে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপি’র মেয়র প্রার্থীর পক্ষে জোরেশোরে তেমন প্রচারণা দেখা যায়নি। সরকারদলীয় প্রার্থীদের মোটরসাইকেলের মহড়া আর মাইকের শব্দে অনেকটা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এ পৌরসভার ভোটাররা। তারা বলছেন প্রার্থীদের প্রচারের মাইকের শব্দে ব্যাহত হচ্ছে চলতি এসএসসি পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়া।
এখানকার সাধারণ ভোটাররা বলছেন, তারা সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন। যার দ্বারা পৌরসভার উন্নয়ন শিক্ষা, চিকিৎসা, স্যানিটেশন, সড়ক বাতি, আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থাসহ মাদক ও বাল্য বিবাহ মুক্ত ও সব সময় সাধারণ জনগণের পাশে থাকবে এমন প্রার্থীকে ভোট দিবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন তারা। একই সাথে নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের নিরাপত্তা চেয়েছেন তারা।
এদিকে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আমিরুল ইসলাম মিন্টিজ তার প্রচারণায় বাধাসহ দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মামলা ও নানা রকম হয়রানির অভিযোগ তোলেন। তিনি নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি করেন।
তিনি বলেন, পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ৩ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক সহ ২৩ বিএনপি নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আরো ২০/২৫ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে নতুন করে মামলা দেওয়া হয়েছে। তারা গ্রেফতারের অতঙ্কে এলাকা ছেড়েছেন।
নির্বাচনের পরিবেশ যেভাবে ঘোলাটে করা হচ্ছে তাতে সেনাবাহিনী ছাড়া সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে তিনি সংশয় প্রকাশ করেছেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বাদল কৃষ্ণ দেবনাথ।
তিনি এ নির্বাচনে শতভাগ বিজয়ের আশা ব্যক্ত করে জানান, তারা কাউকে কোনো বাধা দিচ্ছেন না। তারা নির্বচনী সকল আচরণবিধি মেনে চলছেন।
নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন খান বলেন, ইতোমধ্যে ভোট গ্রহণের জন্য সকল প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। বিচ্ছিন্ন দুয়েকটি ঘটনা ছাড়া নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রয়েছে। ভোট গণনার দিন প্রশাসনের কয়েক স্তরের নিরাপত্তাসহ মোবাইল টিম মোতায়েন থাকবে। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে তিনি দাবি করেন।
১৯ দশমিক ৭৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তন নিয়ে ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় চরফ্যাশন পৌরসভা। বর্তমানে এখানে জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় ৬০ হাজারের অধিক। এ পৌরসভায় ভোটার রয়েছেন ২২ হাজার ৩৩১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১১ হাজার ৫৭৪ এবং নারী ১০ হাজার। নির্বাচনে কেন্দ্র ১৪টি এবং বুথ ৭৭টি।