শুক্রবার ● ২৪ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » ভোলায় ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে টুপি কারিগররা
ভোলায় ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে টুপি কারিগররা
আদিল হোসেন তপু: ঈদকে সামনে রেখে ভোলার ৩০ টি গ্রাম এখন টুপি তৈরির গ্রাম পরিণত হয়েছে। এই সব গ্রামের হাজার মহিলা কারিগর এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন টুপি তৈরিতে। দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এখানকার তৈরি টুপি রফতানি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। টুপি এই চাহিদা সারা বছর থাকলেও ঈদ মৌসুমে এর চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তবে টুপি তৈরি করে সঠিক দাম পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ রয়েছে কারিগরদের। আর সরকারের সহযোগীতা পেলে এই খাতটি আরো প্রসার ঘটবে বলে মনে করছেন অনেক কারিগরার।
ঈদকে সামনে রেখে ভোলার টুপি পল্লীর নারীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে। বছরের অন্য সময় টুপির চাহিদা কম থাকলেও ঈদ আসলেই যেন টুপির চাহিদা বেরে যায় দ্বিগুণ।
ফলে টুপি পল্লীর নারীদের কাজের চাপও বেড়ে যায়। ঈদের আগে যেখানে একটি টুপি তৈরি করতে সময় লাগে ২০-২৫ দিন সেখানে ঈদের সময় রাত-দিন পরিশ্রম করে ১০-১২ দিনের মধ্যে একটি টুপি তৈরি করছে কারিগররা।
ঈদে আগে টুপি তৈরি করে প্রতি মাসে আয় করতো ১ হাজার টাকা থেকে ১২ শ টাকা। সেখানে ঈদ মৌসুমে এ আয় বেড়ে দাড়িয়েছে দ্বিগুণ। আগে যে পরিবারগুলো শুধু পুরুষ সদস্যদের আয়ের উপর নির্ভরশীল ছিল, সেসব পরিবারের নারীরা এখন টুপি সেলাই করে করে বাড়তি আয় করে সংসারের সচ্ছলতা এনেছেন।
ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা, ভেলুমিয়া, ধনিয়া ,আলীনগর সহ প্রায় ৩০ টি গ্রামের নারীরা এখন রাত দিন সেলাই করছে টুপি। চুক্তিতে নেয়া এ সব টুপি প্রস্তুুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের নির্ধারিত শ্রমের মূল্য দিয়ে পাইকাররা ক্রয়করে তা চট্রগ্রাম, রংপুর, ফেনী হয়ে মধ্যপ্রাচ্য সহ বিভিন্ন দেশে বিক্রি করছেন।
টুপি কারিগর মিনারা বেগম বলেন, ২০০৬ সালে বাপ্তা ইউনিয়নে ফিরোজ মিয়ারও তার স্ত্রী নাজমা বেগম এর কাছ থেকে টুপি তৈরির কাজ শিখেছেন। সেখান থেকে কাজ এনে এখন আমার আশেপাশের কয়েক গ্রামের শতাধিক নারীদের টুপির কাজ দেই। এখন আমিও সাবলম্বী তারাও সাবলম্বী।
টুপি সেলাই কারী মিনারা বেগম, লাইজু, বিবি আমেনা সহ আরো অনেকেই বলেন, অল্প পুজিঁতে বেশি লাভ পাওয়া যায় বলেই সবাই টুপি তৈরি করে থাকে। বিশেষ করে আগে যেসব নারী বাড়ীতে অলস সময় কাটাতো তারাই এখন অন্যান্য কাজের পাশাপাশি টুপি তৈরি করে মাসে দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকার মতো আয় করে সংসারের বাড়তী আয়ের ব্যাবস্থা করছে। এছাড়াও স্কুল কলেজের মেয়েরাও টুপি তৈরি করে তাদের পড়ালেখার খরচ চালাতে পাড়ছে।
আবার অনেকের অভিযোগ রয়েছে, টুপি তৈরি করে তাদের সংসারের আয়ের ব্যবস্থা হলেও ন্যায মজুরি পাচ্ছেনা এই নারী কারিগরদের। তবে সরকারে সহযোগীতা পেলে এই খাতটি আরো প্রসার করবে বলে মনে করছেন কারিগরার।
এদিকে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জেবুন্নেছা বলেন, টুপি তৈরির শিল্পিদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে তাদেরকে সরকারি ভাবে ঋণসহায়তা জন্য তিনি চেষ্টা করবেন। এছাড়াও নারী উন্নয়নের যেসব উন্নয়ন সভা হয় সেখানেও আমি এই টুপি কারিগরদের স্বল্পমূল্য ঋণ দেয়ার জন্য প্রস্তাব করবো বলে জানান।
এফএইচ