শুক্রবার ● ৮ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিল ওয়ার্ল্ড ব্যাংক
বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিল ওয়ার্ল্ড ব্যাংক
ডেস্ক: নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায়। গতকাল বুধবার বিশ্বব্যাংক এ তালিকা প্রকাশ করেছে। বিশ্বব্যাংক মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করেছে। একটি হচ্ছে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ, অন্যটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশ এখন থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিচিত হবে।
প্রতিবছর ১ জুলাই বিশ্বব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় অনুসারে দেশগুলোকে চারটি আয় গ্রুপে ভাগ করে।
যাদের মাথাপিছু জাতীয় আয় ১,০৪৫ ডলার বা তার নিচে, তাদের বলা হয় নিম্ন আয়ের দেশ। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকে এ তালিকাতেই ছিল।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচনে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। সরকারের ১০ বছরের প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার কথা বলা আছে। এর আগেই মধ্যম আয়ের দেশ হলো বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ছাড়াও নতুন তালিকায় আরো তিনটি দেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের তালিকায় নতুন করে ঢুকতে পেরেছে। এগুলো হলো- কেনিয়া, মিয়ানমার ও তাজিকিস্তান।
সার্কভুক্ত ভারত ও পাকিস্তান নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে অন্তর্ভুক্ত। সব মিলিয়ে এখন নিম্ন আয়ের দেশ ৩১টি, নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ ৫১টি, উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ ৫৩টি এবং উচ্চ আয়ের দেশ ৮০টি।
বিশ্বব্যাংক ‘এটলাস মেথড’ নামের বিশেষ এক পদ্ধতিতে মাথাপিছু জাতীয় আয় পরিমাপ করে থাকে। একটি দেশের স্থানীয় মুদ্রায় মোট জাতীয় আয়কে (জিএনআই) মার্কিন ডলারে রূপান্তরিত করা হয়।
এক্ষেত্রে তিন বছরের গড় বিনিময় হারকে সমন্বয় করা হয়, যাতে করে আন্তর্জাতিক মূল্যস্ফীতি ও বিনিময় হারের ওঠা-নামা সমন্বয় করা সম্ভব হয়।
বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়ন অনুযায়ী, এই পদ্ধতিতে কোনো দেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় ১,০৪৫ ডলারে উন্নীত হলে সেই দেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের স্তরে অবস্থান করে। বাংলাদেশের বর্তমান মাথাপিছু আয় ১,৩০০ ডলারের বেশি। সুতরাং বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ।
কোনো দেশের মাথাপিছু আয় ১,০৪৬ ডলার থেকে অনূর্ধ্ব ৪,১২৫ ডলার হলে সেটা নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ। আর মাথাপিছু জাতীয় আয় ৪,১২৫ ডলার থেকে অনূর্ধ্ব ১২,৭৩৬ ডলার হলে তখন ওই দেশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ বলা যাবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে ভিয়েতনামের প্রশংসা করে বলা হয়, নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে দেশটি উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে।
বিশ্বব্যাংকের মানদণ্ড অনুযায়ী কোনো দেশের মাথাপিছু আয় ১২,৭৩৬ ডলার হলে তাকে উচ্চ আয়ের দেশ ধরা হয়। এ বছর আর্জেন্টিনা, হাঙ্গেরি, ভেনেজুয়েলা ও সেচেলেস উচ্চমধ্য আয়ের দেশ থেকে উচ্চ আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে।
সবচেয়ে নিম্ন মাথাপিছু জাতীয় আয়ের দেশ হচ্ছে মালায়ি ও সর্বোচ্চ মাথাপিছু জাতীয় আয়ধারী দেশ হচ্ছে মোনাকো।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বিশ্ব অর্থনৈতিক ভূগলের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৯৪ সালে যেখানে বিশ্বের ৬৪টি নিম্ন আয়ের দেশে ৩১০ কোটি লোক (বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬৪.১ শতাংশ) বাস করতো ২০১৪ সালে সেটি ৩১টি দেশে ৬১ কোটি ৩০ লাখ লোকের (বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৮.৫ শতাংশ) মধ্যে নেমে এসেছে।
নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে চলে গেলেও বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকাতেই থাকবে। ফলে এলডিসির সুবিধাগুলোও বহাল থাকবে। এ তালিকা থেকে বেরোতে হলে তিনটি সূচক অতিক্রম করতে হবে। যেমন: অর্থনীতির নাজুকতার সূচক, মানব উন্নয়ন সূচক ও মাথাপিছু আয়ের সূচক।