শিরোনাম:
●   ভোলার কর্ণফুলী-৩ লঞ্চে চাঁদপুরের মোহনায় অগ্নিকাণ্ড ●   উদ্ভাস-উন্মেষ-উত্তরণ এখন দ্বীপ জেলা ভোলায় ●   ভোলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আ’লীগের সমর্থিত প্রার্থী বশীর উল্লাহ সভাপতি, সম্পাদক মাহাবুবুল হক লিটু নির্বাচিত ●   ভোলা জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় ●   চরফ্যাশনে দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়লো চট্টগ্রামগামী বাস ●   ডয়েসে ভ্যালী ও জাতীয় গণমাধ্যম ইনিস্টিটিউটের যৌথ আয়োজনে প্রিন্ট পত্রিকার সম্পাদকদের কর্মশালা সম্পন্ন ●   ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ●   ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ! ●   ভোলায় জমি দখলের খবর পেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেলেন প্রবাসী ●   ভোলার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
ভোলা, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ভোলার সংবাদ
শুক্রবার ● ৮ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » জাতীয় » লাখো মুসল্লির আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে মুখরিত তুরাগ তীর
প্রথম পাতা » জাতীয় » লাখো মুসল্লির আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে মুখরিত তুরাগ তীর
৪৮৯ বার পঠিত
শুক্রবার ● ৮ জানুয়ারী ২০১৬
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

লাখো মুসল্লির আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে মুখরিত তুরাগ তীর

 ---

গাজীপুর: পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুক্রবার শুরু হয়েছে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ফজরের নামাজ আদায়ের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমা শুরু হয়েছে। লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠ।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইজতেমায় যোগ দিতে আসা দুজন মুসল্লি অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন।আগামী রোববার জোহরের নামাজের আগে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্ব শেষ হবে। চার দিন বিরতি দিয়ে ১৫ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। আখেরি মোনাজাত হবে ১৭ জানুয়ারি।ইজতেমায় যোগ দিতে এরই মধ্যে ময়দানে দেশ-বিদেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি হাজির হয়েছেন। বেলা দেড়টার দিকে দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ হয়। ইজতেমায় আসা মুসল্লিরা ছাড়াও আশপাশের এলাকার হাজারো মুসল্লি যোগ দেন এই বৃহত্তম জুমার নামাজে।বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে জুমার নামাজ আদায় করেছেন দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিদেশ থেকে আগত লাখো মুসল্লি। শুক্রবার দুপুরে মুসল্লিদের উপস্থিতিতে জনসমুদ্রে পরিণত হয় পুরো ইজতেমা এলাকা। জুমার নামাজে ইমামতি করেন ঢাকার কাকরাইল মসজিদের হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ যোবায়ের।দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে জুমার নামাজ শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিদেশ থেকে আগত মুসল্লি ছাড়াও ঢাকা-গাজীপুরসহ আশপাশ এলাকার লাখো মুসল্লি জুমার নামাজে অংশ নেন। ময়দানে স্থান না পেয়ে মুসল্লিরা মহাসড়ক ও অলিগলিসহ যে যেখানে পেরেছেন হোগলা, পাটি, চটের বস্তা, খবরের কাগজ, চাদর ও পলিথিন বিছিয়ে জুমার নামাজে শরিক হন।বিশ্ব ইজতেমায় বাদ আছর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা মোহাম্মদ জোয়াহের, বাদ মাগরিব বয়ান করবেন দিল্লির মাওলানা মোহাম্মদ সাদ। মুসল্লিদের সুবিধার্থে তা বাংলায় তরজমা করা হবে। এসব বয়ান ইংরেজি, ফার্সি, মালয় ভাষায়ও তরজমা করা হবে। লাখো মুসল্লির পদভারে ও �আল্লাহু আকবর� ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে টঙ্গীর তুরাগ নদীর পাড়। শুক্রবার ভোরে ফজরের নামাজ শেষে ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমানের আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে মুসলমানদের বৃহৎ সম্মিলন বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকা। বয়ান বাংলায় তরজমা করে শোনান বাংলাদেশের মাওলানা মো. আব্দুল মতিন। দুপুরে ইজতেমা ময়দানে জুমার নামাজে ইমামতি করবেন বাংলাদেশের ক্বারী মো. জুবায়ের। দেশ-বিদেশের কয়েকলাখ মুসল্লি এ ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন।তাবলিগ জামাতের আয়োজনে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব চলবে ১০ জানুয়ারি রোববার পর্যন্ত। সেদিন আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এ পর্বের সমাপ্তি ঘটবে। ইজতেমা শুরুর দিন শুক্রবার হওয়ায় ইজতেমা মাঠে জুম্মার নামাজে অংশ নিতে ইজতেমায় যোগদানকারী মুসল্লিদের বাইরেও হাজার হাজার মুসল্লি আগে থেকেই ইজতেমাস্থলে সমবেত হয়েছেন। বিশ্ব ইজতেমায় বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের তাবলিগ মারকাজের শুরা সদস্য ও বুর্জুগরা বয়ান পেশ করবেন। মূল বয়ান উর্দূতে হলেও বাংলা, ইংরেজী, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফরাসিসহ বিভিন্ন ভাষায় তাৎক্ষণিক অনুবাদ করা হচ্ছে। ইজতেমায় বিভিন্ন ভাষাভাষি মুসল্লিরা পৃথকভাবে বসেন এবং তাদের মধ্যে একজন করে মুরুব্বী মূল বয়ানকে তাৎক্ষণিক অনুবাদ করে শোনান। প্রথম পর্বের ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন দেশের ১৭টি জেলার মুসল্লিরা। জেলাগুলো হচ্ছে- ঢাকা জেলার একাংশ, নারায়ণগঞ্জ, শেরপুর, মাদারীপুর, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, পঞ্চগড়, ল�ীপুর, সিলেট, নড়াইল, মাগুরা, চট্টগ্রাম, পটুয়াখালী, ভোলা ও ঝালকাঠি।ইজতেমা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে আরো ১৫ জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন। বাকি ৩২ জেলার মুসল্লিরা আগামী বছরের ইজতেমায় অংশ নেবেন। ২০১১ সাল থেকে প্রতিবছর দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন হয়ে আসছিল। এ বছর থেকে দুই বছরে চার পর্বে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে যেখানে দেশের ৬৪ জেলার মুসল্লিরা স্বাচ্ছন্দে অংশগ্রহণ করেত পারবেন। ইজতেমা পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিবারের মতই ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের জন্য স্থান নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ১৭টি জেলার মুসল্লিরা এবার ২৭টি স্থানে (খিত্তায়) বিভক্ত হয়ে অবস্থান করবেন। ১ থেকে ৬ নম্বর খিত্তায় ঢাকা, ৭-এ শেরপুর, ৮ ও ১১-তে নারায়ণগঞ্জ, ৯-এ নীলফামারী, ১০-এ সিরাজগঞ্জ, ১২- তে নাটোর, ১৩-তে গাইবান্ধা, ১৪ ও ১৫-তে লক্ষীপুর, ১৬ ও ১৭-তে সিলেট, ১৮ ও ১৯-এ চট্টগ্রাম, ২০-তে নড়াইল, ২১-এ মাদারীপুর, ২২ ও ২৩-এ ভোলা, ২৪-এ মাগুড়া, ২৫-এ পটুয়াখালী, ২৬-এ ঝালকাঠি ও ২৭-এ পঞ্চগড় জেলা থেকে আসা মুসল্লিরা অবস্থান করবেন।এদিকে, ইজতেমা উপলক্ষে ইজতেমা প্রাঙ্গণ ও আশেপাশের এলাকাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে জঙ্গি হামলার আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুধু তাই নয়, ইজতেমার শৃঙ্খলা ও স্বাচ্ছন্দ বজায় রাখতে নুতন করে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে যান চলাচলের রুটও। গাজীপুর ট্রাফিক পুলিশের সিনিয়র এএসপি মো. শাখাওয়াৎ হোসেন জানান, দুই পর্বে দেড় হাজার ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া সার্বিক নিরাপত্তার জন্য এবার বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে ৬০টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা।পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে জানা গেছে, ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা এবং ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ধৌর ব্রিজ থেকে প্রগতি সরণি এবং টঙ্গী ব্রিজ থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কে যানবাহন বন্ধ থাকবে। তবে বিমানযাত্রী, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স এর আওতা মুক্ত থাকবে।এছাড়া ঘোড়াশাল থেকে পূবাইল-কালীগঞ্জ হয়ে আসা যানবাহন টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশনের আগে মরকুন পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে ঘোড়াশাল হয়ে ঢাকাগামী যানবাহন কাঁচপুর/যাত্রাবাড়ী সড়ক ব্যবহার করবে।ইজতেমাগামী, উত্তরাবাসী, বিমানযাত্রী, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া অন্য যানবাহন চালকদের মিরপুর-সাভার সড়ক ব্যবহার করতে এবং ঢাকা থেকে ইজতেমায় আগতদের তুরাগ নদীর উপর নির্মিত বেইলি ব্রিজ ও কামারপাড়া ব্রিজ ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। এদিকে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ব ইজতেমার মাঠ সংলগ্ন মন্নুনগর এলাকায় স্থাপিত র‌্যাবের কন্ট্রোল রুমের সামনে এক প্রেস বিফ্রিং করে র‌্যাব। সেখানে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, �জঙ্গি হামলা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্ব সা�প্রতিক সময়ে জঙ্গি হামলা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছে। ফলে জঙ্গি হামলার আশঙ্কার বিষয়টি কেউ উড়িয়ে দিচ্ছে না। আমরাও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে এখানে কাজ করছি। জঙ্গি হামলার আশংকা মাথায় রেখেই আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমাদের পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে ইজতেমায়। তিনি জানান, ইজতেমার ১৮টি প্রবেশপথে এবং বিদেশে মেহেমানখানায় সিসি টিভি আছে। ৩৮টি সিসি ক্যামরার মাধ্যমে পুরো ইজতেমা ময়দান পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন,বিশ্বে ইজতেমায় যারা এসেছেন, সকলে যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করেন তাহলে যেকোনো নাশকতা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবো।তিনি জানান, র‌্যাব দুইটি ভাগে বিভক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করছে। সমস্ত এলাকা পর্যবেক্ষণ করার জন্য আমাদের নয়টি অবজারভেশন পোস্ট রয়েছে। পর্যক্ষেণ চৌকি থেকে ইজতেমার ভিতরে কোনো অপ্রতিকর ঘটনা আভাস পেলে তার প্রতিরোধ ব্যবস্থা করা হবে। রাতেও এই অবভারজারবেশন পোস্ট থেকে পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। তুরাগ নদীতে স্পীড বোটের মাধ্যমে নৌ টহল থাকবে। এছাড়া হেলিকপ্টারের মাধ্যমে টহলের ব্যবস্থা রয়েছে। বিদেশীদের রন্ধনশালায় গ্যাস সংকট, রান্না বিঘি�ত : বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে বিদেশিদের তাঁবুতে রন্ধনালায় গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। বিশ্বইজতেমার শুরুর দিন সকালেই গ্যাস সংকট দেখা দেয়ায় হাজার হাজার বিদেশি মুসল্লির রান্নার কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইজতেমা কর্তৃপক্ষ।বিদেশী মুসল্লিদের তাঁবুতে রান্নার জামাতের জিম্মাদার মো. নুরুল ইসলাম জানান, গেল দুইদিন গ্যাসের তেমন সমস্যা না হলেও শুক্রবার ইজতেমার শুরুর দিন সকাল সোয়া ১১টার দিকে হঠাৎ গ্যাসের চাপ একবারেই কমে যায়। ফলে প্রায় ৪০ হাজার বিদেশি মুসল্লির খাবার আয়োজন করতে সমস্যা হয়।তিতাস গ্যাসের টঙ্গী (জোনাল বিক্রয়) কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশ-বিদেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে এবারের ৫১তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপ শুরু হয় শুক্রবার বাদ ফজর। এ সময় ভারতের মাওলানা আবদুর রহমান উর্দুতে আমবয়ান করেন । রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ইজতেমার প্রথম ধাপ। আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত তাবলীগ জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বিরা পর্যায়ক্রমে আখলাক, ঈমান ও আমলের ওপর বয়ান পেশ করবেন।এবারের ইজতেমায় দুই দফায় মোট ৩২টি জেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন। ৮ থেকে ১০ জানুয়ারি প্রথম দফায় ঢাকা জেলা হে ১৭টি জেলার মুসল্লিরা অংশ নিয়েছেন। ১৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ঢাকা জেলাসহ ১৬টি জেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন ইজতেমায়।বিশ্ব ইজতেমায় জঙ্গি হামলার আশঙ্কা মাথায় রেখেই পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান।শুক্রবার বেলা ১১টায় ১০ মিনিটে বিশ্ব ইজতেমার পাশে র‌্যাবের কন্ট্রোলরুমে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমায় নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুরো ইজতেমা এলাকায় সিসিটিভির ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।জিয়াউল আহসান বলেন, জঙ্গি হামলা শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় হচ্ছে। হামলার চেষ্টা হচ্ছে। আমরাও বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছি না। সেজন্য আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি।সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০০০ সালে থেকে এদেশে জঙ্গি হামলা শুরু হয়। আমরা দেশের জনগণ ও গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা নিয়ে এটা বন্ধ করতে পেরেছি। আশা করি, শান্তিপূর্ণভাবে বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে।শুক্রবার সকাল থেকে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে পুলিশ ও র‌্যাবের হেলিকপ্টার টহল দিতে দেখা গেছে। ইজতেমা পরিচালনা কমিটির সদস্য গিয়াস উদ্দিন বলেন, ১৬০ একরের সুবিশাল ময়দানের পুরোটাই চটের শামিয়ানা টানিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোনায় টিনশেডের উন্নত আবাসনে বিদেশি মুসল্লিদের রান্নার জন্য গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিফোন-সংযোগ ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রাখা রয়েছে। গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ বলেন, পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মাঠের চারদিকে পুলিশ, র‍্যাব, আনসারসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মোতায়েন রয়েছে। এদিকে, টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমায় প্রথম ধাপে অংশ নেয়া তিন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইজতেমায় অংশ নিতে আসা তিন মুসল্লি অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। নিহতরা হলেন-সিলেটের গোপালগঞ্জ উপজেলার রনকালি এলাকার জয়নাল আবেদীন, কুড়িগ্রমের উলিপুর উপজেলার চকলাপাড় গ্রামের নূরুল ইসলাম ও নাটোরের সিংড়া উপজেলার বটিয়া গ্রামের ফরিদ উদ্দিন।লাশের জিম্মাদার আদম আলী জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ওই তিন মুসল্লি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সন্ধ্যায় ফরিদ উদ্দিন রাত ১১টার দিকে নূর ইসলাম ও রাত পৌণে ১টার দিকে জয়নাল আবেদীন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। শুক্রবার সকালে লাশ নিহতের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।বিশ্ব উজতেমা উপলক্ষে আজ শুক্রবার থেকে ট্রেন ও বিআরটিসি বাসের স্পেশাল সার্ভিস শুরু হচ্ছে। এ সার্ভিস ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু করে মোনাজাতের পরে দিন ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম পর্বে এবং ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি আর বিআরটিসি আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্বে চলবে। আসন্ন বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে রেল কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) এই উদ্যোগ নিয়েছে।স্বাভাবিকের চেয়ে দেড় লাখ অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে ২৮টি স্পেশাল ট্রেন চালু এবং বিআরটিসি ২২৮টি স্পেশাল বাস সার্ভিস চালু করছে। ২৮টি ট্রেনের সঙ্গে ২০টি অতিরিক্ত কোচও সংযোগ দেয়া হবে। নিরাপদে মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য অগ্রিম টিকেটধারী যাত্রীদের টঙ্গী স্টেশন থেকে ট্রেনে আরোহনের সুবিধার্থে ইজতেমার প্রথম দিন শুক্রবার ঢাকা-টঙ্গী-ঢাকা ২টি জুম্মা স্পেশাল। আখেরি মোনাজাতের আগের দুই দিন জামালপুর ও আখাউড়া থেকে ২টি করে ৪টি, আখেরি মোনাজাতের আগের দিন লাকসাম-টঙ্গী ১টি, আখেরি মোনাজাতের দিন ঢাকা-টঙ্গী ৭টি, টঙ্গী-ঢাকা ৭টি, টঙ্গী-লাকসাম ১টি, টঙ্গী-আখাউড়া ২টি, টঙ্গী-ময়মনসিংহ ৪টিসহ মোট ২১টি আখেরি মোনাজাত স্পেশাল রয়েছে। রেলকর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ৩৮টি মেইল এক্সপ্রেস কমিউটার ও লোকাল ট্রেনের টঙ্গী স্টেশনে আখেরি মোনাজাতের আগের ৫ দিন ঢাকা অভিমুখী সকল আন্তঃনগর ২৯টি ট্রেন ২ মিনিট করে বিরতি রাখা হয়েছে। আখেরি মোনাজাতের দিন ৫৮টি আন্তঃনগর ট্রেন ও আখেরি মোনাজাতের পরের দিন ১৫টি আন্তঃনগর ট্রেনে ২ মিনিট করে বিরতি রাখা হয়েছে। এ উপলক্ষে ১০ ও ১৭ জানুয়ারি ৭২১/৭২২ মহানগর প্রভাতী ও গোধুলি, ১১ ও ১৮ জানুয়ারি ৭০৭/৭০৮ তিস্তা এক্সপ্রেস এবং ৮ ও ১৫ জানুয়ারি ৭০১/৭০২ সুর্বণ এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোর সাপ্তাহিক বন্ধের দিন চলাচল করবে। স্পেশাল ট্রেন পরিচালনার সুবিধার্থে আখেরি মোনাজাতের দিন সুবর্ণ এক্সপ্রেস, তিস্তা এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেস, মহুয়া এক্সপ্রেস, তুরাগ এক্সপ্রেস, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ কমিউটার, ঢাকা-টঙ্গী কমিউটার, ঢাকা-জয়দেবপুর কমিউটার, ঢাকা-কুমিল্লা কমিউটার চলাচল বন্ধ থাকবে।যাত্রীদের টিকেট সংগ্রহের সুবিধার্থে ঢাকা স্টেশনে ৭০টি ও টঙ্গী স্টেশনে ৫০টি অতিরিক্ত টিকেট কাউন্টার বৃদ্ধিসহ ভ্রাম্যমাণ টিকেট বিক্রেতা নিয়োগ, ইজতেমা চলাকালে ময়মনসিংহ, আখাউড়া হতে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত সার্বক্ষণিক রেলওয়ে ট্যাক পেট্রোলিংয়ের ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।এ ব্যাপারে রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুর রহমান জানান, বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের সুষ্ঠু যাতায়াত নিশ্চিত করতে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হওয়ার তিন দিন আগে থেকে সব ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযোজনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, মুসুল্লিদের জন্য টঙ্গী স্টেশনে স্থায়ী টয়লেট ছাড়াও অস্থায়ী ৪০টি অজুখানা ও ২৫টি প্রস্রাবখানা নির্মাণের ব্যবস্থা কার হয়েছে। গত বছর একসঙ্গে ২০ জন মুসল্লির অজু করার ব্যবস্থা ছিল। সেখানে এ বছর এক সঙ্গে ৪০ জন মুসল্লির অজুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া মুসল্লিদের জন্য টঙ্গী স্টেশনে ৩০টি টয়লেট, ৬০ জনের বিশ্রামের জন্য অস্থায়ী বিশ্রামাগার, ৬০ জন মুসল্লির নামাজের জন্য অস্থায়ী নামাজ ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বিভিন্ন ডিপো থেকে ২২৮টি স্পেশাল বাস সার্ভিসের উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি। দেশের ১৩টি রুটে এই বাসগুলো আজ ৮ থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে চলবে। ১৫ থেকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপে মোট ১৪টি দিন চলবে এসব বাস।বিদেশি মুসল্লিদের জন্য রিজার্ভ থাকবে তিনটি বাস। বাস তিনটি এয়ারপোর্ট থেকে ইজতেমা পর্যন্ত চলবে। এ ছাড়া ২৯টি বাস চলবে আব্দুল্লাহপুর-মতিঝিল ভায়া ইজতেমা স্থল। ১৩টি বাস চলবে শীববাড়ী-মতিঝিল ইজতেমাস্থল, ১৭টি বাস চলবে টঙ্গী-মতিঝিল ইজতেমাস্থল, ৬টি গাজীপুর ( চৌরাস্তা)-মতিঝিল ইজতেমাস্থল, ৫টি গাবতলী-গাজীপুর ভায়া ইজতেমাস্থল, ৩৫টি বাস চলবে গাবতলী-মহাখালী ভায়া ইজতেমাস্থল, ২৫টি গাজীপুর-মতিঝিল ভায়া ইজতেমাস্থল, ২০টি মতিঝিল-বাইপাইল ভায়া ইজতেমাস্থল, ২০টি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ, ২০টি চলবে চিটাগাং রোড-সাভার, ২০টি ঢাকা-নরসিংদী, ২৫টি চলবে ঢাকা-কুমিল্লা সড়কে। বিআরটিসি ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (অপ-১) খান কামাল উদ্দীনের দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমায় বিআরটিসি বাস সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য প্রধান কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোলরুম থাকবে। ফোন-৯৫৬৪৩৯১। সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন বিআরটিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা এটিএম আব্দুল লতিফ। যে কোনো মুসল্লি ০১৭১১-৪২৭৮৮৫ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে বাস সম্পর্কে জানতে পারবেন।এ ছাড়া জোয়ারাসাহারা বাস ডিপোতেও একটি কন্ট্রোল রুল থাকবে। যার সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকবেন জোয়ারাসাহারা বাস ডিপোর ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার কাজী নাসিরুল হক ও সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা মো. শাহদাত তালুকদার। ফোন-৮৯০০৬৫৫ এবং মোবাইল ০১৭১১-৩০২১২৪। এই ফোনে যে কেউ মুসল্লি বিআরটিসি বাস সম্পর্কে জানতে পারবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।





জাতীয় এর আরও খবর

ভোলার কর্ণফুলী-৩ লঞ্চে চাঁদপুরের মোহনায় অগ্নিকাণ্ড ভোলার কর্ণফুলী-৩ লঞ্চে চাঁদপুরের মোহনায় অগ্নিকাণ্ড
ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ভোলায় চারটি সহ সারাদেশে ১৫০ সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ! ভোলায় ৩৩৫ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ এখন মরণ ফাঁদ!
তজুমদ্দিনে প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ তজুমদ্দিনে প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ
ভোলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শ্বশুর-জামাইসহ নিহত-৩ ভোলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শ্বশুর-জামাইসহ নিহত-৩
ভোলায় বাস ও অটোরিকশা সংঘর্ষে দুই কলেজ ছাত্রীসহ নিহত ৪ ভোলায় বাস ও অটোরিকশা সংঘর্ষে দুই কলেজ ছাত্রীসহ নিহত ৪
ভোলা-বরিশাল রুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ, এমভি আওলাদ লঞ্চে ভাংচুরের অভিযোগ ভোলা-বরিশাল রুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ, এমভি আওলাদ লঞ্চে ভাংচুরের অভিযোগ
ভোলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, নিহত ৪, নৌযান চলাচল শুরু ভোলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, নিহত ৪, নৌযান চলাচল শুরু
ভোলায় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত, ৭ নম্বর সংকেত, নৌযান চলাচল বন্ধ, বিদ্যুৎ বিছিন্ন,৭৪৬ আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত ভোলায় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত, ৭ নম্বর সংকেত, নৌযান চলাচল বন্ধ, বিদ্যুৎ বিছিন্ন,৭৪৬ আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত
ভোলার ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ভোলার ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

© 2024 দ্বীপের সাথে ২৪ ঘণ্টা Bholar Sangbad, সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।