রবিবার ● ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » বিনোদন » তারকাদের মৃত্যু রহস্য
তারকাদের মৃত্যু রহস্য
ঢাকা: এ ঢালিউডের ক্রেজ হিসেবে পরিচিত নায়ক সালমান শাহ’র আত্মহত্যা নিয়ে এখনো বির্তক আছে ভক্তদের মনে। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ইস্কাটনের নিজ বাসায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর সালমান শাহ’র মা দাবি করেন, স্ত্রীর সাথে কলহের জেরে খুন করা হয়েছে তাকে। অসংখ্য ভক্তও দাবি করেন এটি ছিল একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। বিষয়টি আদালত পর্যন্তও গড়ায়। তবে সময়ের স্রোতে হারিয়ে যায় জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ’র মৃত্যু বিতর্ক।
ঢালিউডের জনপ্রিয় আরেক নায়ক মান্নার মৃত্যু নিয়েও গুজব রয়েছে। রয়েছে অভিযোগ আর সন্দেহ। আসলেই কি মান্নার মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল? অনেকের অভিযোগ ডাক্তারদের চিকিৎসার অবহেলায় তার অকাল প্রয়াণের মূল কারণ। এক হিসেবে এটি ছিল হত্যাকাণ্ড।
জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যু নিয়েও অনেক ভক্তের মনে প্রশ্ন আছে। ২০১২ সালে ১৯ জুলাই নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় বহুগুণের অধিকারী এই মানুষটির।
২০০২ সালের দিকে জনপ্রিয় মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নির মৃত্যু নিয়েও রহস্যের ডালপালা ছড়ায়। সে সময় বেওয়ারিশ অবস্থায় তিন্নির লাশ খুঁজে পাওয়া যায়। হঠাৎ করেই কে বা কারা তাকে খুন করে সে রহস্যের সুরাহা এখনো হয়নি।
১৯৯৩ সালের ৫ এপ্রিল অসংখ্য ভক্তদের কাঁদিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন দিব্যা ভারতী। সেদিন রাতে পাঁচতলা এপার্টমেন্ট থেকে পড়ে মারা যান বলিউডের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। অনেকে বলেন এটা আত্মহত্যা, আবার অনেকের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছিল। এ জন্য তার স্বামী সাজিদ নাদিয়াদ ওয়ালাকে দায়ী করেন অনেকে। আবার অনেকে বলেন, মায়ের সঙ্গে মনোমালিন্যের জের ধরেই দিব্যা আত্মহত্যা করেন। ১৯৯৮ সালে রহস্যের কোনো কুল কিনারা না পেয়ে এই হত্যা মামলার ফাইল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
দীর্ঘদিন পরে তার হত্যা রহস্যের সমাধানের দাবি করা হয়। জানানো হয়, যেদিন রাতে তিনি মারা যান সেদিন একজন মধ্যস্থতাকারীর (দালাল) সঙ্গে বান্দ্রায় নেপচুন এপার্টমেন্ট ঘুরে দেখেন দিব্যা। পছন্দসই এপার্টমেন্ট খুঁজে পেয়ে তা নিয়ে ভাই কুনালের সঙ্গে আলোচনাও করেন। সেদিনই রাতে ভারসভার বাসায় ডিজাইনার নীতা লুল্লা ও তার স্বামী সুনীল দিব্যার সঙ্গে দেখা করেন।
দিব্যার শোবার ঘরে কোনো ব্যালকনি ছিল না বরং বড় একটি জানালা ছিল। বাড়ির সব জানালায় গ্রিল থাকলেও ওই জানালায় কোনো গ্রিল ছিল না। আলোচনার ফাঁকে সবার চোখের আড়ালে জানলার নিচের ওই কার্নিশের উপর দাঁড়ান দিব্যা। দাবি করা হয়, সংকীর্ণ জায়গাটিতে মাতাল অবস্থায় ভালোমতো দাঁড়াতে না পেরে পা পিছলে তিনি পার্কিংয়ে পড়ে যান। গুরুতর আহত দিব্যাকে মুম্বাইয়ের কুপার হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান তিনি।
পপ সম্রাট মাইকেল জ্যাকসনের মৃত্যু নিয়েও রহস্য আছে। ২০০৯ সালের ২৫ জুন নিজ বাসায় তার মৃত্যু হয়। তদন্তে বলা হয়, অতিরিক্ত বেদনানাশক ওষুধ সেবনই মাইকেলের মৃত্যুর কারণ। এজন্যে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসা কনরাড মারেকে’কে ৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবুও থামেনি বিতর্ক ও আলোচনা।
মেরিলিন মনরোর নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন। গত শতাব্দিতে ঝড় তোলা হলিউডের তুমুল জনপ্রিয় এই নায়িকার মৃত্যু নিয়েও রয়েছে এক বিরাট রহস্য তার ভক্তদের মাঝে। ১৯৬২ সালের ৫ আগস্ট এই মার্কিন হলিউড অভিনেত্রী মাত্র ৩৬ বছর বয়সে নিজ বাসায় মারা যান। ধারণা করা হয়, মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। তবে অনেক ভক্তের দাবি, তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেনেডির সঙ্গে রোমান্সই তার মৃত্যুর জন্য দায়ী। তার মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক রয়েছে এখনও। যেমন ২০১৩ সালের ১৪ জুলাই প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়, হলিউডের খ্যাতিমান মানুষদের ওপর স্পাইগিরির জন্য কুখ্যাত গোয়েন্দা ব্যক্তি হচ্ছেন ফ্রেডওটাস। মনরো যেদিন মারা যান সেদিনও তিনি তার ওপর নজর রেখেছিলেন। মৃত্যুর একঘণ্টা আগেও তিনি মনরো, পিটার লফোর্ড ও রবার্ট ববি কেনেডির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় রেকর্ড করেছিলেন। তর্কের সময় মনরো বলছিলেন, তাকে ‘এক টুকরো মাংসের মতো’ ব্যবহার করেছিল কেনেডির ভাইয়েরা। এসময় তাদের মধ্যে গোপন সম্পর্ক ও মনরোকে দেওয়া বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি নিয়েও তুমুল বাকবিতণ্ডা হয়। মনরো প্রচণ্ড চিৎকার করছিলেন। তারা দুজনেই তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। তার চিৎকার যেন প্রতিবেশিরা শুনতে না পায় সেজন্য এক পর্যায়ে ববি তাকে বিছানায় ফেলে মুখে বালিশ চেপে ধরেন। অবশেষে মনরো শান্ত হন। এর কিছুক্ষণ পরে ববিকে সেখান থেকে চলে যেতে দেখা যায়। ‘পুলিশের মতে, ওটাসে উল্লিখিত সময়ের কিছু পরেই মনরোর মৃত্যু হয়। ওটাস শুধু তখনই মনরোর মারা যাওয়ার খবর পান যখন লফোর্ড তাকে ঘটনার দিন ভোরে ডেকে ওই ঘর থেকে সমস্ত তথ্য-প্রমাণ সরিয়ে ফেলতে বলেন। গোয়েন্দা ফ্রেড ওটাস ১৯৯২ সালে ৭০ বছর বয়সে মারা যান।
রহস্য আছে রক এন রোলের রাজা এলভিস প্রিসলিকে নিয়েও। ১৯৭৭ সালের ১৬ আগস্ট মাত্র ৪২ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। অনেকের মতে, অতিরিক্ত ড্রাগস নেওয়ায় তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। যার পেছনের কারণ ছিল পারিবারিক অশান্তি। আবার অনেকের মতে, সব কিছুর উপর বিরক্ত এলভিস এভাবেই নিজেকে আড়াল করে ফেলেন।
মৃত্যু রহস্যের তালিকায় মার্শাল আর্ট লিজেন্ড ব্রুস লি’ও আছেন। হংকংয়ের এই নায়কের হাত ধরেই মার্শাল আর্ট পুরো বিশ্বের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠে। ১৯৭৩ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে এই তারকার অকাল মৃত্যু হয়। কারও কারও দাবি হলিউডেও ছড়িয়ে পড়া তার জনপ্রিয়তাই কাল হয়ে দাঁড়ায় লি’র জন্য। কেউ কেউ বলেন তুমুল জনপ্রিয়তা সহ্য করতে না পেরে লি’র এক বন্ধুই ষড়যন্ত্র করে তাকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দেয়।