মঙ্গলবার ● ২৫ আগস্ট ২০১৫
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরি বন্ধ ঘোষণা
ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরি বন্ধ ঘোষণা
আদিল হোসেন তপু• ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ভোলা অংশের ১৫ দিন আগে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন ফেরিঘাট মেঘনা নদীর ভাঙনের মুখে পড়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছেন বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। ফেরি কবে নাগাদ চালু হবে এবং ওই ঘাটের ভবিষ্যৎ কি, আদৌ ঠিক হবে কিনা তা সঠিক করে বলতে পারছেন না ফেরির দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার মো. আবু আলম ও বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ কবির। এদিকে ভোলার ইলিশা ও লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরী ঘাটে মালামাল বোঝাই ৩ শতাধিক ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস আটকা পড়েছে। এতে দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ১৭ জেলার সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। লোকসানের মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে স্থানীয় ব্যবসায়ী হারুন মিয়া জানান, ফেরিঘাটটি ঠিকমত নির্মাণ করা হয় নি। এ কারণে ¯্রােতের মুখে এখন পাইলিংসহ অনেকাংশ ধসে গেছে। সোমবার বিকাল ও গতকাল মঙ্গলবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ফেরির র্যাম কাত হয়ে আছে। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে। ওই সব বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ছোট আকারের ( ১৭০ কেজি) হওয়ায় তা ¯্রােতের মুখে ভেসে যাচ্ছে। পানিতে কোটি টাকার ব্যাগ ফেলে লাভ হচ্ছে না। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন এতে ঠিকাদারের লাভ হচ্ছে। গতকাল বিআইডব্লিউটিএ’র প্রকৌশল বিভাগ ঘাট সংস্কারে কোন কাজ করে নি। ওই দফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ নেওয়াজ কবির জানান, ঘাটটি টিকে থাকা নিয়ে শংসয় রয়েছে। তার পরও বুধবার থেকে ঘাট সংস্কারে কাজ করা হবে। ঠিক হবে কিনা বলা যাচ্ছে না। এর আগে গত মাসের ২৫ তারিখে পুরাতন ঘাটের এ্যাপোচ সড়কে ভাঙন দেখা দিলে ১৫ দিন ফেরি চলাচল বন্ধ রেখে নতুন এ ঘাট নির্মাণ করা হয়। নির্বাহী প্রকৌশলী নতুন করে স্থায়ী বিকল্পঘাট নির্মানেরও প্রস্তাব করেন। ভোলা স্বার্থ রক্ষা উন্নয়ন কমিরি সভাপতি সাবেক চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ২০০৭ সালে এ রুটে ফেরি সার্ভিস চালুর ফলে চট্রগ্রাম থেকে খুলনা পর্যন্ত ২৪০ কিলোমিটার সড়ক পথের দুরত্ব কমে যায়। দক্ষিণাঞ্চলে ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনে গুরুত্ব বহন করছে এ রুটটি। ফলে দ্রুত ঘাট সংস্কার ও ফেরি চালুর দাবি জানান তিনি। এদিকে ইলিশা এলাকা রক্ষায় ১০ দিন আগে পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে এক টন ওজনের বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলবার নির্দেশ দিলেও পানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওই কাজ না করায় সোমববার রাতে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন পাউবো সহকারী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদসহ স্টাফরা। স্থানীয় মাছের আড়তদার সায়েদ আলী, আওয়ামী লীগ সম্পাদক আব্দুল মান্নান অভিযোগ করেন পাউবোর কর্মকর্তারা ঠিকাদারের লাভ দেখছেন। এলাকা রক্ষায় কাজ করছেন না। যে কারনে ভয়াবহভাবে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের প্রধান সড়কের ২ কিলোমিটার সম্পূর্ন বিলীন হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান ( ভারপ্রাপ্ত) মোঃ ইউনুছ গতকাল ফের ওই এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙন রোধে যথাযথ কাজ করতে পাউবোকে নির্দিশ দেন। তিনিও মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ জানান। অপরদিকে সোমবার সন্ধ্যা ভোলার পুলিশ সুপার মোহাঃ মনিরুজ্জামান , বরিশাল অঞ্চলের ডিআইজিকে নিয়ে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন । এলাকায় সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায় আতংকৃত মানুষ ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে ।