শিরোনাম:
●   ভোলার কর্ণফুলী-৩ লঞ্চে চাঁদপুরের মোহনায় অগ্নিকাণ্ড ●   উদ্ভাস-উন্মেষ-উত্তরণ এখন দ্বীপ জেলা ভোলায় ●   ভোলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আ’লীগের সমর্থিত প্রার্থী বশীর উল্লাহ সভাপতি, সম্পাদক মাহাবুবুল হক লিটু নির্বাচিত ●   ভোলা জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় ●   চরফ্যাশনে দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়লো চট্টগ্রামগামী বাস ●   ডয়েসে ভ্যালী ও জাতীয় গণমাধ্যম ইনিস্টিটিউটের যৌথ আয়োজনে প্রিন্ট পত্রিকার সম্পাদকদের কর্মশালা সম্পন্ন ●   ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ●   ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ! ●   ভোলায় জমি দখলের খবর পেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেলেন প্রবাসী ●   ভোলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
ভোলা, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলার সংবাদ
মঙ্গলবার ● ১২ এপ্রিল ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরিঘাটে পচঁছে কোটি টাকার তরমুজ, উদাসীন কর্তৃপক্ষ
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরিঘাটে পচঁছে কোটি টাকার তরমুজ, উদাসীন কর্তৃপক্ষ
৪৯৭ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ১২ এপ্রিল ২০১৬
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরিঘাটে পচঁছে কোটি টাকার তরমুজ, উদাসীন কর্তৃপক্ষ

---

স্টাফ রিপোর্টার: ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে নিয়মিত ফেরি চলাচল করছে না। গুরুত্বপূর্ণ রুট দিয়ে ফেরি চলাচল না করায় ভোলা লক্ষ্মীপুর জেলার দুই পাড়ে তরমুজবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়েছে। এতে করে উভয় পাড়েই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। গত - দিন ধরে ফেরিঘাটে অবস্থান করছে তরমুজবাহী প্রায় তিন শতাধিক ট্রাকসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। ফেরিঘাটেই পচঁছে প্রায় ১০ কোটি টাকার তরমুজ।

গত কয়েক দিন ধরে ফেরিঘাটে অবস্থার সৃষ্টি হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে পরিবহন শ্রমিকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এদিকে বিষয়ে ফেরি কর্তৃপক্ষ বলছে, ফেরি সঙ্কট জোয়ার-ভাটার কারণে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে নিয়মিত ফেরি চলাচল করছে না। অপরদিকে পরিবহন শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন, ফেরি চলাচলে চরম অব্যবস্থাপনা ফেরিঘাটে চাঁদাবাজির কারণে ফেরির চালকরা নিয়মিত ফেরি চালাচ্ছেন না।

মঙ্গলবার সকালের দিকে ভোলা শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে ইলিশা ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার জংশন বাজারের ইলিশা মডেল কলেজের সামনে থেকে অন্তত ১১৩টি তরমুজবাহী ট্রাকসহ শতাধিক বিভিন্ন যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। গত - দিন ধরে এসব যানবাহন আটকা পড়ে রয়েছে বলে জানান পরিবহন শ্রমিকরা। রাস্তার এক পাশ চাপিয়ে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাড়িয়ে রয়েছে এসব মালবাহী ট্রাক। সেখানে প্রায় অর্ধশত পরিবহন শ্রমিক লাঠি-সোটা হাতে নিয়ে রাস্তায় দাড়িয়ে রয়েছেন। সাংবাদিকের উপস্থিতিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা। বিভিন্ন অভিযোগ করতে থাকেন শ্রমিকরা। কথা হয় বেশ কয়েকজন ট্রাক চালক, হেলপার পণ্যের মালিকদের সঙ্গে। ভোলার দৌলতখান উপজেলার ট্রাকচালক জাহাঙ্গীর জানান, তিনি চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থেকে প্রায় লাখ টাকার তরমুজ নিয়ে গত দিন আগে ইলিশা ফেরিঘাটে এসেছেন। যাবেন কুমিল্লায়। কিন্তু দিনেও গন্তব্যস্থলে যেতে না পারায় তার সব তরমুজ পঁচে যাচ্ছে।

জাহাঙ্গীর অভিযোগ করে বলেন, নির্ধারিত টোল ছাড়াও ফেরি কৃষাণীর মাস্টার (চালক) আমির হোসেন ট্রাক প্রতি ২০০ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তার দাবিকৃত ওই চাঁদার টাকা না দেয়ায় ফেরিচালক আমার ট্রাক ফেরিতে বহন করছেন না। এভাবে যারা চাঁদার টাকা দিচ্ছেন না তাদের মালবাহী ট্রাক ফেরিতে তুলছেন না বলেও অভিযোগ এই ট্রাকচালকের।

তরমুজ চাষি কামাল হোসেন জানান, চরফ্যাশন থেকে তিনি প্রায় আড়াই লাখ টাকার তরমুজ নিয়ে গত বুধবার ইলিশা ফেরিঘাটে আসেন। যাবেন চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গিবাজারে। তিনি বলেন, নিয়মিত ফেরি চলাচল না করায় দীর্ঘ দিন ধরে ট্রাকের ভেতর পঁচে যাচ্ছে তার তরমুজ।

ট্রাকচালক বাবুল, হেলপার ফয়সাল, তরমুজ চাষী নুরুল ইসল, ইলিয়াস, হারুন অর রশিদসহ পরিবহন শ্রমিক তরমুজ চাষীরা জানান, ফেরি চলাচলে অনিয়ম, কৃষাণী ফেরির মাস্টারের চাঁদাবাজি ফেরিঘাটে চরম অব্যবস্থাপনার কারণে গত - ধরে শুধুমাত্র ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে তরমুজবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী দেড় শতাধিক যানবাহন আটকা পড়েছে। এতে প্রায় কোটি টাকার তরমুজ পচে যাচ্ছে। একইভাবে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর হাটে দেড় শতাধিক তরমুজবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। সেখানেও প্রায় কোটি টাকার তরমুজ পঁচছে বলেও জানান পরিবহন শ্রমিকরা।                    

এদিকে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নে বিআরটিসির ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ের নৈশ প্রহরী শাহজাহান হাওলাদার জানান, বিক্ষুব্ধ পরিবহন শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল সহকারে তাদের কার্যালয়ে পঁচা তরমুজ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। তারা ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরির ব্যবস্থাপক আবু আলম ফেরি কৃষাণীর মাস্টার আমির হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন  স্লোগান দিতে থাকেন এবং তাদের অপসারণ দাবি করেন।

সরেজমিন পরিদর্শনকালেও ফেরিঘাটে ইজারাদারদের প্রতিনিধি, আওয়ামীলীগের কিছু পাতি নেতা, টাউট-বাটপার বিআরটিসির কিছু কর্মচারিদের দৌরাত্ম দেখা গেছে। সময় পুলিশের ভূমিকা ছিল অনেকটা নিরব দর্শকের মত। তাদের কাছে যেন অসহায় হয়ে পড়েছেন সাধারণ যাত্রী পরিবহন শ্রমিকরা।       

ফেরি কৃষাণীর মাস্টার আমির হোসেন তার বিরুদ্ধে আনা পরিবহন শ্রমিকদের চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বাড়ি ভোলা সদরে। আমি এখানকার স্থানীয় লোক। আমার ধরনের কোন রেকর্ড নাই। আপনি আমার বিরুদ্ধে যদি ধরনের কোন অভিযোগ পান তাহলে নাকে খোদ দিয়ে আমি ভোলা থেকে চলে যাব।                    

ব্যাপারে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরি সার্ভিসের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আলম বলেন, শুরু থেকে রুটে ৩টি ফেরি কনকচাপা, কৃষাণী কস্তুরী নিয়মিত চলাচল করে আসছিল। এর মধ্যে ফেরি কস্তুরি গত বৃহস্পতিবার চাঁদপুরে নিয়ে গেছে কর্তৃপক্ষ। আর ইঞ্জিনের সমস্যার কারণে গত শনিবার থেকে ফেরি কৃষাণীর চলাচল বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে কনকচাপা নামে ১টি ফেরি রুটে চলাচল করছে। সেটিও জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে চলছে। তাই ভোলা লক্ষ্মীপুরের দুই পাড়েই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে ফেরিতে পরিবহন পারাপার করতে কয়েকদিন সময় লেগে যাচ্ছে। এদিকে পুনরায় ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ঘাট ভেঙ্গে যাওয়া বর্তমানে মঙ্গলবার  বিকাল থেকে বেদুরিয়া ফেরি ঘাট থেকে লক্ষ্মীপুরের উদ্দেশ্য ফেরি চলাচল শুরু করা হয়েছে। সেটিও জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে তিন ঘন্টার পথ ঘুরে যেতে থেকে ঘন্টা সময় লাগছে।

উল্লেখ্য, ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে গেলে উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, যশোর, বরিশাল, ময়মনসিংহসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়বেন ওই সব অঞ্চলের যাত্রী পরিবহন শ্রমিকরা।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

© 2024 দ্বীপের সাথে ২৪ ঘণ্টা Bholar Sangbad, সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।