বুধবার ● ২০ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » রাজনীতি » মুদ্রাপাচার মামলা: তারেক-মামুনের রায় বৃহস্পতিবার
মুদ্রাপাচার মামলা: তারেক-মামুনের রায় বৃহস্পতিবার
ঢাকা : বিএনপির সিনিয়র ভাইসচেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে দুদকের করা মুদ্রাপাচার মামলার আপিলের রায় বৃহস্পতিবার ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবে।মামুনের আইনজীবীর প্রত্যাশা, আপিলের রায়ে তার মক্কেল খালাস পাবেন। তবে এ মামলার রায় নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে নারাজ দুদকের কৌঁসুলি। একইভাবে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করবেন না বলে জানান দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খানও। নিম্ন আদালতে তারেকের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের আপিল এবং দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে মামুনের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ১৬ জুন এই বেঞ্চ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছিল।বুধবার প্রকাশিত হাই কোর্টের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় বৃহস্পতিবারের তারিখে ৪ নম্বর ক্রমিকে মামলাটি রায়ের জন্য রাখা হায়।ঘুষ হিসেবে আদায়ের পর ২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় এই মামলা করে দুদক।বিচার শেষে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ মো. মোতাহার হোসেন ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেন। আর তার বন্ধু ও ব্যবসার অংশীদার গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে দেওয়া হয় সাত বছরের কারাদন্ড; সঙ্গে ৪০ কোটি টাকা জরিমানা।মামলাটি দায়ের থেকে শুরু করে পুরো বিচার প্রক্রিয়াই অনুপস্থিত ছিলেন তারেক। গত আট বছর ধরে তিনি যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। আর মামুন জরুরি অবস্থায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই কারাগারে।তারেকের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে দুদক ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর আপিলের আবেদন করে। শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি হাই কোর্ট দুদকের আপিল গ্রহণ করে আসামি তারেককে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেয়।লন্ডনপ্রবাসী তারেক না ফেরায় তার বিরুদ্ধে সমন জারি করে তা তার লন্ডনের ঠিকানায় পাঠানো হয়।কিন্তু তাতেও খালেদা জিয়ার বড় ছেলের সাড়া মেলেনি। দুদকের করা ওই আপিলের সঙ্গে সাজার রায়ের বিরুদ্ধে মামুনের করা আপিলও শুনানির জন্য তালিকায় আসে। এরপর হাই কোর্টে ৪ মে আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়ে শেষ হয় ১৬ জুন।আদালতে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শহীদুল ইসলাম খান।তারেক রহমান পলাতক থাকায় তার পক্ষে আপিলে কোনো আইনজীবী ছিলেন না বলে খুরশীদ আলম খান জানান। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর দায়ের করা এ মামলায় তারেক-মামুনের বিচার শুরু হয় ২০১১ সালের ৬ জুলাই।এ মামলায় অভিযোগ করা হয়, টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ নির্মাণ কনস্ট্রাকশনস নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন মামুন। ২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে �বিভিন্ন পন্থায়� ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকে মামুনের অ্যাকাউন্টে পাচার করা হয়, যার মধ্যে ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা তারেক খরচ করেন বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়।জজ আদালতের রায়ে বলা হয়, ওই টাকা খরচ করার কথা তারেক রহমান অস্বীকার করেননি। ২০০৭ সালে দুদকে দাখিল করা তারেকের হিসাব বিবরণীতে তার উল্লেখ রয়ছে। কিন্তু তিনি যে মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ করেছেন তা প্রমাণ হয়নি। এ মামলার দুইজন আসামির মধ্যে তারেক রহমান পলাতক থাকায় তার পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। অপর আসামি গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, �দুদক এ মামলাটিতে আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগে দায়ের করেছে তার উপাদান এখানে নেই। কারণ অর্থ পাচার মামলা করার অন্যতম উপদান হলো দেশের টাকা বিদেশে পাঠানো। কিন্তু এ মামলার অভিযোগে সেটি অনুপস্থিত। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখানে সিঙ্গাপুরের ব্যাংকে টাকা লেনদেনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এদেশ থেকে বিদেশে কোনো টাকা পাচারের অভিযোগ নেই। আমরা এ বিষয়গুলো আদালতের কাছে তুলে ধরেছি।কায়সার কামাল বলেন, আমরা আশা করছি এ মামলায় আমাদের আসামি খালাস পাবেন এবং ন্যায় বিচার পাব আমরা। অর্থ পাচার হওয়ার সময় এ মামলার অন্যতম আসামি তারেক রহমান দেশের বাইরে ছিলেন বলেও দাবি করেন এই আইনজীবী।বিচারিক আদালতে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৫ ডিসম্বর আপিলে আবেদন করে দুদক। শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট তাদের আপিল গ্রহণ করে আসামি তারেক রহমানকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। ঘুষ হিসেবে আদায়ের পর ২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় এই মামলা করে দুদক।২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে �বিভিন্ন পন্থায়� ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকে মামুনের অ্যাকাউন্টে পাচার করা হয়, যার মধ্যে ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা তারেক খরচ করেন বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়।বিচার শেষে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ মো. মোতাহার হোসেন ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেন।