রবিবার ● ২৬ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » খেলা » একটি জয় দরকার মেসির
একটি জয় দরকার মেসির
ডেস্ক : শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে লিওনেল মেসির আর একটি জয় দরকার। রোববার (বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল) সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আসছে মেসির সামনে। ২৯ বছর বয়সী মেসি কেবল বর্তমান সময়ের নয়, সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের একজন বিবেচিত হচ্ছেন। কিন্তু ক্লাব ফুটবলে তার যত অর্জন তার ছিটে ফোঁটাও নেই আর্জেন্টিনা দলের হয়ে। ২০০৪এ ১৭ বছর বয়সে শুরু। এরপর একের পর এক রেকর্ড ভাঙা গড়ায় খেলায় মত্ত এ তারকা। টানা চারসহ পাঁচবারের বিশ্বসেরা ফুটবলার হওয়া মেসির হাতে আটবার উঠেছে লা লিগা শিরোপা। ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপাও উঠেছে চারবার। ব্যাক্তিগত অর্জনের তালিকাটা ক্রমেই দীর্ঘতর হচ্ছে। কিন্তু আক্ষেপ কেবল একটাই, দেশের জন্য সাফল্য আনতে পারছেন না। ২০১৪তে বিশ্বকাপ আর ২০১৫তে কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেও শিরোপা জেতা হয়নি তার। টানা দুটি স্বপ্নভঙ্গের পর আবার সুযোগ তার দ্বারে। আর নিজের খেলাটাও খেলছেন দুর্দান্ত। সুযোগটা শিরোপা জয়ের পাশাপাশি প্রতিশোধেরও। গতবার যে চিলির কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয় এবারও সামনে সেই চিলি। মেটলাইফ স্টেডিয়ামে আজ মেসির সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। এতে উত্তীর্ণ হলেই মিলতে পারে ‘গ্রেটেস্ট’ বিশেষণ। এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, আমি মনে করি এই গ্রুপ সম্মিলিতভাবে যা করেছেÑ টানা তিন ফাইনালে উঠে, তা সত্যি প্রশংসনীয়। আশা করি আমরা জয় দিয়ে এর পরিসমাপ্তি টানতে পারবো। কারণ আমরা এর যথার্থ ভাগীদার।’ আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরে জন্ম মেসির। মাত্র ১৩ বছর বয়মে পাড়ি জমান স্পেনের বার্সেলোনায়। সেখানে নাম লেখান লা মাসিয়া একাডেমিতে। সেই কৈশোর থেকেই বিশেষত্ব নিয়ে নজর কাড়েন সবার। ডান, বাম, মাঝ সব খান দিয়েই প্রতিপক্ষের রক্ষণব্যুহ ভেদ করে চমকে দেন সবাইকে। এরপর সুযোগ আসে মূল দলে খেলার। ডাচ কোচ ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডের অধীনে তার শুরু। স্থানীয় প্রতিপক্ষ এসপানিয়লের বিপক্ষে ডেকোর বদলি হিসেবে মাঠে নামেন তিনি দ্বিতীয়ার্ধে। রোনালদিনহো, স্যামুয়েল ইতো, জাভির মতো তারকাদের পাশে সমান উজ্জ্বল দেখায় মেসিকে।
আর্জেন্টাইন হওয়ার কারণে মেসিকে তুলনা করা হতে থাকে দিয়েগো ম্যারাডোনার সঙ্গে। কিন্তু ম্যারডোনা ১৯৮৬তে বিশ্বকাপ শিরোপা এনে দেন নিজ দেশকে। পরের বারও হন রানার্স আপ। আর দেশের বাইরে তার তুলনা হয় পেলের সঙ্গে যিনি ব্রাজিলের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ জয়ের বিরল কৃতিত্বের মাইল। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর অস্তিত্ব মেনে নিয়ে সন্দেহাতিতভাবে এই মুহর্তে বিশ্বের সবচেয়ে সেরা ফুটবলার। তার অর্জন তাকে অতিমানব হওয়ার কাছাকাছি নিয়ে গেছে। চোট-আঘাত তাকে মাঝে মধ্যে মাঠের বাইরে না রাখলে তার অর্জন হযতো আরও সমৃদ্ধ হতো। তবে সমালোচকার যখনই মেসিকে আলোচনা করেন তখনই আঙুর দিয়ে নজরে আনেন তার দেশের হয়ে কিছু অর্জন করতে না পারার বিষয়টি। কিন্তু এবার গোল করে তিনি দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ গোলের মালিক বনে গেছেন। ৫৫টি আন্তর্জাতিক গোল এখন তার নামের পাশে।
এবারের কোপায় আর্জেন্টিনাই ফেভারিট। ১৯৯৩ সালের পর তারা আর কোন শিরোপা ঘরে নিতে পারেনি। এবার মরিয়া সেই খরা কাটাতে। কোপা আমেরিকা এমন এক প্রতিযোগিতাম যেটা পেলে বা ম্যারডোনা কেউই জিততে পারেন নি। মেসি এবার তা জিততে পারেন- মাত্র ৯০ বা ১২০ মিনিটের মধ্যে। সময় এখন মেসিরই। এমন সুযোগ আর নাও পেতে পারেন তিনি।