ভোলায় প্রধান শিক্ষককের ওপর হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন

বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলায় ম্যানেজিং কমিটিকে কেন্দ্র করে শহীদ সালাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরল কুমাড় সরকারের ওপর হামলা চালিয়েছে একদল সন্ত্রাসীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে ওই শিক্ষক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। এসময় সন্ত্রাসীরা স্কুলের আসবাবপত্র ও মূল্যবান মালামাল ভাংচুর করে। গত রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নে স্কুল চলাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এই হামলার প্রতিবাদে সন্ত্রাসীদের বিচার দাবীতে সোমবার ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচী পালন করেছে। এ হামলার ঘটনায় ভোলা সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নে গত রবিবার সকালে শহীদ সালাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মিটিং চলছিলো। এসময় স্থানীয় খোর্শেদ আলম, তাজল ইসলাম, হাসান মাতাব্বর, আমির হাওলাদার, আলমগীর হাওলাদারসহ একটি সন্ত্রাসী বাহিনী স্কুলে প্রবেশ করে লাইব্রেরীতে ঢুকে পড়ে। প্রধান শিক্ষক তাদেরকে কিছু জিজ্ঞাস করার আগেই তাদেরকে কেনো ম্যানেজিং কমিটিতে রাখা হলো না এই বলে সরল কুমাড়ের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসীরা প্রধান শিক্ষককে বেধরক মারধর করার পর স্কুল থেকে বের করে দেয়। স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি টের পেয়ে শিক্ষককে উদ্ধার করতে লাইব্রেরীতে আসলে তাদেরকে অস্ত্রের মুখে বাঁধা দেওয়া হয়। এসময় সন্ত্রাসীরা স্কুলের আসবাবপত্র ও মূল্যবান মালামাল ভাংচুর করে চলে যায়। পরে প্রধান শিক্ষক সরল কুমাড় সরকারকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। এই হামলার প্রতিবাদে গতকাল (২২ মে) সোমবার স্কুলের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে রাস্তায় নেমে আসে। তারা প্রধান শিক্ষক সরল কুমাড় সরকারের উপর হালার প্রতিবাদে সন্ত্রাসী খোর্শেদ আলম, তাজল ইসলাম, হাসান মাতাব্বর, আমির হাওলাদার, আলমগীর হাওলাদার সহ জড়িতদের বিচার দাবীতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। শিক্ষার্থী ইনছানা, রাবেয়া, তুহিন, মহিন, তানিম, সাথী বলেন, শিক্ষকরা হচ্ছেন জাতি গড়ার কারিগর, আজ শিক্ষকদের উপর হামলা হচ্ছে কাল আমাদের উপর যে হামলা হবে না এটার গ্যারান্টি কি? মানুষে শিক্ষার জন্য বিদ্যালয়ে আসে, এভাবে শিক্ষকদেরকে যদি মারপিট করে লাইব্রেরী থেকে বের করে দেওয়া হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা কি জন্য বিদ্যালয়ে আসবে। আমরা প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। যাতে আর কেউ এ ধরনের ঘটনা না ঘটাতে পারে।

অভিযুক্ত খোরশেদ আলম মারপিটের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, রবিবার আমি ওই স্কুলে যাই। এসময় তাজল ইসলাম, হাসান মাতাব্বর, আমির হাওলাদার, আলমগীর হাওলাদার আমার সাথে ছিলো। আমি প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি স্থানীয় সুশীল সমাজের লোকজনকে নিয়ে করার জন্য বলি। তাকে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি।

এব্যাপারে ভোলা থানার ওসি মীর খাইরুল কবির বলেন, প্রধান শিক্ষকের উপর হামলার ঘটনাটি আমরা শুনেছি। এব্যাপারে মামলা হয়েছে। আমরা দোষীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করার ব্যবস্থা নিচ্ছি।

-এএইচটি/এফএইচ