শনিবার ● ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » মেঘনায় মিলছে ইলিশ, কমেছে দাম
মেঘনায় মিলছে ইলিশ, কমেছে দাম
স্টাফ রিপোর্টার: অভাব দুঃখ দুর-দশার দিন শেষ হয়েছে। মহাজন এনজিওর দেনা আর সুদে ধাড় নেওয়া টাকা প্রায় পরিশোধ। আসছে কোরবানি ঈদ পরিবারের সবাইকে নতুন পোশাক-আশাক আর কোরবানি দেওয়ার জন্য কিনতে হবে পশু। মেঘনায় জালে ধরা দিচ্ছে ইলিশ। তাই এখন আর অপচয় ও বসার মত সময় নেই। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মেঘনায় জাল বেয়ে মহাজন, নৌকা ভাড়া পরিশোধ করে ভাল পরিমাণ টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরা যাচ্ছে এ কথাগুলো ভোলা সদর উপজেলার উত্তর ইলিশা জেলে পল্লীর কাদের মাঝি, হিরণ মাঝি, জসিম মাঝিসহ একাধিক মাঝির কন্ঠে শুনা গেছে।
তারা আরো জানান, গত কয়েক দিনে মেঘনায় পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ায় আসন্ন কোরবানে ভাল করে পালন করাসহ নিষেধাজ্ঞা সময়গুলোতে ভাল ভাবে চলার মত টাকা জমিয়ে রাখা যাচ্ছে। এতে করে সহসা তাদের অভাবে পরতে হবে না বলে তারা জানায়।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, ভোলার সদর উপজেলার তুলাতুলি জেলে পল্লী, উত্তর ইলিশা, দক্ষিণ ইলিশা জেলে পল্লী, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলার বিভিন্ন জেলে পল্লীগুলোতে জেলেরা তাদের স্ত্রী সন্ত্রান নিয়ে নেমে পরেছে মেঘনায় ইলিশ শিকারে। রোজার ঈদের কয়দিন আগে থেকে মেঘনায় ঝাকে ইলিশ ধরা পড়লেও তা ঈদের পর আর দেখা যায়নি। তবে গত কয়েকদিন থেকে মেঘনায় আগের চেয়ে বেশি ইলিশ ধড়া পড়ায় জেলেরা তাদের পরিবারের সবাইকে নিয়ে মেঘনায় নেমে পড়ে। কোন কোন নৌকা দেখা যায় রান্না-বান্না খাওয়া-দাওয়া হচ্ছে নদীতে। আনন্দ ও উৎসায়ের মধ্যে দিয়ে নেমে পড়ে ইলিশ শিকারে। অন্য দিকে মেঘনায় ঝাকের ইলিশ ধরা পড়ায় ভোলার বিভিন্ন উপজেলার ছোট-বড় মৎস্য ঘাট ও বন্দরগুলো জমে উঠেছে।
এদিকে, মেঘনায় পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ায় ভোলার বিভিন্ন বাজারগুলোতে ইলিশের দাম অনেক কমে এসেছে। দাম কম থাকায় ক্রেতার সংখ্যা বেশি হওয়ায় মোটেও চিন্তিত নয় জেলেরা।
ভোলার সদর উপজেলার উত্তর ইলিশা জেলে হারুন মাঝি জানান, অনেক দিন ধরে ইলিশ না পাওয়ায় মহাজন, এনজিও, সুদে টাকা ধার নিয়ে দেনায় পালিয়ে ছিলাম। গত কয়েকদিনে মেঘনায় নেমে অনেক ইলিশ পেয়েছি। মহাজনের ও সুদের টাকা পরিশোধ করেছে। তবে কিস্তির টাকা ঈদের আগেই পরিশোধ করেতে পারবো।
চরফ্যাশন উপজেলার চর কুকরী-মুকরীর জেলে রশিদ মাঝি জানান, মেঘনায় ওহন অনেক ইলিশ ধরা পরছে। আমাগো সংসারে এহন আর কোন অভাব নাই। ঈদে সবাইরে নতুন জামা-কাপুর কিনে দিতে পারমু। এবার ঈদে পশু কোরবান দিমু।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার মৎস্য ঘাট আড়ৎদার আনিছল হক জানান, নদীতে ভাল ইলিশ পড়ায় জেলেরা আমাদের দাদনের টাকা পরিশোধ করেছে। ইলিশের দাম কম হলেও ক্রেতার সংখ্য বেশি হওয়ায় তারা ভাল লাভবান হচ্ছে।
ওই ঘাটের ক্রেতা ইসমাইল, নয়ন, ছালাউদ্দিন জানান, বর্তমানে ইলিশের দাম কম থাকায় অনেক আগ্রহ নিয়ে ইলিশ কিনছি। নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশ পাবো না তাই ইলিশ ফ্রিজে জমিয়ে রাখছি।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রতীষ কুমার মল্লিক জানান, এ বছর প্রচুর বৃষ্টিপাত ও নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা ইলিশ শিকার না করায় তার সুফল হিসেবে এখন নদীতে প্রচুর ইলিশ পাচ্ছে। তবে এখন পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়ায় নিষেধাজ্ঞার সময় তাদের অভাবে পড়তে হবে না।