রবিবার ● ৫ মার্চ ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » তজুমদ্দিনে মিঠা পানির সন্ধানে লোকালয়ে ডুকে মারা পড়ছে মায়াবি হরিণ
তজুমদ্দিনে মিঠা পানির সন্ধানে লোকালয়ে ডুকে মারা পড়ছে মায়াবি হরিণ
রফিক সাদী : উপকূলীয় মেঘনার চরাঞ্চল গুলোতে হরিণের খাবারের অভাব ও লবনাক্ত পানির পরিমান বৃদ্ধি পাওয়ায় মিঠা পানির সন্ধানে গত কয়েক দিন ধরে নদী সাঁতরিয়ে লোকালয়ে ছুটছে হরিণ। শনিবার তজুমদ্দিন কোস্টগার্ড নদীতে টহল দেওয়ার সময় ভাসমান অবস্থায় জীবিত একটি হরিণ উদ্ধার করে। পরে হরিণটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করলে তারা স্থানীয় চরে অবমুক্ত করে দেয়। এছাড়া লোকালয়ে কুকুরের কামড়, নদীতে ডুবে ও আঘাত প্রাপ্ত হয়ে গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি হরিণ মারা গেছে বলে জানা গেছে।
তজুমদ্দিন কোস্টগার্ড কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. শামীম আকতার জানান, শনিবার দুপুরে মার্চ-এপ্রিল দু’মাসের মেঘনায় সকল প্রজাতির মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞার অভিযান চলছিল। সোনারচর সংলগ্ন নদীতে বেলা ১টার দিকে একটি হরিণ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে বেলা ২ টার দিকে হরিণটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হলে কোস্টগার্ড, সাংবাদিক ও বন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে হরিণটিকে বাসনভাঙ্গা চরের কেওড়া বাগানে অবমুক্ত করা হয়।
এছাড়া গত কয়েক দিনে আরো তিনটি হরিণের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দড়িচাঁদপুরের পাটওয়ারী খালের সোহাগ মাঝী মৃত একটি হরিণ নদীতে ভাসমান দেখে বন বিভাগ কে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে পৌছানোর আগেই হরিণটি ভেসে যায়। গত বুধবার দিনের বেলায় চর মোজাম্মেলে কুকুরের কামড়ে আহত রক্তাক্ত জখম অবস্থায় বনবিভাগের লোকেরা একটি হরিণ উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য আনার পথে মারা যায়। গত সপ্তাহে বনবিভাগ তেলিয়ার চর থেকে বড় সাইজের একটি হরিণ উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরে নিয়ে আসে। ময়না তদন্ত শেষে হরিণটি পাকস্থলিতে অতিরিক্ত পানি ও আঘাত জনিত কারনে মারা যাওয়ার কথা জানান প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার।
তজুমদ্দিন ভিটের বন কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, মেঘনায় জেগে উঠা চর গুলোর জঙ্গলে অসংখ্য হরিণের পাল রয়েছে। এসব চরে থাকা হরিণের খাবার ও রক্ষণা বেক্ষণের জন্য সরকারী কোন বরাদ্দ নেই। মিঠা পানি ও খাবারের সন্ধানে হরিণের পাল চরাঞ্চল থেকে নদী সাঁতরিয়ে জনবসতিপূর্ন লোকালয়ে চলে আসে। কোন কোন সময় মানুষের হাতেও হরিণ ধরা পড়ে।
এছাড়া বেশীর ভাগ হরিণ কুকুরের আক্রমনের স্বীকার হয়ে বিষক্রিয়ায় মারা যায়। তিনি আরো জানান, তজুমদ্দিনের চরগুলোতে মিঠা পানির জন্য কুপ খননের ব্যবস্থা করা হলেও নিজুমদ্বীপ সহ আশপাশের চর থেকে হরিণ লোকালয়ে ছুটে আসে। উদ্ধার হওয়া জীবিত হরিণকে বনে অবমুক্ত ও মৃত গুলোকে ময়না তদন্ত শেষে মাটি চাপা দেয়া হয়।
-এফএইচ