শিরোনাম:
●   উদ্ভাস-উন্মেষ-উত্তরণ এখন দ্বীপ জেলা ভোলায় ●   ভোলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আ’লীগের সমর্থিত প্রার্থী বশীর উল্লাহ সভাপতি, সম্পাদক মাহাবুবুল হক লিটু নির্বাচিত ●   ভোলা জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় ●   চরফ্যাশনে দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়লো চট্টগ্রামগামী বাস ●   ডয়েসে ভ্যালী ও জাতীয় গণমাধ্যম ইনিস্টিটিউটের যৌথ আয়োজনে প্রিন্ট পত্রিকার সম্পাদকদের কর্মশালা সম্পন্ন ●   ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ●   ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ! ●   ভোলায় জমি দখলের খবর পেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেলেন প্রবাসী ●   ভোলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ●   আজ ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মোঃ হাবিবউল্লাহ’র ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী
ভোলা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভোলার সংবাদ
বুধবার ● ১৫ মার্চ ২০২৩
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » ভোলার অনুপম স্বাদের ‘মইষা দই’
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » ভোলার অনুপম স্বাদের ‘মইষা দই’
৫৫০ বার পঠিত
বুধবার ● ১৫ মার্চ ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ভোলার অনুপম স্বাদের ‘মইষা দই’

---

বিশেষ প্রতিনিধি: ধান-সুপারি-ইলিশের গোলা, এ তিনে ভোলা। শত বছর ধরে এ প্রবাদেই পরিচিত হয়ে আসছে দেশের একমাত্র দ্বীপজেলা। ভৌগোলিক কারণে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন কাড়ে প্রকৃতিপ্রেমীদের। সাগর আর নদীবেষ্টিত জেলার মানুষের জীবনমানে রয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। খাবারেও রয়েছে নিজস্বতা। এরই অংশ হিসেবে এ জেলা পরিচিতি পেয়েছে মহিষের দুধের কাঁচা টক দই।

মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর মধ্যবর্তী চরগুলোয় পালন করা হয় লক্ষাধিক মহিষ। এসব মহিষের দুধ থেকেই তৈরি করা হয় কাঁচা টক দই, যা স্থানীয়ভাবে ‘মইষা দই’ নামে পরিচিত। ভোলার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। বিয়ে, সামাজিক, পারিবারিক ভোজ কিংবা উৎসব-পার্বণের খাবারে দই পরিবেশন অনেকটা আবশ্যকীয়। অসাধারণ পুষ্টিগুণ ও স্বাদের জন্য এ দইয়ের খ্যাতি জেলার গন্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দেশব্যাপী। কবে থেকে ভোলায় মহিষের কাঁচা দই খাওয়ার প্রচলন- তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, খাবারটি কয়েকশ বছরের ঐতিহ্য বহন করছে। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং তথ্যপ্রযুক্তির হাত ধরে গত দুই দশকে এটির ব্যাপক প্রচার ও প্রসার ঘটেছে।

জেলার দু’পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর মধ্যে ছোট-বড় অর্ধশতাধিক চর রয়েছে। শত শত বছর ধরে এসব চরে মহিষ পালন করে আসছেন কৃষকরা। এখন বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে মহিষ পালন। চরজুড়ে এসব মহিষের পালকে স্থানীয়ভাবে ‘বাথান’ বলা হয়।

চরফ্যাশনের চর কুকরীমুকরীর প্রবীণ বাসিন্দা নুরুল হক জানান, মহিষের বাথান সারাদিন উন্মুক্ত চরে ( ঘাস) খাবার খায়। রাতে নির্দিষ্টস্থানে রাখা হয় মহিষগুলোকে। সকালে মহিষ থেকে সংগৃহীত দুধ কিনে নেন গোয়ালরা। এরপর তা চলে যায় দধির কারিগরদের কাছে।

ভোলা শহরের ঘোষপট্টিসহ বিভিন্ন এলাকায় অর্ধশতাধিক প্রসিদ্ধ দইয়ের দোকান গড়ে উঠেছে। এমন একটি প্রতিষ্ঠান আদর্শ দধি ভান্ডার। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম চলে আসা ব্যবসার হাল ধরেছেন আবদুল হাই। তিনি জানান, দিনের শুরুতেই নিজস্ব শ্রমিকের মাধ্যমে বিভিন্ন চর থেকে নির্ভেজাল দুধ সংগ্রহ করা হয়। পরে পোড়া মাটির বিশেষ টালিতে (হাঁড়ি) করে বসানো হয় দই। কোনো কিছুর মিশ্রণ ছাড়াই ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টার মধ্যে কাঁচা দুধ ক্ষীরের মতো বসে যায়।

তিনি আরো জানান, দুধের দামের ওপর নির্ভর করে দইয়ের দাম। দুধের দাম প্রায়ই ওঠানামা করে। বর্তমানে বাথান থেকে প্রতিলিটার দুধ ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে কেনা হয়। বর্তমানে দেড় লিটারের দইয়ের টালি ২৫০ এবং আড়াই লিটারের টালি ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মহিষ মালিক ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, এখানকার চরগুলোয় লক্ষাধিক মহিষ পালন করা হলেও সেখানে নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই। ঝড়-বাদলে অনেক মহিষ জোয়ারে ভেসে যায়। গত ২-৩ বছরে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহায়তায় গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি বেসরকারি সংগঠন সদর উপজেলার চর চককিমারা, চর চন্দ্র প্রসাদ ও চর মুন্সিতে ৩টি আধুনিক কিল্লা স্থাপন করেছে। ঝড়-বৃষ্টিতে মাটির উঁচু এসব কিল্লায় আশ্রয় নেয় মহিষগুলো। যদিও কিল্লার সংখ্যা একেবারেই অপর্যাপ্ত।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল জানান, গত বছর জেলায় ১৮ হাজার টন মহিষের দুধ উৎপাদন হয়েছে। প্রতিবছরই দুধ উৎপাদন বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মহিষের দুধ ও দইয়ের চাহিদাও। মনপুরা ও চরফ্যাসন থেকে দুধ পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলায় যাচ্ছে। এছাড়া ঢাকাতেও বেশিকিছু আউটলেটের মাধ্যমে মহিষের দই, ঘি ও মিষ্টি বিক্রি করা হচ্ছে। গরুর দুধের চেয়ে মহিষের দুধে আড়াইগুণ বেশি পুষ্টি উপাদান রয়েছে বলেও জানান তিনি।

-এবি/এফএইচ





আর্কাইভ


© 2024 দ্বীপের সাথে ২৪ ঘণ্টা Bholar Sangbad, সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।