শুক্রবার ● ৪ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিএনপির কোনো পদেই ভোট হচ্ছে না: খালেদা-তারেকের মনোনয়নপত্র জমা
বিএনপির কোনো পদেই ভোট হচ্ছে না: খালেদা-তারেকের মনোনয়নপত্র জমা
ঢাকা : জাতীয় কাউন্সিলের সদস্যদের সরাসরি ভোটে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে বিএনপির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। দলটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তা-ই। ৩৫১ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তারাও কাউন্সিল কর্তৃক নির্বাচিত হবেন। কিন্তু দলের আসন্ন কাউন্সিলে কোনো পদেই ভোট হচ্ছে না। অবশ্য দলটির নেতারা বলছেন, এতে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘিত হচ্ছে, এমনটি বলারও সুযোগ নেই। এদিকে, বিএনপির আসন্ন জাতীয় কাউন্সিলে দলের চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়েছে। শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার পক্ষে তার মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।এ সময় সহকারী রিটার্নিং অফিসার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট হারুন অর রশিদ ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন।এরপর সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমানের পক্ষে তার মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মনোনয়নপত্রে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে ১৮ জন প্রস্তাবক ও ১৮ জন সমর্থক রয়েছেন।শনিবার মনোনয়নপত্র বাছাই ও পরদিন রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।এদিকে, দলের চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে বিএনপির পক্ষ থেকে সংবাদকর্মীদের আপ্যায়ন করানো হয়।বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল আগামী ১৯ মার্চ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের তফসিল হয়েছে। দলের বর্তমান চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ছাড়া আর কেউ মনোনয়নপত্র নেননি। এতে তাঁরা দুজন কাউন্সিলের আগেই বিনা প্রতিদ্ব�িদ্বতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। বিএনপিতে শীর্ষ এই দুটি পদের পর তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ হলো মহাসচিব। দলটির সূত্রগুলো বলছে,অতীতের মতো এবারও মহাসচিবসহ অন্য পদগুলোর কোনোটিতে নির্বাচন হবে না। পদগুলোতে নির্বাচন বা ভোটাভুটিতে গেলে কাউন্সিলে গণ্ডগোল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য কাউন্সিলররা কেন্দ্রীয় কমিটির পদগুলোতে নেতা নির্বাচনের একক ক্ষমতা দিয়ে দেবেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে। পরবর্তী সময়ে তিনি মহাসচিবসহ অন্য পদগুলোতে নেতা মনোনীত করবেন।জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, মহাসচিবসহ অন্য পদগুলোতে অতীতে যেভাবে নির্বাচন হয়েছে, এবারও সেভাবেই হবে। সাধারণত কাউন্সিলররা সবাই মিলে প্রস্তাব আকারে চেয়ারম্যানকে ক্ষমতা দিয়ে থাকেন। তিনি মহাসচিবসহ বাকি পদগুলোর নেতা নির্বাচন করেন। ৩৭ বছর ধরে এমনই হয়ে আসছে। বড় দলগুলোতে তা-ই হয়। বিএনপিতে এবারও এর ব্যতিক্রম হওয়ার কারণ নেই। এই পদ্ধতিতে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন হয় না দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ভোটাভুটি করতে গেলে দ্বিধাবিভক্তির সৃষ্টি হয়। মহাসচিব পদে নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, মহাসচিব হওয়ার ইচ্ছা অনেকেরই থাকতে পারে। কিন্তু সাধারণত কেউ তা প্রকাশ করেন না।বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিল হয়েছিল ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর।ওই বছরও কাউন্সিলের আগেই বিনা প্রতিদ্ব�িদ্বতায় চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। অবশ্য সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমান নির্বাচিত হয়েছিলেন কাউন্সিলে। এই পদে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় তারেকের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। আর কারও নাম উত্থাপিত না হওয়ায় তারেক নির্বাচিত হন। এবার অবশ্য তারেকও আগেভাগে বিনা প্রতিদ্ব�িদ্বতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। চেয়ারম্যানের সঙ্গে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদেও দলের স্থায়ী কমিটির সুপারিশে নির্বাচনের জন্য গত ১০ ফেব্র�য়ারি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সর্বশেষ কাউন্সিলেও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ছাড়া অন্য কোনো পদ নিয়ে কাউন্সিলের সভায় কোনো আলোচনা হয়নি। দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা মনোনীত হয়েছিলেন কাউন্সিলের বেশ কিছু দিন পরে। কাউন্সিলররা খালেদা জিয়াকে এ বিষয়ে একক ক্ষমতা দিয়েছিলেন।