মঙ্গলবার ● ১৮ এপ্রিল ২০১৭
প্রথম পাতা » রাজনীতি » কী আছে মেয়র সাক্কুর ভাগ্যে
কী আছে মেয়র সাক্কুর ভাগ্যে
ডেস্ক: আগের মেয়াদে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন মনিরুল হক সাক্কু। গত ৩০ মার্চ নির্বাচনে পুনরায় মেয়র পদে নির্বাচিত হন তিনি। মঙ্গলবার জ্ঞাতবহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের মামলায় সাক্কুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। সেই সঙ্গে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা মঙ্গলবার সকালে মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে এ নির্দেশ দেন।
এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর আলোচনায় উঠে এসেছেন সাক্কু। জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে মেয়র সাক্কুর ভাগ্যে কী আছে? তবে নির্বাচন কমিশন বলছে, গেজেট প্রকাশের পর মেয়র হিসেবে শপথ নিতে সমস্যা নেই সাক্কুর। আদালতে যদি তিনি দোষী প্রমাণিত হন তবে মেয়র পদ হারাবেন।
কুমিল্লা সিটিতে ভোট গত ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত হলেও এখন পর্যন্ত এই সিটির গেজেট প্রকাশ করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই সিটির গেজেট প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে কেন এবং সাক্কুর মেয়র পদে থাকা নিয়ে কোনো সন্দেহ আছে কিনা বা তার শপথ নিতে কোনো বাধা আছে কিনা এ নিয়ে কথা হয় নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর সঙ্গে। তিনি জানান, সাক্কার বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি কিছু অভিযোগ ছিল। সেগুলো ইনকুয়ারি করার প্রয়োজন ছিল। দুটি ভোটকেন্দ্র বন্ধ হওয়ায় রেজাল্টের সমস্যা ছিল। গতকাল (সোমবার) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজকে (মঙ্গলবার) গেজেটের জন্য পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়াতে গেজেট প্রকাশে কোনো বাধা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, এর জন্য গেজেট প্রকাশে আইনগতভাবে কোনো বাধা নেই। আমাদের কাজ গেজেট প্রকাশ করা, শপথ করানো স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাজ। আমরা গেজেট প্রকাশ করলে সে শপথ গ্রহণ করবেন। আর গ্রেফতার হয়ে গেলে কীভাবে তিনি শপথ গ্রহণ করবেন সেটা স্থানীয় মন্ত্রণালয়ের কাজ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির যুগ্ম সচিব (আইন) ড. মো. শাহাজাহান জানান, গেজেট প্রকাশ হওয়ার পর তিনি গ্রেফতার হয়ে জেলে গেলেও শপথ নিতে কোনো সমস্যা নেই। তিনি জামিন নিয়ে শপথ নিতে পারবেন। তবে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে আদালত যদি তাকে কোনো শান্তি দেন। সেক্ষেত্রে সে ক্ষেত্রে তার মেয়র পদ থাকবে না।
ইসি সূত্র জানায়, কোনো জনপ্রতিনিধির নামে যদি আদালতের চার্জশিট থাকে তাহলেও তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা যাবে।
আদালতের নথিসূত্রে জানা যায়, ১ কোটি ১২ লাখ ৪০ হাজার টাকার তথ্য গোপন এবং ৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকার জ্ঞাতবহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৮ সালে ঢাকার রমনা থানায় মামলা করে দুদক। গত বছরের নভেম্বর মাসে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। আদালত ৯ মে গ্রেফতার ও ক্রোক সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন দ্বিতীয়বারের মতো নগরপিতা নির্বাচিত হন সাক্কু। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্রী ছিলেন নৌকা প্রতীকের আনজুম সুলতানা। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠনের পর প্রথম নির্বাচনে ২০১২ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাক্কু মেয়র নির্বাচিত হন। তখন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী কুমিল্লার প্রবীণ নেতা আফজল খানকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে তিনি পরাজিত করেন। এবারের নির্বাচনে সেই আফজাল খানের মেয়ে আনজুম সুলতানা সীমাকে পরাজিত করেন তিনি।