শুক্রবার ● ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » রাজনীতি » মায়ের কবরের পাশে হান্নান শাহর দাফন: জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল
মায়ের কবরের পাশে হান্নান শাহর দাফন: জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল
গাজীপুর : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সদ্য প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আসম হান্নান শাহকে শুক্রবার চিরনিনদ্রায় শায়িত করা হয়েছে । গাজীপুরের কাপাসিয়া ঘাগুটিয়া চালাবাজার হাইস্কুল মাঠে নামাজে জানাজা শেষে তাকে পারিপারিক কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে শুক্রবার সকাল ৯টায় গাজীপুরের ঐতিহাসিক রাজবাড়ি মাঠে ৫ম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে মরহুমের নিজ এলাকা কাপাসিয়ার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সকাল সাড়ে ১০টায় তার ৬ষ্ঠ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।পরে মরহুমের লাশ নিয়ে যাওয়া হয় তার নিজ গ্রাম কাপাসিয়ার ঘাগুটিয়ায়। সেখানে বাদ জুমা জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এদিকে, জানাজায় অসংখ্য বিএনপি নেতাকর্মী ও এলাকার সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। এ সময় প্রিয় নেতার লাশ দেখে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।এর আগে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হান্নান শাহের কফিনবাহী গাড়ি গাজীপুর শহরের রাজবাড়ি মাঠে এসে পৌঁছায়। সেখানে অস্থায়ীভাবে কালো কাপড় দিয়ে তৈরী মঞ্চে তার মরদেহ রাখা হয়। জানাজা শেষে দলীয় নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। বিশাল এ নামাজে জানাজায় ইমামতি করেন গাজীপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মনির উদ্দিন আহম্মেদ।আসম হান্নান শাহের দুই পুত্র রিয়াজুল হান্নান ও রেজাউল হান্নান ছাড়াও জানাজায় অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান নেতা মো. শাহজাহান, এম এ জেড জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকার, জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, কেন্দ্রীয় নেতা পৌর মেয়র মজিবুর রহমান, হুমায়ুন কবির খান, ডা: মাজহারুল আলম, মীর হালিমুজ্জামান ননী, সোহরাব উদ্দিন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: জাহাঙ্গীর আলম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ইজাদুর রহমান মিলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হাজারো নেতা-কর্মীর ভালোবাসায় সিক্ত হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সদ্য প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ।গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় ভোর রাত ৩টা ৩৭ মিনিটে সিঙ্গাপুরে র্যাফেলস হার্ট সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৮ মিনিটে তার মরদেহ হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।প্রিয় সহকর্মীকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে বুধবার রাতেই হান্নান শাহর বাসায় ছুটে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় মহাখালী ডিওএইচএস জামে মসজিদে প্রয়াত বিএনপির এই নেতার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ নেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন, এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রফেসর ইমিরেটাস আনিসুজ্জামান প্রমুখ।পরে তার মরদেহ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে বেলা ১১টায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, চিফ হুইফ আ স ম ফিরোজ, বিরোধী দলীয় নেতার পক্ষে হুইফ নুরুল ইসলাম, খালেদা জিয়ার পক্ষে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুইয়া, এলডিপির পক্ষে আব্দুল করিম আব্বাসী ও শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রয়াত এই নেতার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। দুুপুর ১২টার দিকে প্রয়াত এই নেতার মরদেহ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নিয়ে আসা হয়। এ সময় শত শত নেতাকর্মীর শেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন হান্নান শাহ। বাদ জোহর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তরিকুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. আব্দুল মঈন খান, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, আহমেদ আযম খান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর. আব্দুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স প্রমুখ অংশ নেন।এদিকে, এ মৃত্যুতে বিএনপি চারদিনের শোক পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।