

মঙ্গলবার ● ২৪ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন » কালের বিবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে ঢেঁকি
কালের বিবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে ঢেঁকি
এম আমির হোসেন চরফ্যাশন: “ধান ভাঙ্গিয়ে চাউল করোরে তারা হুড়া করে, দুপুর বেলা রান্না হবে কামলারও লাগিয়ে”গ্রাম গঞ্জে এমন উক্তি করে ধান ভাঙ্গানো হত রান্না ঘর সংলগ্ন বসানো ঢেঁকিতে। কালের বিবর্তে ওই ধান ভাঙ্গানো ঢেঁকি এখন অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। আর অলস হচ্ছে গ্রাম গঞ্জের গৃহবধূরা। বর্তমান প্রযুক্তি ব্যবহার করে মিশিনের মাধ্যমে ধান মাড়াই ও চাউল করায় দিন দিন ওই সকল গাছের তৈয়ারী ঢেঁকি এখন আর চোখে পড়েনা।
এক সময়ে ভোলা জেলার প্রতিটি বাড়ি ও ঘরে ঘরে ছিল ঢেঁকি। ওই ঢেঁকি এখন হাজার বাড়ী ঘুরলেও একটি চোখে পড়বেনা। ডাক্তারী মতে ঢেঁকির ছাটাই ধান দিয়ে চাল তৈরী করা ভাতে অনেক পুষ্টি থাকে। আর মিশিনের মাধ্যমে ওই চাল তৈরীতে পুটিন বা পুষ্টির অংশটুকু থাকেনা। ফলে চাউল, শাখ সবজিসহ বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্যে ভেজাল থাকায় বিভিন্ন রোগ ব্যধীর পরিমান মানুষের শরীরে বেশী আক্রান্ত হয়। মেডিকেল অফিসার ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমাদের পিজা ও বাপ-দাদারা সকল খাদ্য খেয়েছে টাটকা, ছিলনা কোন ভেজাল দ্রব্য। আজ ওই গুলো ঢেঁকির মত অদৃশ্য।
জেলার চরফ্যাশন উপজেলার বিছিন্ন দ্বীপ চরমনোহরের গৃহবধূ আকলিমা বেগম বলেন, এই অঞ্চলের প্রতিটি ঘরে ঘরে ঢেঁকি ছিল, নবান্নের উৎসববের আমেজ ছিল সকলের ঘরে। “দপ্পর দপ্পর” ঢেঁকির শব্দে পুরো বাড়ী ছিল আনন্দের মুখর পরিবেশ। আজ ওই ঢেঁকিতে কেউ ধান না ভাঙ্গানোর ফলে ঢেঁকি দেখা যায়না। আমাদের ঢেঁকিও বিগত ৫বছর পূর্বে নষ্ট হয়ে গেছে। কাঠাল, জাম ও রেন্ট্রি গাছ দিয়ে ঢেঁকি তেরী করা হত ঢেঁকি। বড় গাছের গোড়ালী দিয়ে ঢেঁকির সামনে ধান-চাউল রাখার (গর্তের) মত রেখে ধান-ধানের গুরো, হলদি, মরিচ গুরোসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরী করা হত। এই গুলো (চাউল, গুড়ো তৈরী করে ইদুঁরের ভয়ে গর্তটি কোন ভারি যন্ত্র দিয়ে ডেকে রাখা হত। এই ভাবেই গ্রাম-গঞ্জে ঢেঁকির দিয়ে কাজ করতে গৃহবধূরা। এখন আর ওই দৃশ্য নজরে পড়েনা কারো।