শিক্ষা বঞ্চিত চরফ্যাশনের চরাঞ্চলের শিশুরা ! বাড়ছে শিশুশ্রম

আদিত্য  জাহিদ, বিশেষ প্রতিনিধি:: ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার দূর্গম চরাঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভাবে মৌলিক অধিকার শিক্ষা থেকে বঞ্চিত  হচ্ছে কোমলমতী শিশুরা । ফলে জেলার চরাঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে শিশু শ্রম । যে বয়সে বই খাতা নিয়ে হৈ হুল্লোর করে স্কুলে যাওয়ার কথা সেই বয়সে স্কুলগামী ছেলে মেয়েরা যাচ্ছে নদীতে বাগদা রেনু সংগ্রহের কাজে। পিতা, ভাই অথবা এলাকার প্রতিবেশীদের সাথে রেনু পোনা সংগ্রহ করে দাদনকারীদের কাছে নিয়ে  গেলে ৩০/ ৪০ টাকা দেয় তাতে পরিবারের আর্থিক অভাব অনটনের কিছুটা কমিয়ে আনছে ওই শিশুরা । ২০ বর্গমাইল এলাকায় স্কুল বিহীন গ্রাম চরফ্যাসন উপজেলার পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত, চর কুকরী মুকরী ইউনিয়নের চরপাতিলা গ্রাম । যেখানে ৫ হাজার লোকের বসতী, স্কুল গামী ছেলে মেয়ের সংখ্যা প্রায় ৫ শতাধিক ও বেশি। বসতির প্রধান জীবিকা নদীতে মাছ শিকার, চাষাবাদ। বর্ষা মৌসুমে নৌকা তাদের একমাত্র চলাচলের বাহন।
এলাকায় কোন স্কুল না থাকায় ছেলেমেয়েরা উপার্জনের তাগিদে চলে যায় শিশুশ্রমের কাজে। একই গ্রামেরই শিক্ষিত যুবক মোঃ আবুল কাশেম ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন শরীফপাড়া অস্থায়ী রেজিঃ বেঃ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রায় ৩ বছর ধরে ৩জন সহকর্মী শিক্ষিকা নিয়ে বিনা বেতনে পাঠদান কার্য চালিয়ে যান। বর্তমানে ৩শত ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করছে। বিগত বছরগুলোতে পিএসসি পরীক্ষায় ফলাফল ১০০% বলে জানালেন প্রধান শিক্ষক আবুল কাসেম।
কথা হয় একই এলাকার আলাউদ্দিনের স্ত্রী’র সাথে। তিনি জানালেন, প্রায় ৩ কিলোমিটার দুরে স্কুল হওয়ার কারনে আমাদের ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া করানো সম্ভব হচ্ছেনা। ২কিলোমিটার এলাকার মধ্যে নেই কোন গভীর নলকুপ। যার কারনে তারা নিয়মিত নদীর পানি পান করছে এবং প্রায়ই পেটের পিড়ায় ভুগছে। প্রায়ই তারা আইলা, সিডর, বন্যা, জলোচ্ছাস ইত্যাদি’র সাথে মোকাবেলা করে বেচে থাকতে হচ্ছে।