শিরোনাম:
●   ভোলার কর্ণফুলী-৩ লঞ্চে চাঁদপুরের মোহনায় অগ্নিকাণ্ড ●   উদ্ভাস-উন্মেষ-উত্তরণ এখন দ্বীপ জেলা ভোলায় ●   ভোলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আ’লীগের সমর্থিত প্রার্থী বশীর উল্লাহ সভাপতি, সম্পাদক মাহাবুবুল হক লিটু নির্বাচিত ●   ভোলা জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় ●   চরফ্যাশনে দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়লো চট্টগ্রামগামী বাস ●   ডয়েসে ভ্যালী ও জাতীয় গণমাধ্যম ইনিস্টিটিউটের যৌথ আয়োজনে প্রিন্ট পত্রিকার সম্পাদকদের কর্মশালা সম্পন্ন ●   ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ●   ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ! ●   ভোলায় জমি দখলের খবর পেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেলেন প্রবাসী ●   ভোলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
ভোলা, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ভোলার সংবাদ
শুক্রবার ● ৪ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » জাতীয় » আ.লীগ বিএনপিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি: সহিংসতার আশঙ্কা
প্রথম পাতা » জাতীয় » আ.লীগ বিএনপিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি: সহিংসতার আশঙ্কা
৪৭১ বার পঠিত
শুক্রবার ● ৪ মার্চ ২০১৬
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

আ.লীগ বিএনপিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি: সহিংসতার আশঙ্কা

 ---

ঢাকা : আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিপুলসংখ্যক বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বদ্বীতা করছেন। প্রথম দুধাপে অনুষ্ঠেয় ১ হাজার ৩৮১টি ইউপি নির্বাচনে এখন পর্যন্ত দুদলের ৭৭৬ জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের আছেন ৫৯২ জন এবং বিএনপির ১৮৪ জন। তার সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। ত্যাগী ও দলের প্রতি নিবেদিত নেতাদের বাদ দিয়ে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ায় মূলত এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বিগত পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না নেয়ায় এবার দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে অনেকেই প্রার্থী হয়েছেন। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যেসব এলাকায় বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই ও আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছে, সেসব এলাকায় ব্যাপক আকারে সহিংসতা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এ জন্য আগে থেকেই এসব এলাকায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনের সুপারিশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় এ আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।এদিকে বৈঠকে সহিংসতার দায়ভার পুলিশের ঘাড়ে চাপিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকীব উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, সহিংসতার দায়-দায়িত্ব পুলিশের ওসিদের নিতে হবে। তীক্ষ্ দৃষ্টি রাখতে হবে। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। কেন্দ্র দখল করতে দেয়া যাবে না। গুলি থাকা অবস্থায় যাতে কোনো কেন্দ্র দখল করতে না পারে কেউ। সর্বশেষ বুলেটটি ব্যবহার করে হলেও কেন্দ্র বাঁচাতে হবে। সভায় একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, অন্য যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে ইউপি নির্বাচনে অপ্রীতিকর অবস্থা বেশি ঘটতে পারে। পরিস্থিতি সরকারের ওপর চাপাতে ২০ দল তৎপর থাকবে বলেও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অভিমত। বৈঠকে রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। এ ছাড়া সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কয়েক নেতা গ্রেফতারে পুলিশকে প্রভাবিত করছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। পুরো নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করা বড় ধরনের চাপ মন্তব্য করে নির্বাচনকে পুনর্বিন্যস্ত করার দাবি তোলেন পুলিশ কর্মকর্তারা। বৈঠক সূত্র জানায়, শুরুতে গোয়েন্দা সংস্থার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। সেই এলাকায় তাদের নিজেদের মধ্যে মারামারি বেধে যেতে পারে। এটা নির্বাচনে আরেকটি মাত্রা তৈরি হবে। এটা যেন না করতে পারে, সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। এ ছাড়া গ্রেফতার অভিযান আরো জোরদার করতে হবে। একই আশঙ্কা প্রকাশ করে অন্য আরেকটি শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা। ওই সংস্থার উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা তার বক্তব্যে বলেন, বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী নেই, কিন্তু আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী আছে। ওইসব এলাকায় আওয়ামী লীগ নিজেরাই সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। আরেকটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি বলেন, এই নির্বাচন দলীয় পর্যায়ে হওয়ার কারণে পাড়ায় পাড়ায় পারস্পরিক দ্বদ্ব দলীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় এ নির্বাচনে অপ্রীতিকর ঘটনা বেশি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ওপর হামলা হতে পারে। এজন্য তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা জোরদার করা দরকার। ২০দলীয় জোট পরিস্থিতি সরকারের ওপর চাপাতে পারে। প্রভাবশালী নেতাদের এলাকায় একই দল থেকে একাধিক প্রার্থী থাকায় গ্রপিং তৈরি হতে পারে বলেও মত দেন তিনি। গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা আরো বলেন, মিডিয়া অপপ্রচার করলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায় কিনা, সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের ভাবা উচিত। এ ছাড়া পার্বত্য এলাকায় নিরাপত্তা সমস্যা আছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা প্রভাব বিস্তার করে সংঘাতময় পরিবেশ তৈরি করতে পারে। তাই পুরো পার্বত্য অঞ্চলের সব ইউপিতে একই দিনে নির্বাচন হওয়া উচিত। না হলে সন্ত্রাসীরা এক এলাকার নির্বাচন শেষ করে অন্য এলাকায় গিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করবে।বৈঠক সূত্র জানায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন আরো বাড়ানোর পক্ষে মত দেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা। যদিও পুলিশ বলছে, পুরো নির্বাচনের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ সদস্য নেই। তাই নির্বাচনকে পুনর্বিন্যস্ত করার দাবি তোলেন তারা। বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি বলেন, আমার ৬ জেলায় ৩৫০টি ইউপিতে একদিনে নির্বাচন। ওই সংখ্যক পুলিশ সদস্য আমার রেঞ্জে নেই। আর ভোটের দিন কি অন্য কোনো অপরাধ ঘটবে না? যদি সব পুলিশ নির্বাচনই পাহারা দেয়, তাহলে বাকি পরিস্থিতি কিভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখব। একই বক্তব্য দেন পুলিশ হেড কোয়ার্টারের ডিআইজিও। এ ছাড়া অনেক পুলিশ সুপারই এ ব্যাপারে আপত্তি তোলেন। তাদের মতে, ৬ ধাপে নির্বাচন করা পুলিশের জন্য অনেক বড় চাপ হয়ে যাবে। আরো কয়েক ধাপ বাড়ানো উচিত বলে মত দেন তারা। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা অনেকটা সুবিধাজনক হবে। সভায় বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, বিজিবির সব সদস্য যদি নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা হয়, তাহলে সীমান্ত এলাকা অরক্ষিত হয়ে যেতে পারে। এদিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং অফিসারদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পুলিশ কর্মকর্তারা। বরিশাল বিভাগের এক পুলিশ সুপার বলেন, অনেক সময় দেখা যায় রিটার্নিং অফিসাররা স্বজনপ্রীতি দেখান। আর প্রিজাইডিং অফিসাররা খুব সহজে ম্যানেজ হয়ে যান। দেখা গেল বাইরে পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে, ভেতরে প্রিজাইডিং অফিসার অনৈতিক কাজ করছেন। এক্ষেত্রে এক জায়গার প্রিজাইডিং অফিসারকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া উচিত। এমনকি ভোট কেন্দ্রের ভেতরটাও পুলিশকে নজরদারির করার সুযোগ দেয়া উচিত। এই এসপি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা বিভিন্ন লোক গ্রেফতার করার জন্য আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে থাকেন। এ নিয়ে আমরা ঝামেলার মধ্যে আছি। আরকে এসপি বলেন, নির্বাচন বিষয়ক ট্রেনিংয়ে পুলিশকে রাখা হয় না। এটাতে পুলিশের অন্তর্ভুক্তি জরুরি। তা হলে নির্বাচনী কাজে সহায়তা করা পুলিশের জন্য আরো সহজ হবে।এদিকে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে পুলিশের দিকে অভিযোগের তীর ছোড়েন। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের ক্ষেত্রে পুলিশ সুপাররা নিজেদের মধ্যে ক্ষমতাটা রেখে দেন। এর মধ্যে জেলা প্রশাসককে সম্পৃক্ত করতে চান না। এটা ভেবে দেখা উচিত।এ ছাড়া দুই নির্বাচন কমিশনের বক্তব্যে অতীত নিয়ে অনুশোচনা ফুটে ওঠে। নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী বলেন, একদল বলে আমরা বিমাতাসুলভ আচরণ করছি। আরেক দল বলে আমরা সরকারের পকেটে ঢুকে গেছি। দুটিই যেন মিথ্যা হয়, আমাদের সেই অনুযায়ী কাজ করা উচিত। আরেক নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ বলেন, আমরা যে সর্বাঙ্গীণভাবে ভালো করতে পারছি, সেটা বলা যাবে না। দু�একজন এমন কাজ করেছে, যার জন্য নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এটা যাতে আর না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সভায় সমাপনী বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ তার বক্তব্যে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির জন্য পুলিশকে দায়ী করেন। বলেন, দু�একটি জায়গায় গণ্ডগোল হওয়ার কারণে, পুরো নির্বাচনে সফল হতে পারি না আমরা। এসব কিছুর দায়-দায়িত্ব পুলিশের ওসিদের নিতে হবে। তীক্ষ� দৃষ্টি রাখতে হবে। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। কেন্দ্র দখল করতে দেয়া যাবে না। গুলি থাকা অবস্থায় যাতে কোনো কেন্দ্র দখল করতে না পারে কেউ। সর্বশেষ বুলেটটি ব্যবহার করে হলেও কেন্দ্র বাঁচাতে হবে। এ সময় পুলিশের দাবি অনুযায়ী ৬ ধাপের নির্বাচনকে পুনর্বিন্যস্ত করার আশ্বাস দেন তিনি। সভা থেকে বেরিয়ে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, যেহেতু এটা দলীয় ভিত্তিতে প্রথম ইউপি নির্বাচন, তাই রাজনৈতিক দলগুলো ও তাদের প্রার্থীরা যেন নিজেরাই সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি করে। কোনো রকম সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি না করে নিজের পাড়ার নির্বাচন সৌহার্দপূর্ণ করার ব্যবস্থা করবেন। আমরাও সবাইকে সহযোগিতা করব। সিইসি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে বলে দেয়া হয়েছে, তারা যেন আইন অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব পালন করেন। কোনো রকম পক্ষপাতিত্ব না করেন। বিনা প্রতিদ্ব�িদ্বতায় প্রার্থী হওয়ার ঘটনাকে স্বাভাবিক বলে মনে করেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে দেখতে হবে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ায় কোনো বাধা সৃষ্টি হয়েছে কিনা। যদি মনোনয়নপত্র জমা দেয়ায় বাধা সৃষ্টি না হয়, তাহলে একজন কী দশজন প্রার্থী হলেন, সেটা প্রশ্নবিদ্ধ হয় না। সিইসি বলেন, এমনিতেই আমরা অনেক খবর পাই। কিন্তু নির্দিষ্টভাবে খবর না পেলে ব্যবস্থা নেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। সিইসি বলেন, ভোট কেন্দ্র দখল, জালভোট ও কারচুপি কর্মকাণ্ড বরদাশত করা হবে না। তিনি জানান, যাদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হচ্ছে না, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করেছি। তা ছাড়া অতি দ্রুত অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।অনুসন্ধানে জানা গেছে, তৃণমূল নেতাদের সুপারিশ উপেক্ষা, আর্থিক সুবিধা গ্রহণ, প্রভাবশালী সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রী, এমপি ও নেতাদের সুপারিশে প্রার্থী চূড়ান্ত করায় মূলত দু�দলেই বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে পৌর নির্বাচনে ঘোষণা দিয়েও বিদ্রোহীদের ব্যাপারে দু�দলই তেমন কোনো দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে নেতাকর্মীরা উৎসাহিত হচ্ছেন বলে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা মনে করছেন। এ কারণে শাসক দলে আসন্ন ইউপি নির্বাচনের প্রথম দফায় ১৫০ ও দ্বিতীয় দফায় রেকর্ডসংখ্যক ৪৪২ বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্ব�িদ্বতা করছেন। অন্যদিকে বিএনপিতে প্রথম দফায় এ সংখ্যা ৫৩ এবং দ্বিতীয় দফায় ১৩১ জন বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ এবারও হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে বিএনপি বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। দলটির হাইকমান্ড মনে করছেন, এ নির্বাচনের মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীরা মাঠে সক্রিয় হচ্ছেন। ক্ষমতাসীনদের হয়রানি, নির্যাতনের মধ্যে আত্মগোপন অথবা পালিয়ে না থেকে এলাকায় তারা ফিরে আসছেন। যা দলের জন্য খুবই ইতিবাচক।প্রথম দফায় ৭৩৪টি ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে ২২ মার্চ। এ নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারে শেষ দিন ছিল বুধবার। দ্বিতীয় দফায় ৪৬ জেলার ৬৪৭টি ইউনিয়নে ৩১ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিল ২ মার্চ বুধবার। ১৩ মার্চ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী প্রার্থীর বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, এখনও সময় আছে। আমরা আশা করছি তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন। তা না হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, কোনো কোনো স্থানে কৌশলগত কারণে আমাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। তারপরও যেসব স্থানে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নেতাকর্মীরা প্রার্থী হয়েছেন, তারা সরে দাঁড়াবেন বলে আমি আশাবাদী। এখনই তাদের ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার চিন্তা করছি না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কাইতলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ খালেদ আশিষ বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তৃণমূল নেতাকর্মীরা তার ব্যাপারে মতামত দিয়েছেন। কিন্তু তদবির করতে পারেননি বলে মনোনয়ন পাননি। সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার কালারুক ইউনিয়নে মনোনয়নবঞ্চিত আওয়ামী লীগ নেতা আফতাব উদ্দিন অভিযোগ করেছেন যিনি কিছু দিন আগে বিএনপির সহ-সভাপতি ছিলেন, হঠাৎ আওয়ামী লীগের একাংশের সঙ্গে যোগাযোগ করে দলে যোগ দিয়ে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে।বগুড়ার সোনাতলায় দল বদলকারী আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই নেতা দলীয় মনোনয়ন পাননি। বাধ্য হয়ে তারা দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র হিসেবে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। এরা হলেন- মধুপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম প্রধান এবং দিগদাইড় ইউনিয়নে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত মোস্তফা কামাল। স্থানীয় সূত্র জানায়, সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ ছেড়ে মোস্তফা কামাল অনেক আগেই বিএনপিতে যোগদান করেন। এবার তিনি দিগদাইড় ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির সমর্থন চেয়েছিলেন। বিএনপির হাইকমান্ড বর্তমান চেয়ারম্যান মোকছেদ আলী প্রামাণিককে সমর্থন দিয়েছে। তাই তিনি (মোস্তফা) স্বতন্ত্র হিসেবে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। এ ব্যাপারে মোস্তফা কামাল বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ ছেড়ে জিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু দলের নিয়ন্ত্রণ এখন জিয়ার আদর্শের অনুসারীদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তাই তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।অপরদিকে মধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম প্রধান আগে বিএনপির ইউনিয়ন শাখার সহ-সভাপতি ছিলেন। ২০১৪ সালে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এবার তিনি দলীয় মনোনয়ন চাইলেও হাইকমান্ড তার স্থলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দফতর সম্পাদক অসীম কুমার জৈনকে সমর্থন দিয়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ ইউনিয়নে বিএনপির বিদ্রোহী মনোয়ার হোসেন মুন্সী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। নজরুল ইসলাম বলেন, ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সমর্থনের আশ্বাসে তিনি বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। কিন্তু তাকে বঞ্চিত করে অন্যজনকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।এদিকে সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, দলের নির্দেশ লংঘন করে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় সাতক্ষীরার ২৬ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করা হয়েছে। তারা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। অথচ কেন্দ্রের প্রত্যাশা অনুযায়ী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় তাদের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে দলটি। জেলা আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৭৮টি ইউনিয়নের মধ্যে অন্তত ২০টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার একটি চূড়ান্ত তালিকা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত ৮০ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্ব�িদ্বতায় নির্বাচিত হতে চলেছেন। এদের মধ্যে প্রথম ধাপে বাগেরহাট জেলায় ৩৪টি ও মাদারীপুরের ১২ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কোনো প্রার্থী নেই। এছাড়া দ্বিতীয় ধাপে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষদিনে ১৩ ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিএনপিসহ অন্যান্য দল এমনকি স্বতন্ত্র প্রার্থী না থাকায় তারা বিনা প্রতিদ্বদ্বতায় চেয়ারম্যান হওয়ার পথে।অভিযোগ উঠেছে, বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা, জমা দেয়ার পর প্রত্যাহারে বাধ্য করে প্রার্থীতা বাতিল করার কারণে অনেক ইউপিতে তাদের প্রার্থী নেই। আবার কোথাও কোথাও সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেও প্রার্থী দিতে পারেনি বিএনপি। তবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ক্ষমতাসীনদের ভয়ভীতি এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্বের কারণে এখন পর্যন্ত দুই ধাপে সরকারি দলের প্রায় ১৫০ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্ব�িদ্বতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন ।





জাতীয় এর আরও খবর

ভোলার কর্ণফুলী-৩ লঞ্চে চাঁদপুরের মোহনায় অগ্নিকাণ্ড ভোলার কর্ণফুলী-৩ লঞ্চে চাঁদপুরের মোহনায় অগ্নিকাণ্ড
ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ! ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ!
তজুমদ্দিনে প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ তজুমদ্দিনে প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ
ভোলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শ্বশুর-জামাইসহ নিহত-৩ ভোলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শ্বশুর-জামাইসহ নিহত-৩
ভোলায় বাস ও অটোরিকশা সংঘর্ষে দুই কলেজ ছাত্রীসহ নিহত ৪ ভোলায় বাস ও অটোরিকশা সংঘর্ষে দুই কলেজ ছাত্রীসহ নিহত ৪
ভোলা-বরিশাল রুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ, এমভি আওলাদ লঞ্চে ভাংচুরের অভিযোগ ভোলা-বরিশাল রুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ, এমভি আওলাদ লঞ্চে ভাংচুরের অভিযোগ
ভোলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, নিহত ৪, নৌযান চলাচল শুরু ভোলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, নিহত ৪, নৌযান চলাচল শুরু
ভোলায় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত, ৭ নম্বর সংকেত, নৌযান চলাচল বন্ধ, বিদ্যুৎ বিছিন্ন,৭৪৬ আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত ভোলায় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত, ৭ নম্বর সংকেত, নৌযান চলাচল বন্ধ, বিদ্যুৎ বিছিন্ন,৭৪৬ আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত
ভোলার ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ভোলার ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

© 2024 দ্বীপের সাথে ২৪ ঘণ্টা Bholar Sangbad, সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।