শুক্রবার ● ৯ অক্টোবর ২০১৫
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন » ওঝা বৈদ্য একমাত্র ভরসা, চরফ্যাশনে সাপের কামড়ে ৪ জনের মৃত্যু
ওঝা বৈদ্য একমাত্র ভরসা, চরফ্যাশনে সাপের কামড়ে ৪ জনের মৃত্যু
আদিত্য জাহিদ, চরফ্যাশন • চরফ্যাশনের ২১ টি ইউনিয়নে প্রায় ৬ লাখ মানুষের সাপের কামড়ে আক্রান্ত হলে ওঝা, বৈদ্য, ঝাড়পুকই একমাত্র ভরসা। গত ৪ দিনে চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৪ জনের সাপের কামড়ে মৃত্যু সহ আরো ৫ জন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। মাদ্রাজ ইউনিয়নের চর আফজাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ফারজানা কামাল (২৫) কে চরফ্যাশন পৌর শহরের ৯ নং ওয়ার্ডের বাসায় সাপে কামড় দেয়ার পর রাতেই ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার পর হাসপাতালেই মারা যান তিনি, এছাড়া স্কুল ছাত্রী নাজমা (১৫), কৃষক আলমগীর (৪২) সহ ৪ জনের মৃত্যু হলেও চরফ্যাশন হাসপাতালে সাপে কামড়ের কোন চিকিৎসা না থাকায় ওঝা বৈদ্য ঢোল বাদ্য বাজিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন। চরফ্যাশন হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপের কামড়ের রোগীর ভ্যাকসিন না থাকায় আমাদের কাছে আসলে কিছু করার থাকে না। আমরা ভোলা সদর হাসপাতালে রোগিদের যাওয়ার পরামর্শ দিলে তারা জেলা সদর হাসপাতালে না গিয়ে ওঝার কাছে যায়।
জাহানপুর ইউনিয়নের ওমরাবাজ গ্রামে ৬ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধায় সাপের কামড়ে আলমগীর (৪২) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সাপের কামড়ে নিহত কৃষক আলমগীর পরিবারের পাঁচ সদস্যসহ ছয় জন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আক্রান্তরা হলেন, নিহত কৃষক আলমগীরের স্ত্রী মমতাজ (৩০), ছোট ভাই জাহাঙ্গীর (৩৭), ইউছুফ (২২), বোন রেহানা (৩০), তালতো বোন বকুল (৩৫) এবং নজরুল নগর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মহসিনের মেয়ে নাজমা বেগম (১৫)। আক্রান্তদের পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডস্থ মৃত মজিবল ওঝার মেয়ে তারা বেগমের বাড়িতে ঢোল বাদ্য বাজিয়ে চিকিৎসা দেয়ার পরও নাজমা বেগম ৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে নিজ বাড়িতে মারা যায় বলে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার নিশ্চিত করেন। স্থানীয়রা জানান, ৫ অক্টোবর সোমবার বিকেলে কৃষক আলমগীর তার সবজি বাগানে কাজ করার সময় বিষধর সাপ তার পায়ে কামড় দেয় এরপর স্থানীয় ওঝা দিয়ে চিকিৎসার পর চরফ্যাশন
হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করান। হাসপাতালে সাপের কামড়ের ভ্যাকসিন না থাকায় ৬ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পৌর সভার ১নং ওয়াডের্র মৃত মজিবল ওঝার বাড়িতে নেয়ার পথে আলমগীর মারা যায়। এছাড়া নিহত আলমগীরকে চিকিৎসারত অবস্থায় তার শরীর স্পশ করার কারনে সাপের বিষে তার স্ত্রী ভাই সহ পাঁচ জন আক্রান্ত হন। অপরদিকে ৬ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকেলে নজরুল নগর গ্রামে ধান আনতে গেলে নাজমা নামের কিশোরীকে বিষধর সাপে কামড় দেয়। আশংকাজন অবস্থায় তাদেরকে বুধবার দুপুরে মজিবল ওঝার স্ত্রী ফিরোজা বেগম, মেয়ে তারা বেগম ও ছেলে কামরুল হাসান ঢোল বাদ্য বাজিয়ে চিকিৎসা দিয়েছেন। ওঝা বৈদ্য তারা বেগম জানান, চিকিৎসাধীন ছয় জনের মধ্যে তিন জনের বিষ মুক্ত করে সুস্থ্য করা হয়েছে। বাকীদেরও বিষ মুক্ত করে সুস্থ্য করে তোলা হবে।