মঙ্গলবার ● ১২ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » রাজনীতি » মুদ্রা পাচারের অভিযোগে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে সমন
মুদ্রা পাচারের অভিযোগে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে সমন
ঢাকা : অবৈধভাবে অর্থের লেনদেনের (মানি লন্ডারিং) অভিযোগে করা মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মানিলন্ডারিং-এর এ মামলায় তারেক রহমানের খালাস পাওয়ার রায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আপিল শুনানির বিষয়ে পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য হয়েছে আগামী ১৪ ফেব্র�য়ারি। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. আমির হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।আদেশের পর দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, আদালত তারেক রহমানের বিরুদ্ধ নতুন করে সমন জারির নোটিশ পাঠাতে বলেছে। একইসঙ্গে একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি দৈনিকে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতেও বলেছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে অর্থের লেনদেনের অভিযোগে করা মামলায় বিচারিক আদালতে খালাসের আদেশ বাতিল চেয়ে আনা আপিল শুনানির জন্য গত ৩ জানুয়ারি আবেদন করে দুদক।এর আগে ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ ছেলে এবং দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের খালাস দিয়ে রায় দেয় বিচারিক আদালত। একই মামলায় তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদন্ড ও ৪০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। পাচারকৃত ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৬১৩ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দেয় আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক মো. মোতাহার হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর আপিল আবেদন দায়ের করে দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি এ আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে তারেক রহমানকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেয় হাইকোর্ট।২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ক্যান্টনমেন্ট থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে এ মামলা করে দুদক। ২০১০ সালের ৬ জুলাই তারেক রহমান ও মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তারেক রহমানকে পলাতক দেখিয়ে অভিযোগ গঠন করা হয়।এ মামলা দায়ের থেকে শুরু করে পুরো বিচার প্রক্রিয়াতেই অনুপস্থিত ছিলেন তারেক রহমান। গত আট বছর ধরে তিনি যুক্তরাজ্যে রয়েছেন।জজ আদালতে এ মামলা থেকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেককে দেওয়া খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে দুদকের করা আপিল শুনানির দিন ধার্যের জন্য মঙ্গলবার হাই কোর্টের কার্যতালিকায় এলে বিচারপতি এম ইনায়াতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।দুদকের পক্ষে এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।আদেশের পর তিনি বলেন, আপিলের বিষয়টি জানাতে আদালত তারেকের নামে নতুন করে নোটিস জারি করতে নির্দেশ দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আইন ও বিধি অনুসারে এই সমন জারির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ঘুষ হিসাবে আদায়ের পর ২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে করা এই মামলার রায়ে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ মো. মোতাহার হোসেন ২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর তারেককে বেকসুর খালাস দেন। আর তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে দেওয়া হয় সাত বছর কারাদণ্ড ও ৪০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড।দুর্নীতি দমন কমিশন ওইবছর ৫ ডিসেম্বর তারেকের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করে। শুনানি শেষে গতবছর ১৯ জানুয়ারি হাই কোর্ট দুদকের আপিল গ্রহণ করে আসামি তারেক রহমানকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেয়।এরপর আপিল শুনানির দিন ধার্যের জন্য বিষয়টি মঙ্গলবার আদালতের কার্যতালিকায় আসে।খুরশীদ আলম খান বলেন, ১৯ জানুয়ারি হাই কোর্ট আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করার দিন তারেকের নামে সমন দেওয়া হলেও তা জারি না হয়ে ফেরত আসে। এ কারণেই মঙ্গলবার আদালত এ আদেশ দেয়।এর আগে ১৯ জানুয়ারি হাই কোর্ট দুদকের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে। তখন তার প্রতি সমন দেওয়া হলেও তা জারি না হয়ে ফেরত আসায় মঙ্গলবার আদালত নতুন করে নোটিস জারির এই আদেশ দিল।১৪ ফেব্রয়ারির আগে যদি আদালতের ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয়ে যায়, তাহলে ওইদিন আপিলের ওপর শুনানি শুরু হতে পারে। এ মামলা দায়ের থেকে শুরু করে পুরো বিচার প্রক্রিয়াতেই অনুপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক। গত আট বছর ধরে তিনি যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। আত্মসমর্পণ করলে তিনি জামিন চাইতে পারবেন।