শনিবার ● ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » রাজনীতি » সময়ের সঙ্গে বাড়ছে নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনের উত্তাপ
সময়ের সঙ্গে বাড়ছে নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনের উত্তাপ
নারায়ণগঞ্জ : যতোই ঘনিয়ে আসছে দিন ততোই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে (নাসিক) নির্বাচনী উত্তাপ।অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই দিয়ে চলছে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীর জোর প্রচারণা। শেষ সময়ে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা চষে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনী মাঠ। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা গণসংযোগ চালাচ্ছেন এবং দিচ্ছেন উন্নয়ন ও পরিবর্তনের আশ্বাস।শনিবার সকাল থেকে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ চালান প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী- আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভি ও বিএনপির সাখাওয়াত হোসেন খান।সরকারি দলের প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও প্রশাসন কিছুই বলছে না বলে অভিযোগ করেন সাখাওয়াত হোসেন। বিএনপির কর্মীদের গোপনে হুমকি দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি এখনো নির্বাচনী পরিবেশ মন্দের ভালো। ভোটাররা যাতে কোন বাধার সৃষ্টি না হয় সেজন্য নির্বাচন কমিশন ও সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি। নির্বাচন কমিশনের মোবাইল টিম ঠিকমতো কাজ করছে না।এদিকে, এসব অভিযোগকে নাকচ করে দিয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভি বলেন, নির্বাচনে সাখাওয়াত যে পন্থা নিয়েছেন তা সঠিক নয়। সব প্রার্থীই সুষ্ঠু পরিবেশে প্রচারণা চালছে। তিনি আরো বলেন, সব প্রার্থীই সুষ্ঠু পরিবেশে প্রচারণা চালাচ্ছেন ভোটারদের কাছে ভোট চাইছেন। কেউই এখনো কোনো বাধার মুখে পড়েনি।জানা গেছে, শনিবার বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে প্রতিদ্বন্দ্বী সকল মেয়র প্রার্থীদের একই মঞ্চে নিয়ে জনগণের মুখোমুখি করা হয় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং নেতাকর্মীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান।তবে বিএনপিপ্রার্থীর অভিযোগকে স্ট্যান্টবাজি হিসেবে দেখছেন আইভী।শনিবার সকালে ৩, ৪, ৫ নম্বর এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মিশনপাড়া এলাকায় গণসংযোগ করেন সাখাওয়াত হোসেন।আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী সকালে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বাবুপাড়া, সমরক্ষেত্রসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।গণসংযোগের এক পর্যায়ে ক্ষমতাসীন দলের প্রর্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সাখাওয়াত সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আচরণবিধি ভঙ্গ করে বড় বড় প্রতীক লাগিয়েছেন। আমার কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আচরণবিধি লঙ্ঘন ও আইনশৃঙ্খলা পর্যবেক্ষণে ২৭টি ওয়ার্ডে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকলেও তারা বিষয়টি দেখছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।নির্বাচনী পরিবেশকে মন্দের ভালো হিসেবে উল্লেখ করে সাখাওয়াত প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ তৈরির আহ্বান জানান।সকালে বন্দরের বাবুপাড়া, সমরক্ষেত্রসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। কোথাও কোথাও তাকে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বরণ করে ভোটাররা। এসব স্থানে অঅইভী রিকশায় দাঁড়িয়ে হ্যান্ডমাইকে ভোট প্রার্থণা করেন।এসময় তার বিরুদ্ধে আনা সাখাওয়াতের অভিযোগ প্রসঙ্গে আইভী বলেন, ওনি তো প্রতিদিন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। আমি তো দুই/ তিন জন মানুষ নিয়ে বের হচ্ছি। লোক যদি আমার পিছনে চলে আসে সেক্ষেত্রে আমার কিছু করার থাকে না।আমি কাকে তাড়াব? আমি লোকজনকে নিজেও সরানোর চেষ্টা করেছি। আমি আচরণবিধি মেনেই কাজ করছি। জনগণ যদি স্বঃতস্ফূর্তভাবে চলে আমার কী করার আছে? আমি মাইকও ব্যবহার করছি না। উনিও ভোট চাইছেন, আমিও ভোট চাইছি। জনগণ যাকে বেছে নেওয়ার নেবে।বিএনপি নেতাকর্মীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে উনি (সাখাওয়াত) পার পাবেন না।আমার কোনো বাহিনী নেই। যদি কেউ হুমকি দিয়ে থাকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে; আমার ভাই, সন্তান হলেও আইনের হাতে তুলে দেব। তার তিনি যে অভিযোগ করছেন তা রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি।প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান তালুকদার বলেছেন, নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রয়েছে।আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।আগামী ২০ ডিসেম্বর রাত ১২টায় শেষ হবে নির্বাচনী প্রচার।২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীসহ সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া কাউন্সিলর পদে ১৫৬ ও নারী কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন প্রার্থী রয়েছেন।