বুধবার ● ৬ এপ্রিল ২০১৬
প্রথম পাতা » জেলার খবর » আমাদের জীবন থেকে একটি বছর ফিরে দাও!
আমাদের জীবন থেকে একটি বছর ফিরে দাও!
এম আমির হোসেন তজুমদ্দিন থেকে ফিরে • আমার পিতা গরীব। সামান্য বেতনে চাকুরী করেন বিধায় প্রবেশ প্রত্রের ১৬০০টাকা দিতে পারেনি। তাই তাই এবছরের আলীম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়নি। আমাদের জীবন থেকে একটি বছর ফিরে দাও! বুধবার কান্না জড়িত কণ্ঠে এ কথা বলেন তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর সিনিয়র মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী জান্নাত বেগম।সূত্রে জানা গেছে, ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা কামাল মাহমুদের দাবিকৃত প্রবেশপত্র বাবদ জনপ্রতি আটশত টাকা করে পরিশোধ করতে না পারায় আলিম পরিক্ষায় অংশ দিতে দেয়নি দুই সহোদর বোন মোসাঃ জান্নাত ও খাদিজাকে। এ নিয়ে উপজেলার শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা জানতে পেরে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ ও হল সচিব মাওঃ কামাল মাহমুদকে অফিসে তলব করেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে অধ্যক্ষ প্রথম দিনের পরিক্ষায় দুই শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলেও পরবর্তি পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ করাতে ব্যস্ত হয়ে পরেছেন। পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক সুত্রে জানা যায়, তজুমদ্দিন হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী মোঃ আলাউদ্দিন এর দুই মেয়ে মোসাঃ জান্নাত ও মোসাঃ খাদিজা আক্তার চাঁদপুর সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে ২০১৬ সালে আলিম পরিক্ষার্থী। একই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওঃ কামাল মাহমুদ কেন্দ্র সচিব এর দায়িত্ব নিয়ে প্রবেশ পত্র বাবদ জন প্রতি আটশত টাকা ধার্য করেন। ধার্যকৃত টাকা পরিশোধ করতে না পারায় প্রথম দিনের কোরআন পরীক্ষায় অংশ নিতে দেননি জান্নাত ও খাদিজাকে। বিষয়টি তাদের পিতা আলাউদ্দিন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনি তার কার্যালয়ে তলব করেন মাদ্রাসা অধ্যক্ষ কামাল মাহমুদকে। এই ঘটনায় উপজেলার অভিভাবক ও সচেতন মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিভাবক আলাউদ্দিন জানান, পাবিবারিক অসুবিধার কারণে দুই মেয়ের প্রবেশ পত্রের নির্ধারিত ফি বাবত ১৬০০ টাকা সঠিক সময়ে জমা দিতে পারিনাই। সামান্য এই টাকার জন্যে আমার দুই মেয়েকে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে তাদের ভবিষ্যত অন্ধকার করে দিয়েছেন কামাল হুজুর। এখন আবার তিনি দুই মেয়েকে পরীক্ষা দিতে অনুরোধ করছেন। তিনি আরও জানান, পরীক্ষার আগের দিন শনিবার আমি নিজে কামাল মাওলানার কাছে গিয়ে রবিবার বিকেলের মধ্যে টাকা পরিশোধ করবো বলে অনুরোধ করেছিলাম তিনি তা মানেননি। আমাকে রাগ করে তাড়িয়ে দেন। তবুও পরীক্ষার দিন সকালে পরীক্ষা দিতে মেয়েদেরকে পাঠিয়ে টাকার জন্য আমি বোরহানউদ্দিন যাই। টাকা নিয়ে সন্ধ্যায় বাসায় এসে দেখি মেয়েরা কাঁন্না কাটি করছে। আমি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে’র কাছে বিচার চাই এবং আমাদের এমপি কে বিষয়টি জানাবো। তজুমদ্দিন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহিদুল ইসলাম জানান, প্রবেশ পত্র বাবদ অথবা পরীক্ষা চলাকালিন কোন টাকা আদায় করার নিয়ম নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেন্দ্র সচিব ও চাদপুর সিনিঃ মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মাওঃ কামাল মাহমুদের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ দুই ছাত্রী আগামী দিন থেকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করবে। প্রবেশ পত্র বাবদ ৮০০ টাকা প্রথম দিন অনুপস্থিত থেকে দ্বিতীয় দিন পরীক্ষা দিলে ফলাফল কি হবে জানতে চাইলে, তিনি তার সাথে দেখা করতে বলে ফোন কেটে দেন।তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা জালাল উদ্দীন জানান, দুই ছাত্রী সহ অভিভাবক আমার অফিসে এসে ঘটনাটি জানিয়েছে, এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।