মঙ্গলবার ● ১৩ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » জাতীয় » নেপালে ইউএস-বাংলাদেশের বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৪৯
নেপালে ইউএস-বাংলাদেশের বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৪৯
ডেস্ক: নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ৪৯ জন আরোহী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২২ জন। আহতদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে চার ক্রুসহ ৭১ জন আরোহী ছিলেন।
বিমানটি সোমবার ১২টা ৫০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে রওনা হয়।
নেপাল পুলিশের মুখপাত্র ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) মনোজ নিউপানি বলেন, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। আর ২২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২২ জন নেপালি নাগরিক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির পুলিশ বিভাগের এই মুখপাত্র। এদিকে রাতে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত নয় বাংলাদেশী জীবিত আছেন। বাকি ২৭ বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। আহত নয়জনই বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
জানা গেছে, নিহতদের ৩১ জনের মরদেহ বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয়।
অবশ্য দুর্ঘটনার পর বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে নিহতের সংখ্যা ৫০ বলে জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক এবং বাংলাদেশ ও নেপালের সংবাদমাধ্যমগুলো।
বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমানটির পাইলট আবিদ সুলতান বেঁচে আছেন। তবে কো-পাইলট পৃথুলা রশিদ মারা গেছেন। বিধ্বস্ত বিমানের ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা গেছে, বিধ্বস্ত বিমানে ৩৬ বাংলাদেশী, ৩৩ জন নেপালী, একজন মালদ্বীপের এবং এক চীনা নাগরিক ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে দুজন শিশু ছিল।
বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম থেকে ক্যাপ্টেনকে একেকবার একেক রানওয়ে অবতরণের তথ্য দেয়ায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে বলে দাবি করেছে ইউএস-বাংলা। ইউএস-বাংলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইমরান আসিফ বলেন, ‘আমাদের উড়োজাহাজের কোনো যান্ত্রিক ক্রুটি ছিল না। মূলত পাইলটকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রানওয়ের কথা বলা হয়েছে। ভুল তথ্য পেয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’ তবে বিমান দুর্ঘটনার জন্য নেপালের ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট (টিআইএ) কর্তৃপক্ষ বিমানের পাইলটকে দোষারোপ করেছেন। টিআইএর জেনারেল ম্যানেজার রাজ কুমার ছেত্রি আলজাজিরাকে বলেন, ‘কন্ট্রোল রুমের নির্দেশ অমান্য করে ভুল দিকে অবতরণের পর বিমানটি রানওয়েতে পিছলে যায়।’ তিনি বলেন, ‘কন্ট্রোল রুম থেকে তাকে দক্ষিণ দিক থেকে অবতরণের অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু আকাশে কয়েকবার চক্কর দিয়ে বিমানটি উত্তর দিক থেকে অবতরণ করে।’ এদিকে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা নিহতদের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
দুর্ঘটনার নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি শর্মার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে চার দিনের সিঙ্গাপুর সফরে থাকা প্রধানমন্ত্রী তার সফর সংক্ষিপ্ত করে মঙ্গলবারই দেশে ফিরছেন।