রবিবার ● ১৫ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » খেলা » শেষটা ভালো হলো না বাংলাদেশের
শেষটা ভালো হলো না বাংলাদেশের
ঢাকা : ১৮ ফেব্রুয়ারি শুরু। শেষ হলো ১৫ নভেম্বর। সূচি অনুযায়ী এটাই এ বছরের শেষ ম্যাচ। বছরের প্রথম ম্যাচে বিশ্বকাপে আফগানিস্তানকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সোনায় মোড়ানো ২০১৫ সালের শেষটা কিন্তু জয় দিয়ে হলো না। সব ধরনের ক্রিকেট বাংলাদেশের কাছে ১৩ ম্যাচে হারার পর অবশেষে জয়ের দেখা পেল জিম্বাবুয়ে।
শেষ ওভারে ১৮ রানের কঠিন সমীকরণ মিলিয়ে দিয়ে ১ বল আর ৩ উইকেট থাকতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি জিতল সফরকারীরা। নাসিরের এক ওভারে দুই ছক্কা ও এক চার হাঁকিয়ে সেই সমীকরণ মিলিয়ে দিয়েছেন ১৯ বলে ২৮ করা মাদজিভা। বল হাতেও ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
অথচ ১৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই খাবি খাচ্ছিল জিম্বাবুয়ে। মাত্র ৩৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল। ৩৪ রান করা জঙ্গুয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও আল আমিনের তৃতীয় শিকার হয়ে ফিরেছেন। সেখান থেকেই ম্যাচটা বের করে নিয়ে গেছেন ওয়ালার আর মাদজিভা। গত ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় ওয়ালার ২৭ বলে ৪০ করেছেন। তবে মাদজিভার শেষ ওভারের ব্যাটিংটাই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিল। দুই বলে লাগত ৬, তখনো ম্যাচে ভালোমতোই ছিল বাংলাদেশ।
কিন্তু মাদজিভা ওভারের পঞ্চম বলেই আকাশছোঁয়া ছক্কা হাঁকিয়ে হারতে হারতে ক্লান্ত একটা দলকে উচ্ছ্বাসের উপলক্ষ এনে দেন। সীমানাপ্রান্ত মুহূর্তটির জন্য ব্যাকুল অপেক্ষায় থাকা জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড়েরা রীতিমতো বিশ্বজয়ের আনন্দে মাঠে ছুটে ঢুকে যান।
বৃথা গেল আল আমিনের তিন উইকেট, বৃথা গেল এনামুলের এক প্রান্ত ধরে রেখে করা ৪৭ রানের ইনিংসটাও। ভালো পুঁজি না-পাওয়াটাই ভোগাল বাংলাদেশকে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাটেও শুরুটা ভালোই করেছিল। ২১ বলে ৩৪ রান করার পর উদ্বোধনী জুটিটা ভেঙেছে তামিম (২১) ফিরে যাওয়ায়। তখন উইকেটে নামেন এনামুল। আউট হয়েছেন নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে। অন্য প্রান্তে কারও সঙ্গে তেমন ভালো একটা জুটিও গড়ে ওঠেনি তাঁর। ইমরুল ছাড়া বাকি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কেবল সাব্বির (১৭) দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন। বাংলাদেশের ৩৯ রানের ইনিংস সেরা জুটিটাও সাব্বিরের সঙ্গে এনামুলের।
শেষ তিন ওভারে মাত্র ১৪ রান তুলেছে বাংলাদেশ। এনামুল নিজেও হাত খুলে মারতে পারেননি। পুরো ইনিংসে মাত্র ৩টি চার। কমপক্ষে ৪৭ করা ইনিংসগুলোতে এটাই সবচেয়ে কম চার মারার রেকর্ড। বাংলাদেশের পুরো ইনিংসে দুটো ছক্কা, দুটোই তামিমের। সব মিলিয়ে চারও মাত্র ১০টি!
নিজের প্রথম আর ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারটি করতে এসে পর পর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নিয়ে আল আমিন ভালো ধাক্কাই দিয়েছিলেন। মুস্তাফিজ-আরাফাত সানিরাও চাপ ধরে রেখেছিলেন। আরও বড় বিপদ হওয়ার আগে ওয়ালারকে ফিরিয়েছেন নাসিরও। কিন্তু নাসিরের শেষ ওভারেই হয়ে গেল ক্ষতিটা। সিরিজের ট্রফিটাও ভাগাভাগি করে নিতে হলো।
জিতলে ভালো হতো সন্দেহ নেই। কিন্তু এই বছরটা যে অবিস্মরণীয়ভাবে কেটেছে, তাতে এতটুকু খামতি মেনে নেওয়াই যায়। কে বলেছে, শেষ ভালো যার, সব ভালো তার?
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৯ উইকেটে ১৩৫ (তামিম ২১, ইমরুল ১০, এনামুল ৪৭, মুশফিক ৯, সাব্বির ১৭, নাসির ৩, মাহমুদউল্লাহ ৮, মাশরাফি ০, সানি ৪, মুস্তাফিজ ১*, আল আমিন ১*; পানিয়াঙ্গারা ৩/৩০, মাদজিভা ২/২৫ , ক্রেমার ২/২১, চিসোরো ১/২৭)।
জিম্বাবুয়ে: ১৯.৫ ওভারে ১৩৬/৭ (রাজা ৫, চাকাভা ৪, উইলিয়ামস ০, আরভিন ১৫, জঙ্গুয়ে ৩৪, চিগুম্বুরা ০, ওয়ালার ৪০, মাদজিভা ২৮*, ক্রেমার ০*; মাশরাফি ০/২৭, আল-আমিন ৩/২০, মুস্তাফিজ ১/১২, সানি ১/২৬, নাসির ১/৪৫)।
ফল: জিম্বাবুয়ে ৩ উইকেটে জয়ী।